সুপারস্টারের দুই যুগপূর্তি

ধুকে ধুকে চলা ঢালিউড যখন খাদের কিনারে দাঁড়িয়ে তখন তাকে টেনে তোলার মতো যারা ছিলেন তারাও আবেদন হারিয়েছেন। ঠিক এ সময় এগিয়ে আসে একটি কাঁধ। কাঁধটায় ভর করে একটু একটু করে কোমর সোজা করে দাঁড়ায় রুগ্নপ্রায় ঢাকাই চলচ্চিত্র। এরপর থেকে ওই কাঁধ ঢালিউডকে নিয়মিত অক্সিজেন সরবরাহ করে যাচ্ছে। কাঁধটি শাকিব খানের। ঢাকাই সিনেমার এক অপ্রতিদ্বন্দ্বী সুপারস্টার। ভক্তরা ভালোবেসে নাম দিয়েছেন কিং খান। ২৪ বছর আগে চলচ্চিত্রে পথচলা শুরু হয়েছিল তার। বলতে হয়, ব্যর্থতার পেছনে লুকিয়ে থাকে সফলতা। শুধু ধৈর্য ধরতে হয়। কাজ করতে হয় একাগ্রচিত্তে। শাকিব খান সেটাই করেছেন। ১৯৯৯ সালের ২৮ মে যখন তার সিনেমায় পথচলা শুরু হয় তখন জানতেন না যে, তিনি হবেন শীর্ষ নায়ক। তবে চেষ্টা করেছেন। পাড়ি দিয়েছেন বন্ধুর পথ। গত ২৮ মে ঢালিউডে দুই যুগ পূর্ণ হয়েছে তার। প্রিয় তারকার বিশেষ এই দিনে অনুরাগীরা যখন মাতোয়ারা, দিনটি ভার্চুয়ালি উদযাপন করতে সামাজিকমাধ্যমে তুলেছেন ঝড় তখন শাকিবের দম ফেলার ফুরসৎ নেই। বঙ্গোপসাগরের তীরে তিনি ব্যস্ত নতুন ছবি ‘প্রিয়তমা’র শুটিংয়ে। হাতে একটুও সময় নেই। এ ঈদেই মুক্তি পাবে ছবিটি। রাতদিন শুটিংই একমাত্র উপায়। তবে ব্যস্ত শাকিব মুখে কিছু না বললেও শুটিংয়ের ফাঁকে নেটদুনিয়ায় লক্ষ্য করছিলেন ভক্তদের উন্মাদনা।

ওদিকে নতুন এ ছবিতে শাকিবের প্রিয়তমা হতে কলকাতা থেকে উড়ে এসেছেন ইধিকা পাল। ইধিকা জানেন, যার সাথে জুটি বেঁধেছেন তিনি এ দেশের সবচেয়ে বড়ফ্রেমের নায়ক। যার নামে সিনেমা হলে লাইন ধরে দর্শক। এও জানতেন ওই দিনটি তার রেসের দুই যুগ পূর্তির। তাই তিনিও যোগ দেন দিনটি উদযাপনে। শাকিবের অলক্ষ্যে ছবির পরিচালক হিমেল আশরাফ কেক নিয়ে আসেন। কেক কেটে দিনটি উদযাপন করে চমকে দেন ভাইজানকে। আর গল্পের প্রিয়তমা ইধিকার হাতে কেক খেয়ে মিষ্টি হেসে ভাইজান যোগ দেন নিজের এ দীর্ঘ পথচলার বিশেষ মুহূর্ত উদযাপনে। এরপর সামাজিকমাধ্যমে শাকিব এক ভিডিও বার্তায় তুলে ধরেন নিজের অনুভূতির কথা। শুভাকাক্সক্ষী ও শুভানুধ্যায়ীদের ভালোবাসা দিয়ে তিনি জানান, এই দীর্ঘ এই পথচলা সহজ ছিল না তার জন্য। তবে কঠিন ও সহজ সময়েই শুভাকাক্সক্ষীদের ভালোবাসা ছিল তার একমাত্র শক্তি। এবার ঈদে শাকিব প্রেক্ষাগৃহে থাকছেন প্রিয়তমা ছবি নিয়ে। এ নিয়ে ভক্তদের উন্মাদনার শেষ নেই। দিনটি উদযাপনের পাশাপাশি শাকিব ভক্তদেরও সন্তুষ্ট করেছেন ছবিটির পরিচালক হিমেল আশরাফ। প্রিয়তমা ছবির দ্বিতীয় পোস্টার প্রকাশের জন্য বেছে নিয়েছিলেন দিনটি। যা শাকিবের ভক্তদের জন্য ছিল বাড়তি পাওনা।

