‘মোঘলরা খলনায়ক হলে তাজমহল, লালকেল্লা ভেঙে দিন!’

অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহ মনে করেন, ইদানিং ভারতের ইতিহাসকে ভুলভাবে ব্যাখা করা হচ্ছে। বহুদিন ধরেই একটা প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে, যে ভারতীয় ইতিহাসে মোঘলদের খলনায়ক হিসেবে দেখানো হচ্ছে। আর এখান থেকেই সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্চে। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এ প্রসঙ্গে তিনি জানান, ‘মোঘলদের কাজকে অতিরঞ্জিত করার যেমন দরকার নেই, তেমনি তাদের ভিলেন সাজানোরও প্রয়োজন নেই!’

জি ফাইভের ওয়েব সিরিজ ‘তাজ ডিভাইডেড বাই ব্লাড’-এ আকবরের চরিত্রে দেখা গিয়েছে নাসিরুদ্দিন শাহকে। সেই সিরিজের প্রসঙ্গ উঠতেই নাসিরের মুখে উঠে এল মোঘলদের কথা। নাসিরুদ্দিন বলেন, ইদানিং অদ্ভুত এক প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। বলা হচ্ছে মোঘলরা যা করছেন তা একেবারেই খারাপ। ইতিহাস একেবারেই ভুলভাবে ব্যাখা হচ্ছে। আমার মতে, যদি মোঘলদের সব খারাপই হয়, তাহলে তাজমহল ও লালকেল্লা গুড়িয়ে দেওয়া হোক। লালকেল্লাকে কেন পবিত্র মানা হয় যখন ওটা মোগলদের তৈরি? মোঘলদের অতিরঞ্জিত করারও দরকার নেই। খলনায়কও বানানোর প্রয়োজন নেই।

নাসিরুদ্দিন শাহ আরও বলেন, ‘আমার অবাক লাগে দেখে যে মানুষ আকবর এবং নাদের শাহ বা তৈমুরের মতো একজন খুনি অনুপ্রবেশকারীর মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পারেন না। এরা এখানে লুট করতে এসেছিলেন, মোগলরা নয়। ওরা এখানে এসেছিল নিজের ঘর বানাতে আর সেটাই করেছিল। তাদের অবদান কীভাবে কেউ অস্বীকার করতে পারে?’

নাসিরুদ্দিন স্বীকার করেছেন যে কয়েকজন মোগল সম্রাট বাস্তবিকই অনুপ্রবেশকারী ছিলেন, তাদের বিনা কারণে গৌরবান্বিত করা হয়েছে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে সকলকেই খলনায়ক বলে প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করা হবে।

কয়েকমাস আগে ‘কচ্ছ এক্সপ্রেসে’র প্রচার অনুষ্ঠানে নাসিরুদ্দিন শাহর স্ত্রী রত্না পাঠক বলেছিলেন, এই মুহূর্তে দেশে চলা ‘পাঠান’ ছবি ঘিরে বিতর্ক নিয়ে নাসিরুদ্দিনকে কোনও রকম মন্তব্য করতে দিই না। কে জানে কোন মন্তব্য থেকে কোন বিপদ চলে আসে। অশান্তি ভাল লাগে না। রত্নার দাবি, “হিংসার যে পরিমণ্ডল দেখতে পাচ্ছি, কেউ বাড়িতে এসে পাথর ছুঁড়ে মারতে পারে। কিছুই অসম্ভব নয়। এখনকার সময়ে এমনিতেই কাজ পাওয়া কঠিন হয়ে গিয়েছে। কারণ একাধিক। তবু সতর্ক থাকতে হবে। তাই বলে ভয় পেলেও চলবে না। আমার স্বামীকে সাবধানে থাকতে বলি সবসময়। চুপ করে থাকাই শ্রেয়।”

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

8 − 6 =