সালেক সুফী
কেউ শুনলে বিস্মিত, কেউ জানলে কষ্ট পাবে। বাংলাদেশকে ৫ উইকেটে হারিয়ে প্রথম মুকাবিলায় ইতিহাস সৃষ্টি করেছে এবারের বিশ্বকাপের অন্যতম স্বাগতিক দল যুক্তরাষ্ট্র। এটি নিয়ে আয়ারল্যান্ডের পর আইসিসি পূর্ণ সদস্য দলের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় যুক্তরাষ্ট্রের। প্রথমে ব্যাটিং করে টপ অর্ডারের চিরচারিত ভঙ্গুর শুরুর পর বিকাশমান তাওহীদ হৃদয় (৫৮) এবং বিশস্ত মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের (৩১) রানের কল্যানে মুখ রক্ষার ১৫৩/৬ রান করে। জবাবে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী ভাবে বসবাস করা নিউজিল্যান্ড প্রবাসী কোরি এন্ডারসন (৩৪*) এবং ভারতীয় হার্মিট সিংহের (৩৩*) ঝড়ো ব্যাটিং বাংলাদেশকে লজ্জার সাগরে ডুবায়। ৫ উইকেটে পরাজয়ের কলঙ্ক তিলক পরে বাংলাদেশের ললাটে।
বলার কিছু নেই, বলেও লাভ নেই। দ্বিগম্বর বিসিবির কিছুতেই লজ্জা নেই। এমনিতেই সাদামাটা দল যুক্তরাষ্ট্র। স্থানীয়রা মেতে আছে বেস বল, বাস্কেট বল নিয়ে। ক্রিকেট খেলে মূলত অভিবাসীরা। এমন একটি দলের বিরুদ্ধে ঢাকার মিরপুরের মত চিরচেনা উইকেটে এভাবে পরাজয়ের কোনো অজুহাত খুঁজে পাবে না টিম ম্যানেজমেন্ট। ওপেনার হিসাবে দারুন খেলতে থাকা তানজিদ তামিমকে বিশ্রামে রেখে কেন ভীষণ ভাবে ফর্ম হারানো লিটন কুমার দাসকেই কাল বেছে নেয়া হলো? যতক্ষণ উইকেটে ছিল মনে হয়েছে যেন জোর করে ব্যাটিং করতে পাঠানো হয়েছে। দু দু বার বেঁচে যাওয়ার পরেও ক্ষমাহীনভাবে ১৫ বলে ১৪ রান করে ফিরে যায় লিটন। এখনো সময় আছে লিটনকে দেশে পাঠিয়ে পারভেজ ইমনকে দলে ভেড়ানোর। অপরদিকে টিম মানেজেমেন্টের ওপর প্রিয় মুখ সৌম্য সরকার কিছু চটকদার স্টোকস খেলে ১৩ বলে ২০ রান করা সৌম্য ফিরে যায় চিরায়ত ঢঙে। সব ফরম্যাটে অধিনায়ক বনে যাওয়া নাজমুল শান্তের বাটে রান খরা অব্যাহত থাকা এবং নিজেকে হারিয়ে খোঁজা সাকিব আল হাসান ১২ বলে ৬ রান করে রান আউট হলে বাংলাদেশের সঙ্কট সময়ে জুটি বাধে তরুণ তাওহীদ হৃদয় এবং নির্ভরযোগ্য মাহমুদুল্লাহ হৃদয়। ওদের যোগাযোগে ৫ম উইকেট জুটিতে ৬৫ রান যোগ হলে বাংলাদেশ কোনভাবে মুখরক্ষার ১৫৩/৬ করতে পারে।
বাংলাদেশের বিশ্বকাপ বোলিং ইউনিটের একমাত্র তাসকিন আহমেদ নেই। উচিত ছিল বাংলাদেশের টার্গেট ডিফেন্ড করা। ৯৪ রানে ৫ উইকেট হারানো যুক্তরাষ্ট্র চাপে ছিল। কিন্তু সেখান থেকে মারকুটে বাটিংয়ের জন্য সুখ্যাত কোরি আন্ডারসন এবং হারমিত সিংহ ষষ্ট উইকেট জুটি ঝড় তুলেই লন্ড ভন্ড করে বাংলাদেশকে লজ্জার সাগরে ডোবায়।
হয়তো বাংলাদেশ ঘুরে দাড়াবে বাকি দুই ম্যাচে। তা হলেও কলঙ্ক জনক লজ্জার দাগ মুছবে কি? কেন সবচেয়ে কার্যকরী শাকিব আল হাসানকে বোলিং কোটা পূরণ করানো হয় নি? যদিও এখন সকাল দেখে দিন চেনা যায় না। তবুও বলি বাংলাদেশের সকাল ঘন কালো মেঘে ঢাকা দেখা গেলো।