শ্রীলংকাকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে বিদায় করে সেমিফাইনালে ইংল্যান্ড

নিউজিল্যান্ডের পর দ্বিতীয় দল হিসেবে চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করলো ইংল্যান্ড।  গ্রুপ-১এ আজ সুপার টুয়েলভে নিজেদের পঞ্চম ও শেষ ম্যাচে ইংল্যান্ড ৪ উইকেটে হারিয়েছে শ্রীলংকাকে। ইংল্যান্ডের জয়ে সুপার টুয়েলভ থেকেই এবারের বিশ্বকাপ শেষ করতে হলো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে।

গ্রুপ-১এর সব খেলা শেষে সমান ৭ করে পয়েন্ট নিউজিল্যান্ড-ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার। রান রেটে এগিয়ে থাকার সুবাদে টেবিলের শীর্ষ দু’টি স্থান নিয়ে সেমিফাইনালে উঠলো নিউজিল্যান্ড-ইংল্যান্ড। নিউজিল্যান্ডের রান রেট ২.১১৩ ও ইংল্যান্ডের ০.৪৭৩। অস্ট্রেলিয়ার রান রেট -০.১৭৩।

এই গ্রুপে এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন শ্রীলংকা ৪, আয়ারল্যান্ড ৩ ও আফগানিস্তান ২ পয়েন্ট নিয়ে বিশ্বকাপ শেষ করলো।

জিতলেই সেমিফাইনাল, এমন সমীকরনে এই গ্রুপের শেষ ম্যাচে শ্রীলংকার মুখোমুখি হয় ইংল্যান্ড। সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং বেছে নেয় শ্রীলংকা। শুরুতেই ইংল্যান্ডের বোলিংকে চাপে ফেলেন লংকার দুই ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা ও কুশল মেন্ডিস। ৪ ওভারে ৩৯ রান তুলে বিচ্ছিন্ন হন তারা। ১৪ বলে ১৮ রান করা মেন্ডিসকে ফিরিয়ে  ইংল্যান্ডকে প্রথম সাফল্য এনে দেন পেসার ক্রিস ওকস।

সতীর্থ ফিরলেও, পাওয়ার-প্লের শেষ ওভারে ১৩ রান তুলেন নিশাঙ্কা। এতে ৬ ওভারে ১ উইকেটে ৫২ রান পায় শ্রীলংকা।

পাওয়ার-প্লে শেষে রানের গতি কমে যাওয়ায় ১২ ওভার শেষে  লংকানদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ৮৯ রান।  নবম ওভারে ব্যক্তিগত ৯ রানে  ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাশিকার হন  ৯ স্যাম কারানের। ১১তম ওভারে চারিথা আসালঙ্কাকে বিদায় দেন বেন স্টোকস। ৮ রান করেন আসালঙ্কা।

মিডল-অর্ডার ব্যাটাররা ব্যর্থ হলেও অন্যপ্রান্তে ইংল্যান্ডের বোলারদের বিপক্ষে একাই লড়েছেন নিশাঙ্কা। ১২তম ওভারের শেষ বলে এবারের আসরে দ্বিতীয় ও টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের নবম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন লংকান এ ব্যাটার । এজন্য ৩৩ বল খেলেন নিশাঙ্কা।

১৬তম ওভারে ইংল্যান্ডের পথ কাটাকে সরিয়ে ফেলেন স্পিনার আদিল রশিদ। উইকেট সেট ব্যাটার নিশাঙ্কাকে থামান তিনি।  আউট হওয়ার আগে ৪৫ বলে ২টি চার ও ৫টি ছক্কা মারেন নিশাঙ্কা। এই ইনিংস খেলার পথে টি-টোয়েন্টিতে ১হাজার রানও পূর্ণ করেন তিনি।

নিশাঙ্কার বিদায়ের পর শ্রীলংকার ব্যাটারদের চেপে ধরেন ইংল্যান্ডের বোলাররা। মার্ক উডের করা ইনিংসের শেষ ওভারে ৩ উইকেট হারায় ইংলিশরা। ভানুকা রাজাপাকসে ২২ ও চামিকা করুনারত্নে শূন্য রানে  উডের শিকার হন। রান আউট হন হাসারাঙ্গা ডি সিলভা।

দুই ওপেনারের দুর্দান্ত শুরুর পরও ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৪১ রানের মামুলি সংগ্রহ পায় শ্রীলংকা। ইংল্যান্ডের উড ৩ ওভারে ২৬ রানে ৩ উইকেট নেন। ৪ ওভারে ১৬ রানে ১ উইকেট নেন রশিদ।

সেমিফাইনাল  নিশ্চিতে ১৪২ রানের টার্গেট পাওয়া ইংল্যন্ডকে  দারুন সূচনা এনে দেন  দুই ওপেনার অধিনায়ক জশ বাটলার ও অ্যালেক্স হেলস। পাওয়ার প্লেতে ৭০ রান তুলেন বাটলার ও হেলস। এসময় দু’জনে ৯টি চার ও ২টি ছক্কা মারেন। হেলস ১৯ বলে ৪২ ও বাটলার ১৮ বলে ২৫ রান করেন।পেসার কাসুন রাজিথার করা পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে ২০ রান নেন হেলস।

অষ্টম ওভারে দলীয় ৭৫ রানে হেলস-বাটলার জুটি ভাঙ্গেন হাসারাঙ্গা। ডিপ মিড-উইকেটে বাটলারের দুর্দান্ত ক্যাচ নেন করুনারতেœ। ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৮ রান করেন বাটলার।

১০ম ওভারে ইংল্যান্ড শিবিরে দ্বিতীয় আঘাত হানেন হাসারাঙ্গা। এবার হেলসকে বিদায় করেন তিনি। ৩০ বল খেলে ৭টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪৭ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংসটি সাজান হেলস।

দলীয় ৮২ রানের মধ্যে দুই ওপেনারের বিদায়ের পর মিডল-অর্ডারে দ্রুত ৩ উইকেট হারিয়ে  ৫ উইকেটে ১১১ রানে পরিনত হয় ইংল্যান্ড।  হ্যারি ব্রুক-লিয়াম লিভিংস্টোন ৪ করে ও মঈন আলি ১ রানে আউট হন।

ষষ্ঠ উইকেটে কারানকে নিয়ে ২১ বলে ১৮ রান তুলে ইংল্যান্ডকে জয়ের পথে রাখেন তিন নম্বরে নামা বেন স্টোকস। ষষ্ঠ ব্যাটার হিসেবে কারানকে আউট করে জুটি ভাঙ্গেন ইংল্যান্ডকে চিন্তায় ফেলে দেন পেসার লাহিরু কুমারা। কারন শেষ ২ ওভারে ৪ উইকেট হাতে নিয়ে ১৩ রান দরকার পড়ে ইংল্যান্ডের।

১৯তম ওভারে ৮ রান নেন স্টোকস ও ওকস। শেষ ওভারের চতুর্থ বলে ব্যাক-ওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে চার মেরে ইংল্যান্ডের জয় নিশ্চিত করে দলকে সেমিতে তোলেন  ওকস।

২টি চারে ৩৬ বলে অনবদ্য ৪২ রান করে দলের জয়ে অবদান রাখেন স্টোকস। ৫ রানে অপরাজিত থাকেন ওকস। ২টি করে উইকেট নেন কুমারা-হাসারাঙ্গা ও ধনাঞ্জয়া। ম্যাচ সেরা হন রশিদ।

বাসস

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

four × three =