৩২০ রানের লক্ষ্য তাড়ায় শেষ ওভারে দরকার ৫ রান। স্ট্রাইকে ওই মুশফিকুর রহিম। প্রথম দুই বলই ডট দিলেন মার্ক এডেয়ার। এডেয়ারের হাই ফুলটস তৃতীয় বলে ডিপ ব্যকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে ক্যাচ তুলে দিলেন মুশফিক। ওই মুহূর্তে বাংলাদেশ দলের ডাগআউটের চিত্র দেখেই চাপের মাত্রা অনুমান করা যাচ্ছিল। তবে বলের বলেই দারুণ এক র্যাম্প শটে চার, তিন বলে হাতে রেখে ৩ উইকেটের রোমাঞ্চকর এক জয় পেল বাংলাদেশ।
তবে আয়ারল্যান্ডের দেওয়া বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দেখেশুনে শুরুটা করেছিলেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। ১৩ বল খেললেও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি তিনি। আউট হয়েছেন জর্জ ডকরেলকে অনেকটা ক্যাচিং অনুশীলন করিয়ে। মার্ক এডেয়ারের লেগ স্টাম্পে রাখা বলে ফ্লিক করতে গিয়ে ফরোয়ার্ড স্কয়ার লেগে ক্যাচ তুলে দেন তামিম। ৭ রান আসে তাঁর ব্যাট থেকে। এরপর নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন আরেক ওপেনার লিটন দাস। কিন্তু হতাশ করেন তিনিও।
দারুণ কিছু শট খেলার পর আউট হয়েছেন অনেকটা ফিলিপ হিউমের অফ স্টাম্পের বেশ বাইরে রাখা বলে জায়গায় দাঁড়িয়ে খোঁচা মেরে। বল লিটনের ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় উইকেটকিপার লরকান টাকারের হাতে। ২১ বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ২১ রান করেন লিটন।
দুই ওপেনারের দ্রুত বিদায়ের পর নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে দলের হাল ধরেন সাকিব আল হাসান। এই জুটিতে প্রাথমিক চাপ সামলে ওঠে বাংলাদেশ। তবে সাকিবের বিদায়ে ভাঙে ৬১ রানের এই জুটি। উইকেটে নেমে শুরু থেকেই বড় মেরে খেলতে থাকেন সাকিব। মুখোমুখি চতুর্থ বলেই পান বাউন্ডারি। এই সময় বাংলাদেশের রানের গতিও বেড়ে যায়। কিন্তু কার্টিস ক্যাম্ফারের অফস্টাম্পের বাইরে থাকা বলটি জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলতে গিয়ে ক্যাচ দেন জর্জ ডকরেলের হাতে। ২৭ বলে ৫ চারে ২৬ রান করেন সাকিব। সাকিবের বিদায়ের পর বাংলাদেশকে জয়ের স্বপ্ন দেখানো জুটির গল্প শুরু হয়। নাজমুল হোসেন শান্ত ও তাওহীদ হৃদয়ের জুটি সেই স্বপ্ন দেখিয়েছে বাংলাদেশকে।
দুজনের ১০২ বলে ১৩১ রানের ঝোড়ো জুটিতে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন শান্ত। ডকরেলের করা ৩৪তম ওভারের প্রথম বলে দুইরান নিয়ে সেঞ্চুরি পূর্ণ। দ্বিতীয় রান শেষ করতে করতেই হুংকার ছুড়ে শান্তর বুনো উদযাপন। তিন অঙ্কে পৌঁছাতে মাত্র ৮৩ বল লাগে তার। তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে ১১ চার ও ২ ছক্কা।
আউট হয়ে গেছেন শান্তর সঙ্গী হৃদয়ও। ডকরেলের শর্ট ডেলিভারি পুল করতে ক্যাম্ফারের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। ৫৮ বলের আক্রমণাত্মক ইনিংসে ৫ চার ও ৩ ছক্কায় হৃদয়ের রান ৬৮। এর আগে আয়ারল্যান্ডকে বড় সংগ্রহ এনে দেন হ্যারি টেক্টর ও ডকরেল। বিশেষ করে টেক্টরের ১৪০ রানের দুর্দান্ত ইনিংসটি। বাংলাদেশের বিপক্ষে কোনো আইরিশ ব্যাটারের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। ট্যাক্টরকে দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন ৪৭ বলে ৭৪ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলা ডকরেল। দুজনের ৬৮ বলে ১১৫ রানের জুটিতেই ম্যাচটা কঠিন হয়েছিল বাংলাদেশের কাছে। তবে শান্ত-হৃদয়দের দুর্দান্ত ইনিংসে ম্যাচটা আর জেতা হয়নি আইরিশদের, হাসি নিয়ে ফিরেছে বাংলাদেশই ৷