জ্যামাইকার কিংস্টনে দিন রাত্রির টেস্টে অস্ট্রেলিয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজকে লজ্জার ক্যারিবিয়ান সাগরে ডোবালো। মাত্র ২৭ রানে ইনিংস গুটিয়ে যাওয়ার লজ্জায় পড়লো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তিন ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথম দুটি জিতে অস্ট্রেলিয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ২-০ এগিয়ে ছিল। জ্যামাইকার কিংস্টনে তৃতীয় টেস্টটি ছিল দিবা রাত্রির পিঙ্ক বল ক্রিকেট। ব্যাট বলের অসম যুদ্ধে দুই দলের ব্যাটসম্যানরাই খেই হারিয়েছে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর ফ্লাড লাইটের আলোয় বল বিষাক্ত সাপের মত সুইং করেছে। অস্ট্রিলিয়ার বর্তমান প্রজন্মের কিংবদন্তি ফাস্ট বোলার মিচেল স্টার্ক তার ১০০ম টেস্ট উদযাপন করেছে দ্বিতীয় ইনিংসে ৭.৩ ওভারে ৯ রান খরচে ৬ উইকেট নিয়ে। পূর্ণ হয়েছে তার টেস্ট ক্রিকেটে ৪০০ উইকেট অর্জন। সঙ্গে স্কট বোলান্ড হাটট্রিক সহ ২ রানে ৩ উইকেট তুলে নেয়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ গুটিয়ে গাছে ২৭ রানে। ২৫ মার্চ ১৯৫৫ অকল্যান্ডে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে নিউজিলান্ড ইনিংস শেষ হয়েছিল ২৬ রানে। মাত্র ১ রানের জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজ সর্বনিম্ন টেস্ট ইনিংসের গ্লানি থেকে পরিত্রান পেয়েছে।
অস্ট্রেলিয়া দুই ইনিংসে ২২৫ এবং ১২১ রান করেও ওয়েস্ট ইন্ডিজ জবাবে ১৪৩ আর ২৭ রান করে ১৭৬ রানের বিশাল ব্যাবধানে পরাজিত হয়েছে।
একসময়ের প্রবল প্রতিপত্তির ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের করুন অবস্থা দেখে করুনা হয়। এই জ্যামাইকার কিংস্টনে একসময়ের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সকল প্রতিপক্ষের সঙ্গে দাপটে টেস্ট জয় করত। উইকেটে বাড়তি সহায়তা থাকায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ পেসার জেইডেন সিলস (৩/৫৩), সামার জোসেফ (৪/৩৩ এবং ৪/৩৪) এবং আলজারি জোসেফ (৫/২৭) শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটিং লাইন আপকে নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলো। মনে রাখতে হবে যে উইকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোলাররা তান্ডব চালিয়েছে সেখানে স্টার্ক, কামিন্স, হেজেলউড, বোল্যান্ডের মত দুধর্ষ বোলিং যে কোনো ব্যাটিং ধসিয়ে দিতে পারে। একজন বা দুজন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটসম্যান প্রতিরোধ করতে পারলে ইতিহাস ভিন্নতর হতে পারতো। এই টেস্ট এবং সিরিজ মিচেল স্টার্কময় হয়ে টেস্ট ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে। দুই টেস্টের ৪ ইনিংসে দুই দলের কোন ব্যাটসম্যান ৫০ করতে পারেনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বিতীয় ইনিংসে ৭ জন ব্যাটসম্যান (০) শুন্য রানে আউট হয়েছে। মাত্র ১৪.৩ ওভারে গুটিয়ে গাছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দ্বিতীয় ইনিংস।
অস্ট্রেলিয়া কিন্তু উইকেটের মেজাজ মর্জি আঁচ করতে পেরে সুস্থ থাকা অবস্থায় কিংবদন্তি স্পিনার নাথান লায়নকে বিশ্রাম দিয়েছিলো। অস্ট্রেলিয়ান হিসাবে আমাদের দলের ধবল ধোলাই অর্জন এবং আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২৫-২৭ পর্বে ১০০% বিজয়ের ধারা অব্যাহত রেখে তালিকার শীর্ষ অবস্থান মজবুত করায় উৎফুল্ল। কিন্তু আমার মনে হয় দিবা রাত্রির টেস্ট এবং পিঙ্ক বল ক্রিকেটের ব্যাট বলের অসম যুদ্ধ নিয়ে ভাবনার সময় এসেছে।