রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ‘গীতশ্রী’ কে বিদায় জানালো কলকাতা

ফুল আর অশ্রুতে ‘গীতশ্রী’ সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে শেষবিদায় জানিয়েছে কলকাতা। আধুনিক বাংলা গানকে যিনি মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছিলেন।বুধবার পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের শেষকৃত্যানুষ্ঠান সম্পন্ন হয় বলে জানায় দৈনিক আনন্দবাজার।

গত বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন ৯০ বছরের সন্ধ্যা। যদিও বয়স বা অসুস্থতা কিছুই শিল্পীর অকৃত্রিম তেজ কমাতে পারেনি। তাইতো বিনাদ্বিধায় ভারতের রাষ্ট্রীয় সম্মান পদ্মশ্রী খেতাব প্রত্যাখ্যান করে আলোচিত হয়েছিলেন তিনি।

পদ্মশ্রী খেতাব প্রত্যাখ্যানের পরদিন ২৬ জানুয়ারি জ্বর নিয়ে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি হন কিংবদন্তি এ সঙ্গীতশিল্পী। হাসপাতালে পরীক্ষায় তার কোভিড সংক্রমণও ধরা পড়েছিল।

তারপর থেকে তিনি হাসপাতালেই ছিলেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শৌচাগারে পড়ে গিয়ে চোট পান সন্ধ্যা। এর পর বেশ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। সেইসঙ্গে যোগ হয়েছিল শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা। তার দুটি ফুসফুসেই সংক্রমণ দেখা দেয়। চিকিৎসকরা হৃদযন্ত্রে সমস্যার কথাও আগেই জানিয়েছিলেন।

মঙ্গলবার মৃত্যুর পর রাতে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের মৃতদেহ কলকাতার পৌরসভা ‘পিস ওয়ার্ল্ড’ এ রাখা হয় বলে জানায় দৈনিক আনন্দবাজার। বুধবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১১টার পর পিস ওয়ার্ল্ড থেকে এই গায়িকার মৃতদেহ প্রথমে সঙ্গীত একাডেমিতে নেয়া হয়। সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় দীর্ঘদিন পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গীত একাডেমির সভাপতি ছিলেন। সেখান থেকে সর্বজনের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য নেয়া হয় রবীন্দ্র সদনে। বেলা ১২টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত মৃতদেহ সেখানে রাখা হয়েছিল।

সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে উত্তরবঙ্গ সফর সংক্ষিপ্ত করে কলকাতায় ফিরে আসেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিমানবন্দর থেকেই তিনি রবীন্দ্র সদনে চলে যান। দক্ষিণ কলকাতার কেওড়াতলা মহাশ্মশানে। শত শত ভক্ত অনুরাগী মৃতদেহ বহনকারী গাড়ির পেছন পেছন মহাশ্মশানে যান।

আনন্দবাজার জানায়, রবীন্দ্র সদন থেকে মৃতদেহ কেওড়াতলা নেওয়ার পথে রাস্তায় দুই পাশে ‍মানুষের উপচে পড়া ভিড় ছিল। শ্মশানে গান স্যালুটের পর ধর্মীয় রীতি মেনে সন্ধ্যার দাহ কাজ সম্পন্ন হয়। এ সময় মাইকে তার গাওয়া গানগুলো বাজছিল।

যে সন্ধ্যা প্রদীপ মঙ্গলবার নিভেছিল, বুধবার সন্ধ্যায় তার নশ্বর দেহ চিরতরে বিলীন হয়ে যায়।

বিডিনিউজ

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

five × five =