মিলারের সেঞ্চুরির পরও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২১২ রানে অলআউট দক্ষিণ আফ্রিকা

কোলকাতা, ১৬ নভেম্বর ২০২৩ (বাসস) : ডেভিড মিলারের সেঞ্চুরি সত্বেও ওয়ানডে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে আজ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করে ৪৯ দশমিক ৪ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ২১২ রান করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। অস্ট্রেলিয়ার দুই পেসার মিচেল স্টার্ক ও জশ হ্যাজেলউডের বোলিং তোপে ২৪ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর মিলারের ১১৬ বলে ১০১ রানের নান্দনিক ইনিংসে সম্মানজনক সংগ্রহ পেয়েছে প্রেটিয়ারা।

কোলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং বেছে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। ব্যাট হাতে নেমে অস্ট্রেলিয়ার দুই পেসার স্টার্ক ও হ্যাজেলউডের তোপের মুখে পড়ে প্রোটিয়ারা। ১২ ওভারের মধ্যে ২৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বসে দক্ষিণ আফ্রিকা।

প্রথম ওভারের শেষ বলে দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক তেম্বা বাভুমাকে খালি হাতে বিদায় করেন স্টার্ক। ষষ্ঠ ওভারে ইনফর্ম কুইন্টন ডি কককে ৩ রানে তুলে নেন হ্যাজেলউড। ৮ রানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে শুরুতেই চাপে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা।

সেই চাপ থেকে বের হয়ে আসতে পারেনি  প্রোটিয়া মিডল অর্ডার । ১১তম ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকা শিবিরে দ্বিতীয় আঘাত হানেন স্টার্ক। উইকেটে সেট হবার চেষ্টায় থাকা আইডেন মার্করামকে ১০ রানে শিকার করেন স্টার্ক। পরের ওভারে টেস্ট মেজাজে থাকা ডুসেনকে বিদায় দেন হ্যাজেলউড। ৩১ বল খেলে ৬ রান করেন ডুসেন।

২৪ রানে ৪ উইকেট পতনের পর দলের হাল ধরেন হেনরিচ ক্লাসেন ও ডেভিড মিলার। তাদের জুটির শুরুতে বৃষ্টির কারনে আধা ঘন্টার মত খেলা বন্ধ ছিলো। খেলা শুরু হবার পর উইকেট পতন ঠেকানোতে মনোযোগী হন তারা। উইকেটে বেশ কিছুক্ষণ কাটানোর পর দলের রানের চাকা সচল করেন ক্লাসেন ও মিলার। এই জুটির কল্যাণে ২৮তম ওভারে দলের রান ১শতে নেন তারা। দলের পাশাপাশি জুটির রানও তিন অংকে নেয়ার পথেই ছিলেন ক্লাসেন-মিলার।

কিন্তু ৩১তম ওভারে প্রথমবারের মত আক্রমনে এসে দক্ষিণ আফ্রিকাকে চমকে দেন অকেশনাল স্পিনার ট্রাভিস হেড। চতুর্থ বলে ক্লাসেনকে দারুন এক ডেলিভারিতে বোল্ড করেন হেড। পরের বলে নতুন ব্যাটার মার্কো জানসেনকে লেগ বিফোর আউট করেন তিনি। ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪৮ বলে ৪৭ রান করেন ক্লাসেন। ১ বল খেলে খালি হাতে ফিরেন জানসেন। পঞ্চম উইকেটে মিলার-ক্লাসেন  ১১৩ বলে ৯৫ রান যোগ করেন।

১১৯ রানে ষষ্ঠ উইকেট পতনের পর ওয়ানডেতে ২৫তম হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান ৭০ বল খেলা মিলার। সপ্তম উইকেটে জেরাল্ড কোয়েৎজির সাথে আবারও বড় জুটির চেষ্টা করেন মিলার। এখানেও সফল হয়েছেন তারা। ৭৬ বলে ৫৩ রান তুলে দলকে সম্মানজনক স্কোর এনে দেয়ার পথ তৈরি করেন মিলার ও কোয়েৎজি।

তবে ১৯ রান করা কোয়েৎজিকে শিকার করে অস্ট্রেলিয়াকে গুরুত্বপূর্ণ ব্রেক-থ্রু এনে দেন কামিন্স। দলীয় ১৭২ রানে কোয়েৎজির বিদায়ের সময় ৮০ রানে দাঁড়িয়ে ছিলেন মিলার। এরপর কেশব মহারাজকে ৪ রানে শিকার করেন স্টার্ক।

কামিন্সের করা ৪৮তম ওভারের প্রথম বলে ছক্কা মেরে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ষষ্ঠ সেঞ্চুরি তুলে নেন ছয় নম্বরে নামা মিলার। তার ঐ ছক্কায় দলের রানও ২শতে পৌঁছায়। তিন অংকে পা দেওয়ার পরের ডেলিভারিতেই প্যাভিলিয়নে ফিরেন মিলার। কামিন্সের শিকার হবার অগে ৮টি চার ও ৫টি ছক্কায় ১১৬ বলে ১০১ রানের নান্দনিক ইনিংস খেলেন মিলার। বিশ^কাপ নক আউট পর্বে  দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে প্রথম সেঞ্চুরিতে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের নজিরও গড়েন মিলার।

শেষ দিকে কাগিসো রাবাদার ১২ বলে ১০ রানে ৪৯ দশমিক ৪ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ২১২ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকা। অস্ট্রেলিয়ার স্টার্ক ৩৪ রানে ও কামিন্স ৫১ রানে ৩টি করে উইকেট নেন। হ্যাজেলউড ১২ রানে ও হেড ২১ রানে ২টি করে উইকেট নেন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

two − 1 =