সমর কৌশল হবে ম্যাচ এবং সিরিজ জয়ের রসদ

সালেক সুফী

চট্টগ্রামের সাগর পাড়ে সাগরিকার জহুর আহমেদ চোধুরী ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠানরত বাংলাদেশ-শ্রীলংকার ৩ ম্যাচের ওডিআই সিরিজ এখন ১-১ সমতায়।  প্রথম ম্যাচ বাংলাদেশ হেসে খেলে জয় করার পর শ্রীলংকা দ্বিতীয় ম্যাচ ভালো খেলে জয়ী হয়ে সিরিজে ফিরেছে।  দুটি ম্যাচেই রাতের শিশির খেলার ভাগ্য নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রেখেছে।  দুটি প্রায় সম শক্তির দল সমান্তরাল অবস্থানে থেকেই আগামী কাল আবির্ভূত হবে সিরিজ জয় করার গুরুত্বপূণ ম্যাচে। দিনের খেলায় শিশির তৃতীয় পক্ষ হয়ে দাঁড়াবে না। লাগসই সমর কৌশল হবে কাল ম্যাচ এবং সিরিজ জয়ের উপকরণ। সেখানে এগিয়ে থাকা দল সিরিজ জয় করবে। এতটুকু বলতে পারি হাড্ডা হাড্ডি লড়াই হবে।  দেশের মাটিতে খেলা যদি স্বাগতিক দলকে এগিয়ে রেখে, উন্নততর দলীয় ভারসাম্য সেখানে অতিথি দলের শক্তি।

বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই দুই ম্যাচে শূন্য রান করা লিটন কুমার দাসকে দল থেকে ছেটে ফেলেছে। নতুন প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ লিপু সুস্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে দারুন ভাবে ফর্ম হারানোই লিটনকে বাদ দেয়ার কারণ।  সেই সঙ্গে লিপু যথার্থই স্কোয়াডে সৌম্যর পাশাপাশি তানজিদ হাসান তামিম এবং আনামুল হক বিজয় থাকায় নতুন করে কোন ওপেনার নেয়ার যুক্তি খুঁজে পায়  নি। বরং ফর্মে থাকা তরুণ মিডল অর্ডার  ব্যাটসম্যান জাকের আলী অনিকের অন্তর্ভুক্তি যথার্থ বলেই মনে করি। জানিনা কাল প্রথম বার খেলতে নেমে বিজয় বা তানজিদ তামিম সফল হবে কিনা বা লেট্ মিডল অর্ডারে সুযোগ পেলে কি করবে জাকির অনিক কিন্তু পরিবর্তন যথাযথ হয়েছে বলবো। লিটনের আস্থা ফিরে আসবে হয়ত কিছু দিন ক্রিকেট থেকে দূরে থাকলে।

কাল আমি তাইজুলের পরিবর্তে লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেনকে খেলানোর সুপারিশ করবো। রিশাদকে দ্বিতীয় ম্যাচেই খেলানো উচিত ছিল। এই উইকেটে শ্রীলংকান লেগ স্পিনার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা বাংলাদেশ মিডল অর্ডার একাই ধসিয়ে দিয়েছে। রিশাদকে চাপের ম্যাচে সুযোগ দিয়ে পরিণত করতে হবে।

আমি লিখেছি এবং লিখছি শ্রীলংকা দল ভারসাম্যে তুলনামূলকভাবে এগিয়ে।  পিথুন নিঃশঙ্কা, আভিস্কা ফের্নাডো, কুশল মেন্ডিস, সাদীরা সামারাবিক্রমা এবং চারিথ আসালংকা সমন্বয়ে গড়া শ্রীলংকান ব্যাটিং অবশ্যই বাংলাদেশ থেকে এগিয়ে। তদুপরি বাংলাদেশের টপ অর্ডার অনিশ্চিত। লিটন পর পর দুটি ম্যাচে শুণ্য রানে আনাড়ির মত আউট হয়ে দল থেকে বাদ পড়েছে। সৌম্য দ্বিতীয় ম্যাচে জ্বলে উঠলেও খুব আস্থার সঙ্গে ব্যাটিং করছে বলবো না। বাংলাদেশের শক্তি শান্ত, হৃদয়, মাহমুদুল্লাহ এবং মুশফিকের গড়া মিডল অর্ডার। তবে শ্রীলংকা এগিয়ে আছে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার মত চৌকষ খেলোয়াড় থাকায়।  আশা করি অদূর ভবিষ্যতে জাকির অনিক, রিশাদ হোসেন এমনকি তাসকিন একই ভূমিকায় অবতীর্ণ হবে।

আমি দুই দলের পেস বোলিং পার্থক্য দেখি না। তবে তাসকিন,শরিফুলের বোলিংয়ে আরো ধারাবাহিকতা প্রয়োজন। শান্ত সৌম্যকে দিয়ে আরো কিছু ওভার করাতে পারে যদি ফ্রন্ট লাইন পেসার কেউ ভালো না করে। দিনের খেলা টস জয়ী দল অবশ্যই ব্যাটিং করবে। সেই ক্ষেত্রে দুটি দলের চেষ্টা থাকবে ৩০০ প্লাস রান করে মনস্তাত্ত্বিক ভাবে এগিয়ে থাকার। বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জ থাকবে ওপেনিং সহ টপ অর্ডার ব্যাটিং এবং মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের হাসারাঙ্গাকে দেখে শুনে খেলা।  দ্বিতীয় ম্যাচে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ,মেহেদী মিরাজ আরো একটু সংযত হওয়া উচিত ছিল।

আগেই লিখেছি দুই দলের ভারসাম্যে ব্যাবধান ১৯-২০।  দিনের ম্যাচে শিশির কারো আশীর্বাদ কারো অভিশাপ হবে না। এই ক্ষেত্রে রণকৌশলে এগিয়ে থাকতে হবে জয় প্রত্যাশী দলকে। আমি বাংলাদেশিদের এগিয়ে রাখবো সঙ্গত কারণেই।

আমার বিবেচনায় বাংলাদেশ দল হতে পারে সৌম্য সরকার, মেহেদী হাসান মিরাজ, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহীদ হৃদয়, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহিম, জাকের আলী অনিক, রিশাদ হোসেন, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম এবং মুস্তাফিজুর রহমান।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

three + eight =