মঞ্চে ফিরছে ‘বন্যথেরিয়াম’

২০০৮ সালের ২৭ আগস্ট যাত্রা শুরু করে মঞ্চনাটকের দল বটতলা। এ বছর দলটি উদ্‌যাপন করবে ১৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এই দীর্ঘ সময়ে দলটি মঞ্চে এনেছে ‘ক্রাচের কর্নেল’, ‘সখী রঙ্গমালা’, ‘খনা’, ‘রাইজ অ্যান্ড শাইন’, ‘সোহোতে মার্ক্স’, ‘বন্যথেরিয়াম’, ‘জতুগৃহ’সহ অনেক আলোচিত নাটক। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নাট্য প্রদর্শনীসহ বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে দলটি। ৩০ আগস্ট বটতলা মঞ্চে আনছে তাদের দর্শকপ্রিয় নাটক বন্যথেরিয়াম। ওই দিন সন্ধ্যা ৬টায় রাজধানীর মহিলা সমিতিতে দেখা যাবে নাটকটির বিশেষ প্রদর্শনী।

সুকুমার রায়ের ‘হেঁসোরাম হুঁশিয়ারের ডায়েরি’ অবলম্বনে বন্যথেরিয়ামের নাট্যরূপ দিয়েছেন ইভান রিয়াজ। নির্দেশনাও দিয়েছেন তিনি। এ নাটকের গল্পে দেখা যাবে, প্রাণিবিজ্ঞান সংস্থা ওয়াইল্ড ভিশন এক অদ্ভুত প্রজাতির ট্যাঁশ গরুর সন্ধান পায়। এরপর সেটাকে ধরে নিয়ে আসে কোম্পানির প্রেসিডেন্ট হারুর নির্দেশে। এমন অদ্ভুত আর বিরল বন্য প্রাণীর সন্ধান ওয়াইল্ড ভিশনকে এনে দেয় খ্যাতি। খবর পেয়ে ছুটে আসে বন্য প্রাণী ব্যবসায়ী মিস হুক্কি; সে আরও ট্যাঁশ গরুর সন্ধান চায়।

এরই মধ্যে আরও অদ্ভুত বন্য প্রাণী আর প্রকৃতির সন্ধান নিয়ে আসে বিখ্যাত গবেষক প্রফেসর হেঁসোরাম হুঁশিয়ারের ভাগনে চন্দ্রখাই। তার কাছে প্রফেসর হেঁসোরাম হুঁশিয়ারের অদ্ভুত অভিযানের কাহিনি শুনে হারু আর মিস হুক্কি রোমাঞ্চিত হতে থাকে। নতুন ব্যবসার ক্ষেত্র আবিষ্কৃত হচ্ছে ভেবে উৎফুল্ল হয়। তখন তারা অক্সিজেন, খাদ্যচক্র আর পরবর্তী প্রজন্মের কথা ভুলে স্বপ্ন দেখতে শুরু করে সবুজ প্রকৃতিকে ধূসর করে মুনাফা লাভের। আর চন্দ্রখাইও গল্পের ছলে পৌঁছাতে থাকে তার চূড়ান্ত উদ্দেশ্যে।

বন্যথেরিয়াম নাটকটি নিয়ে নির্দেশক ইভান রিয়াজ বলেন, ‘তখন ২০১৬ সাল। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ সুন্দরবনবিনাশী বিভিন্ন প্রকল্প বাতিলের পক্ষে বাংলাদেশের জনগণের আন্দোলন রাজপথে প্রবল আকার ধারণ করেছে। ঠিক সে মুহূর্তে হাতে এল সুকুমার রায়ের হেঁসোরাম হুঁশিয়ারের ডায়েরি। ভিন্নধর্মী তো বটেই, প্রাণপ্রকৃতি নিয়ে একটি গল্প উপস্থাপন করা যাবে ভেবে চোখ আটকে থাকে এই রচনাতে। সুকুমার রায়ের ছড়াগুলো পড়তে পড়তে একসময় ধরা পড়ে ট্যাঁশ গরু। এরপর আরেকটি ছড়া বোম্বাগড়ের রাজা এসে সম্পাদন করে দিল কর্ম। এভাবেই হেঁসোরাম হুঁশিয়ারের ডায়েরি থেকে তৈরি হলো নতুন এক গল্প বন্যথেরিয়াম।’

বন্যথেরিয়ামে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন মাহবুব মাসুম, মোহাম্মদ আলী হায়দার, সুমিত তেওয়ারি রানা, আশরাফুল ইসলাম অশ্রু, তৌফিক হাসান ভূঁইয়া, হাফিজা আক্তার ঝুমা, জয়নব হাসার ইথার, জেঈরান জুহী, লোচন পলাশ, সবুজ সরকার, কাজী রোকসানা রুমা, শাহাদাৎ হোসেন, আফনান রহমান, অন্তু চন্দ্র নাথ, ফিরোজ শেখ ও মনিরা খাতুন সৃষ্টি।

নির্দেশক ইভান রিয়াজ জানিয়েছেন, বটতলা নাট্যদল প্রতি দুই বছর পরপর নিজেদের কর্মীদের অনুপ্রাণিত করার জন্য একটি পদক দেয়। ‘নাসিরুদ্দিন নাদিম স্মৃতি বটতলা নাট্যকর্মী পদক’ নামের এ সম্মাননা দেওয়া হবে এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতেও।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

7 − four =