১০ এপ্রিল মঙ্গলবার ভরদুপুরে স্বাগত জানালেন কাঁসা-পিতলে কারুকাজের নকশাকার সুকান্ত। তিনিই কারিগরদের নির্দেশনা দেন। ‘এটি আমার পারিবারিক ব্যবসা। ২০০ বছরে প্রায় পাঁচ প্রজন্ম ধরে এ ব্যবসা করে যাচ্ছি’, বললেন সুকান্ত বণিক। বংশের পঞ্চম প্রজন্মের প্রতিনিধি তিনি। বারান্দায় এসে আশপাশের আরও অভিজাত কিছু পুরোনো ভবন দেখিয়ে বললেন, ‘এখানকার প্রায় সব বাড়িই হয়েছে কাঁসার ব্যবসার টাকা থেকে।’ একটা ঘরে এসে গোল একটি বাটি হাতে নিলেন সুকান্ত। একটি ধাতব বস্তু দিয়ে সেটির বাইরের গা ঘেঁষে চারপাশে ঘোরালেন। এতে একটি অদ্ভুত সম্মোহনী আওয়াজ সৃষ্টি হলো। এ পাত্রকে বলে জামবাটি (সিংগিং বোল)। ধ্যানের সময় এটি ব্যবহার করা হয়। পাত্রটি দেখিয়ে সুকান্ত বলেন, ‘এমন বাটি পরে আর তৈরি করা যায়নি। কারণ, এর কারিগর নেই। এ শিল্পের ওপর প্রথম আঘাত আসে ১৯৪৭ সালে, পরের ধাক্কা ১৯৭১ সালে।
সব গুছিয়ে এরপর ১৯৭৮ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত ব্যবসা মোটামুটি ভালো ছিল। ১৯৯০ সাল থেকে ব্যবসার অবস্থা আবার খারাপ হতে শুরু করে। এ সময়টাতে বদলে যেতে থাকে সবকিছু। কাঁসা-পিতলের জায়গা দখল করে নিয়েছে ফাইবার, স্টেইনলেস স্টিল, অ্যালুমিনিয়াম, সিরামিকের তৈরি বাসনপত্র। আধুনিকতার ধাক্কায় সংকট নেমে এসেছে কাঁসা-পিতলশিল্পেও। কারিগরেরা চলে গেছেন বিকল্প জীবিকার সন্ধানে। সুকান্ত জানালেন, ২০০৬ সালেও তাঁর কারখানায় শ্রমিকসহ কাজ করতেন মোট ২২ জন কারিগর। বর্তমানে আছেন মাত্র ছয়জন। এলাকার অনেক কারিগর পেশা বদল করেছেন সংকটে পড়ে।