আফগানিস্তানের কাছে সিরিজ হারে বাংলাদেশ রাতারাতি খারাপ দলে পরিণত হয়ে যায়নি বলে মন্তব্য করেছেন টাইগারদের সহকারী কোচ নিক পোথাস। বাংলাদেশের বড়-বড় সাফল্যকে মনে করিয়ে দিয়ে তিনি জানান, এই দলটি ইতোমধ্যেই ইংল্যান্ড ও ভারতের মতো দলের বিপক্ষে সিরিজ জিতেছে এবং ২০১৫ সাল থেকে ঘরের মাঠে দুর্দান্ত পারফরমেন্সে করেছে। তার মতে, আফগানিস্তানের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর জন্য আগামীকাল সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে খেলতে নামার আগে বাংলাদেশের কোন অনুপ্রেরণার প্রয়োজন নেই।
আজ চট্টগ্রামে পোথাস বলেন, ‘আমরা খুব তাড়াতাড়ি অনেক কিছু ভুলে যাই। আমরা ইংল্যান্ড, ভারত এবং আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জিতেছি। আমরা দুই ম্যাচেই বিশ্বমানের ক্রিকেটারদের বিচার করছি। মাত্র দু’ ম্যাচ দিয়ে নয়, দীর্ঘ সময়ের জন্য তাদের বিচার করা।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা পেশাদার খেলোয়াড়দের নিয়ে কথা বলছি। এই ছেলেরা নিজেদের কাজ সম্পর্কে অনেক বেশি পেশাদার। এজন্য আমাদের কাছ থেকে খুব বেশি অনুপ্রেরণার দরকার পড়ে না। তারা সবসময় প্রস্তুত থাকে। এই খেলোয়াড়দের নিয়ে এটি একটি দুর্দান্ত দল।’
২০১৫ সাল থেকে ঘরের মাঠে মাত্র তিনটি সিরিজ হেরেছে বাংলাদেশ। ২০১৬ সালে ও এ বছর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এবং এবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে। এ বছর ইংল্যান্ডের কাছে তিন ম্যাচের সিরিজ হারলেও শেষ ওয়ানডেতে জয় তুলে হোয়াইটওয়াশ এড়িয়েছে টাইগাররা। এরপর থ্রি লায়ন্সদের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ।
আফগানিস্তানের ত্রিমুখী স্পিন আক্রমণের প্রশংসা করেছেন পোথাস বলেন বিশ্বকাপের আগে এমন একটি মানসম্পন্ন স্পিন আক্রমণের বিপক্ষে খেলে উপকৃত হয়েছে বাংলাদেশ।
পোথাস বলেন, ‘সত্যি কথা বললে বিশ্বের সেরা স্পিন আক্রমণ রয়েছে তাদের। এটিই সত্যি। এই তিন স্পিনার সারা বিশ্বে সাদা বলে অনেক ক্রিকেট খেলেছে। যখনই তাদেও হাতে বল দেয়া হয় প্রত্যেকেই নিজেদের কাজটা ভালোভাবে কওে, এটি একজন অধিনায়কের স্বপ্ন। টেকনিক্যালি তাদেও ছুঁড়ে দেওয়া চ্যালেঞ্জ আমাদের জন্য অনেক বড় সুবিধা। এ থেকে আমরা উপকৃত হবো। আপনি যদি এই পর্যায়ের স্পিনকে মোকাবেলা করতে পারেন তাহলে যে কাউকে ে করতে পারবেন।’
পোথাস আরও বলেন, ‘তারা আমাদের সামনে এসেছে। বিশ্বের অন্য কোন দলে এই মানের তিনজন স্পিনার নেই যারা সবসময় আপনার কাছে আসতে থাকবে। এটি আমাদের দলের জন্য অনেক বেশি উপকারী। র্যাংকিংয়ে আমাদের নিচে আছে তারা। কিন্তু বিশ্বের সেরা তিন স্পিনারের মধ্যে দু’জন তাদের। আমরা এটিকে খুব ইতিবাচকভাবে দেখছি।’
সাকিব আল হাসান এবং মুশফিকুর রহিম ছাড়া রশিদ খান এবং মুজিব উর রহমানের স্পিনের সামনে বাংলাদেশের অন্যান্য ব্যাটারদের অনেক দুর্বল বলে মনে হয়েছে। এমনকি মাঝে মাঝে সাকিব এবং মুশফিকেও লড়াই করতে হয়েছে কিন্তু ইতিবাচক মনোভাবের মাধ্যমে চাপকে সামলাতে পারেন তারা।
তরুণ বাংলাদেশি খেলোয়াড়দের নিয়ে অনেক বেশি আশাবাদি পোথাস। তিনি জানান, যে উইকেটই হোক না কেন সারা বিশ্বের ব্যাটারদের জন্য হুমকি রশিদ এবং মুজিব।
‘তাদের বিপক্ষে আমাদের ধুকতে হয়েছে কিনা- এটা আমার কাছে প্রশ্ন নয় । প্রশ্ন হলো, বিশে^র অন্যান্যরা তাদের সামলাতে কিভাবে লড়াই করে। যেখানে বিশে^র সেরা খেলোয়াড় তারা সেহেতু আপনাকে বুঝতে হবে পুরো বিশে^র বড় বড় ব্যাটারদেরই তাদেও বিপক্ষে ধুকতে হয়’ বলে উল্লেখ করেন পোথাস।
তিনি আরও বলেন, ‘মিডলসেক্সে আমি মুজিব এক সাথে খেলেছি। উইকেটরক্ষক হিসাবে আমি তার সাথে কথা বলার পরও, উইকেটের পেছন থেকে কাকে বুঝতে আমাকে সমস্যায় পড়তে হয়েছে। সবাই কি শেন ওয়ার্ন, মুরালিধরনকে বুঝতে পারে? এজন্যই তারা বিশ্ব সেরা। এই কারণেই বিশ্বের প্রতিটি প্রতিযোগিতায় স্পিনের রহস্য উদঘাটনের জন্য এত অর্থ প্রয়োগ করা হয়। এখন প্রশ্ন হল, আমরা এই বিষয়ে কি করতে পারি এবং কিভাবে আমরা আরো ভাল করতে পারি?’
বাসস