‘মিয়ানমার পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অবস্থান সঠিক ও যৌক্তিক’

মিয়ানমারের চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অবস্থান সঠিক ও যৌক্তিক, বলছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা। মিয়ানমার নিয়ে আন্তর্জাতিক মিডিয়ার ‘উসকানিমূলক যুদ্ধের ফাঁদে’ বাংলাদেশ পা দেবে না বলে মনে করেন তারা।

শনিবার বনানীর ঢাকা গ্যালারিতে এডিটরস গিল্ড আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে, পালিয়ে আসা সীমান্তরক্ষীদের দ্রুত ফেরত পাঠানোর তাগিদ দেয়া হয়। মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকারের সাথে আরাকান আর্মিসহ বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সংঘাত ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মিয়ানমারের গোলাবারুদের আঘাতে বাংলাদেশিদের মৃত্যু হয়েছে, আতঙ্কে আছে সেই সীমান্তের মানুষ।

একাত্তর টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক ও এডিটরস গিল্ডের সভাপতি মোজাম্মেল বাবু বলেন, ভূরাজনীতি দাবার মতো কঠিন একটা খেলা, প্রতিটা চাল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত অত্যন্ত মানবিক ও সফল ভূরাজনৈতিক খেলোয়াড় হিসেবে এবং রাষ্ট্র হিসেবে নিজেদেরকে বিশ্ব দরবারে পরিচিত করতে পেরেছে।

বাংলাদেশে পালিয়ে আশা মিয়ানমার বর্ডার গার্ডের সদস্যদের দ্রুত ফেরত পাঠানো জরুরি। ভূরাজনীতিতে বাংলাদেশের অবস্থান যৌক্তিক বলেও মত দিয়েছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা।

সাবেক রাষ্ট্রদূত ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক মুন্সি ফয়েজ আহমেদ বলেন, আমি মনে করি আমাদের এখনকার নীতি ঠিক আছে। হঠকারিভাবে কোনো কিছু না করে দেখতে হবে কোথায় যায়। ধৈর্য ধরতে হবে। আমি মনে করে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে কথা বলছেন সেটা সঠিক।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, কার সাথে কার সম্পর্ক খারাপ তার কথা শুনে আমিও ট্যাগইন হবো যে ‘আসো আমরা ওদের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়’। আমরা এমনটা করতে পারি না। সমস্যা সমাধানে আমাদের নিজস্ব স্বাধীন পলিসি থাকতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে দীর্ঘদিন অধ্যাপনা করা ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, সুযোগ আছে বলে আমি এখনও মনে করি। ইন্ডিয়ার সাথে একটা এনগেজমেন্ট হয়েছে। চীনের সাথে এনগেজমেন্ট হয়নি এটাও ঠিক না। ইন্ডিয়া এবং চীন চাইবে না যে এখনে আমেরিকা ঢুকুক।

মিয়ানমারে সাম্প্রতিক যুদ্ধ ও সংঘাতের পাশাপাশি বাংলাদেশে আশ্রিত ১০ লাখ রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো ও পুনর্বাসনের বিষয়টিও সামনে রাখার তাগিদ বিশ্লেষকদের। নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব:) ড.নাঈম আশফাক চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে যে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা আছে তাদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে। তার জন্য যারা ডোনেশন দেয় তাদের সাথে আমাদের সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে।

পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, আমরা রোহিঙ্গাদের যুদ্ধও করতে দেব না, তাদের সম্পৃক্ত করবো না, তাদের বিদেশে যেতে দেবো না, আমরা তাদের নিয়ে এক ধরনের জিওপলিটিক্সের খেলায় মেতে গেছি, যে খেলায় আমরা জিততে পারবো না।

পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলো মিয়ানমার পরিস্থিতিতে উসকানিমূলক সংবাদ দিয়ে বিভ্রান্ত করছে বলেও সতর্ক করেন তারা। এডিটরস গিল্ডের সভাপতি মোজাম্মেল বাবু বলেন, কিছুতেই এসব পাশ্চাত্য গণমাধ্যমের যুদ্ধের ফাঁদে আমরা পড়বো না।

একাত্তর টিভি 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

19 − fifteen =