সালেক সুফী: বাংলাদেশ ক্রিকেটে এখন জনপ্রিয় আলোচনা ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়ে আইপিএল ২০২৩ খেলতে সাকিব, লিটন, মুস্তাফিজকে সুযোগ দেওয়া। সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড়রা পুরো সময় আইপিএল খেলার জন্য সুযোগ চেয়েছে। ইতিমধ্যে শীর্ষস্থানীয় বোলার আহত হয়ে পড়ে তাসকিনকেও চেয়েছে অন্যতম ফ্রাঞ্চাইজ। বাংলাদেশের সামনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আছে। আলোচিত চার জন বাংলাদেশের অপরিহার্য খেলোয়াড়।
অন্যান্য শীর্ষ স্থানীয় দলের মতো বাংলাদেশের মানসম্পন্ন বিকল্প খেলোয়াড় নেই। তাই দীর্ঘসময়ের জন্য ওদের ভিনদেশি টুর্নামেন্টে খেলতে দেওয়ার ঝুঁকি আছে। তবে এই বছর ভারতে আইসিসি বিশ্বকাপ খেলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের খেলোয়াড়ের এক্সপোজার এক্ষেত্রে বিবেচনায় আসতে পারে। সিদ্ধান্ত নেওয়া বিসিবির পক্ষে সহজ না।
বিসিবি সভাপতি পরিষ্কার করে না বললেও মনে হচ্ছে আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে ৪ এপ্রিল শুরু হওয়া টেস্ট ম্যাচ এবং মে মাসে আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে ফিরতি সিরিজ সামনে রেখে বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের সীমিত সময়ের জন্য অনুমতি দেওয়া হতে পারে। হেড কোচ চন্দ্রিকা হাতুরাসিংহের কথায় একই সুর। তবে বাংলাদেশের অন্যতম সফল প্রাক্তন অধিনায়ক বর্তমান জাতীয় সংসদ সদস্য মাশরাফি ওদের খেলতে সুযোগ দেওয়ার পক্ষে। খালেদ মাহমুদ সুজনের কথায় সায় রয়েছে।
সবাই জানে বিশ্বক্রিকেট মোড়ল ভারতের আইপিএল টি২০ ক্রিকেট শীর্ষস্থানীয় পেশাদারি ক্রিকেটারদের জীবনের বাঁক বদলে দিয়েছে। আইপিএল কাঠামোতে অন্যানো ক্রিকেট খেলুড়ে দেশেও ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেট আয়োজিত হচ্ছে। নানা বিতর্কের কারণে আমি ব্যাক্তিগত কারণে আইপিএল জাতীয় ক্রিকেটের সমর্থক না হলেও ক্রিকেটের আঙ্গিক পরিবর্তন অস্বীকার করতে পারি না। টি২০ ক্রিকেট এখন ওডিআই এমনকি টেস্ট ক্রিকেটকেও প্রভাবিত করছে বিভিন্ন মাত্রায়।
এখন দেখা যাক ওদের অনুপস্থিতি বাংলাদেশের আসন্ন খেলাগুলোয় কতটা প্রভাব পড়বে। টেস্ট অধিনায়ক সাকিব, সহ অধিনায়ক লিটন। মুস্তাফিজ টেস্ট খেলে না। তিন জন না খেললে নতুন অস্থায়ী অধিনায়ক নির্বাচন করতে অসুবিধা হওয়ার কথা না। প্রতিপক্ষ বিচারে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তামিম, মুশফিক, মোমিনুল, মেহেদী মিরাজ, তাইজুল, এবাদত, তাসকিন, খালেদ এবং অন্যানদের নিয়ে ঢাকা উইকেটে টেস্ট খেলায় অসুবিধা দেখি না। তবে ফিরতি সিরিজে আয়ারল্যান্ডে খেলতে ওদের প্রয়োজন হবে।
এদিকে আইপিএল ম্যাচ সিডিউল অত্যন্ত নিবিড়, ১২টি শহরে যাতায়াত কারণে খেলোয়াড়দের আহত হয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকবে। এমনকি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড আইপিএল ব্যবস্থাপনাকে ভারতীয় জাতীয় দলের বোলারদের সীমিত ব্যবহার করার অনুরোধ করেছে।
আমি বাংলাদেশ খেলোয়াড়দের সুযোগ দেওয়ার পক্ষে। এক্ষেত্রে সাকিব, মুস্তাফিজ নিজেদের অভিজ্ঞতার কারণে যতটা নিজেদের নিয়ে সতর্ক, প্রথম আবির্ভাবে লিটন নাও হতে পারে। তবুও আমি ওদের যেতে দেওয়ার সুপারিশ করছি। তবে তাসকিনের প্রসঙ্গ ভিন্ন। আঘাতের কারণে দীর্ঘ দিন খেলার বাইরে থাকা তাসকিন এখন বিশ্বমানের ম্যাচজয়ী খেলোয়াড় হবার পথে। ওকে আমি আইপিএল ২০২৩ খেলতে না পাঠানোর সুপারিশ করবো।
সালেক সুফী: আন্তর্জাতিক ক্রীড়া বিশ্লেষক