লাপাতা লেডিস: আলোচনায় বউ হারানোর গল্প

‘লাপাতা লেডিস’ সিনেমার প্রেক্ষাপট ভারতের নির্মল প্রদেশ নামের এক কাল্পনিক স্থান। ২০০১ সাল। তখনো প্রযুক্তি এতটা গ্রাস করেনি সমাজকে। সূর্যমুখী গ্রামের দরিদ্র পরিবারের সদ্য বিবাহিত যুবক দীপক (স্পর্শ শ্রীবাস্তব) বউ ফুলকুমারীকে (নিতানশি গোয়েল) নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেয়। ট্রেনের বগিতে তারা দেখতে পায় আরও দুই সদ্য বিবাহিত দম্পতিকে। রীতি অনুযায়ী, এই অঞ্চলের নারীরা লম্বা ঘোমটা পরে থাকে। বাইরের লোকের সামনে মুখ দেখায় না।

কাঙ্ক্ষিত স্টেশনে বউকে নিয়ে নামে দীপক। কিন্তু বাড়ি ফিরে দেখে, এ তার বউ ফুলকুমারী নয়। ঘোমটায় মুখ ঢাকা থাকায় ভুলবশত আরেক নতুন বউ জয়াকে (প্রতিভা রত্না) নিয়ে এসেছে দীপক। বউ হারানোর এ ক্রাইসিসে ভর করে বাকি গল্পের জার্নি। হাস্যরসাত্মক এ গল্পের মধ্য দিয়ে সমাজে নারীদের অবস্থান তুলে এনেছেন পরিচালক কিরণ রাও। দিয়েছেন জাগরণের প্রেরণা। লাপাতা লেডিস হলে মুক্তি পেয়েছিল গত ১ মার্চ। ২৬ এপ্রিল নেটফ্লিক্সে আসার পর সর্বত্র আলোচনা হচ্ছে সিনেমাটি নিয়ে।

যেভাবে গল্প আসে

লাপাতা লেডিস গল্পের খোঁজ দেন আমির খান। চিত্রনাট্যবিষয়ক একটি প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন আমির। জমা পড়া শত শত চিত্রনাট্যের মধ্যে তাঁর নজর পড়ে বাঙালি লেখক বিপ্লব গোস্বামীর একটি স্ক্রিপ্টে। গল্পের নাম ছিল ‘টু ব্রাইডস’। বাড়ি ফিরে কিরণকে গল্পটি শোনান আমির। কিরণও খুব উৎসাহী হয়ে পড়েন।

চিত্রনাট্য নিয়ে কাজ শুরু হয়। লেখক টিমে যোগ দেন গুজরাটি মঞ্চনাটকের লেখক স্নেহা দেশাই। যেহেতু সিনেমার সংলাপ বলা হয়েছে ভোজপুরি-হিন্দির মিশেলে, তাই আঞ্চলিকতা যেন সঠিকভাবে আসে, সে জন্য আনা হয় দিব্যানিধি শর্মাকে। কিরণ জানিয়েছেন, লাপাতা লেডিসের পুলিশ কর্মকর্তার চরিত্র মনোহরকে নতুনভাবে ডিজাইন করেন দিব্যানিধি। তাঁদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ৭-৮ মাসের মাথায় প্রস্তুত হয় চিত্রনাট্যের প্রথম খসড়া। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে শুটিং শুরু হয়, শেষ হয় মার্চে।

অডিশন দিয়েছিলেন আমির

লাপাতা লেডিসে পুলিশ কর্মকর্তা মনোহর মন জয় করেছে সবার। এ চরিত্র ঘুষ খায়। এলাকার প্রভাবশালীদের সুবিধা দেয়। সারাক্ষণ পান চিবোয়। খোলা চোখে ‘ভালো’ চরিত্রের মানুষ নয় মনোহর। তবে শেষ দিকে তার নৈতিক অবস্থান মোড় ঘুরিয়ে দেয় গল্পের। মনোহর চরিত্রে অনবদ্য অভিনয় করে আলোচিত হচ্ছেন রবি কিষান। শুরুতে এ চরিত্রে অভিনয় করতে চেয়েছিলেন আমির খান।

কিন্তু চিত্রনাট্য লেখার সময় থেকেই মনোহর হিসেবে কিরণের মাথায় ঘুরছিল রবির নাম। সিনেমার প্রযোজক হলেও অডিশন দিতে হয়েছে আমিরকে। আমির বলেন, ‘অসাধারণ এক চরিত্র। তাই হাতছাড়া করতে চাইনি। আমি তো অডিশন ভালোই দিয়েছিলাম। আসলে এ চরিত্রের কাস্টিং নিয়ে আমাদের প্রচুর আলাপ হয়েছে। সবশেষে আমরা সম্মত হই, এ চরিত্রে রবিই পারফেক্ট।’

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

three × 4 =