কিয়ানু রিভসের প্রত্যাবর্তন
২০ বছর আগে সংগীত জগতে পা রেখেছিলেন কানাডিয়ান সংগীতশিল্পী ও অভিনেতা কিয়ানু রিভস। বন্ধু রবার্ট মেইহাউজকে সঙ্গে করে গড়ে তুলেছিলেন ‘ডগস্টার’ নামের একটি ব্যান্ড। দলটিতে ড্রামস সামলানোর দায়িত্ব ছিল রবার্টের। অন্যদিকে কণ্ঠ দেওয়ার পাশাপাশি গিটার তুলে নিয়েছিলেন কিয়ানু নিজেই। অল্প কয়েকদিনেই শ্রোতাদের নজর কেড়েছিল ব্যান্ডটি। কিন্তু এই জনপ্রিয়তার সঙ্গে সখ্যতা বেশিদিন রাখেননি কিয়ানু। কয়েক বছর পরই ডগস্টার ত্যাগ করে অভিনয়ে থিতু হন তিনি। সেখানেও পেয়েছেন আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা। ততদিনে ডগস্টার ভেঙে গেছে। অবশ্য এ নিয়ে কিয়ানুর মাথাব্যাথা ছিল না। কেননা তিনি তখন একাধিক পুরস্কার বিজয়ী চলচ্চিত্র অভিনেতা। হাঁটছেন সাফল্যের পথ ধরে।

এদিকে ২০ বছর পর তার মনে পড়েছে ব্যান্ডটির কথা। সম্প্রতি ডগস্টার ব্যান্ডকে গুছিয়ে ফিরেছেন পুরোনো রূপে। গিটার হাতে বটলরক নাপা ভ্যালি ফেস্টিভ্যালে পারফর্ম করেছেন এ অভিনেতা ও গায়ক। সঙ্গে ছিলেন ব্যান্ডমেট রবার্ট মেইহাউজ। দুই দশক পর আবার জনসমক্ষে তাকে পেয়ে শ্রোতাদের উচ্ছ্বাস ছিল দেখার মতো। এ সময় অতীত দিনের স্মৃতিচারণ করে কিয়ানু বলেন, ‘আমি একসঙ্গে গান করার সময়গুলো মিস করি। একসঙ্গে লেখার সময়গুলোও মিস করি। একসঙ্গে শো করার বিষয়টি আরো মিস করি।’ তিনি আরও বলেন, ‘একটা সময় আমরা আর একসঙ্গে কাজ করিনি। এরপর যখন সুযোগ পেলাম মনে হলো এখন কাজটা করা যায়।’

চলুন এবার অল্প পরিসরে জেনে নেই ডগস্টার ব্যান্ড গঠনের গল্প। রিভস ও মেইহাউজের পরিচয় হয়েছিল একটি সুপার মার্কেটে। সেখান থেকেই তাদের বন্ধুত্ব। এরপর দুজনে গড়ে তোলেন গানের দলটি। পরে তাদের সঙ্গে যোগ দেন লিড গিটারিস্ট ও মেইন ভোকাল হিসেবে গ্রেগ মিলার। তিনি বেশিদিন ছিলেন না ডগস্টারের সঙ্গে। ১৯৯৫ সালে ব্যান্ড থেকে বেরিয়ে যান তিনি। এর বছর খানেক আগে দলটিতে ভোকাল ও গিটারিস্ট হিসেবে যুক্ত হন ব্রেট ডমরোজ। এরপরই সিনেমায় ব্যস্ততার কারণে ব্যান্ড ত্যাগ করেন রিভস। এরপর বলা চলে ভেঙেই গিয়েছিল ব্যান্ডটি। ২০ বছর পর মৃতপ্রায় ব্যান্ডকে আবার অক্সিজেন প্রদান করেছেন এই গায়ক ও অভিনেতা।

তাদের বন্ধুতা
ও বন্ধু তোকে মিস করছি ভীষণ,
তুই ছাড়া কিছুই আর জমে না এখন…
সোলসের এই গানটিতে রয়েছে দূরে চলে যাওয়া বন্ধুর প্রতি হৃদয়ের আকুতি। এমনই আকুতি নিয়ে গত মাসে অভিনেত্রী শবনম ফারিয়ার বাসায় এক হন তার যত বন্ধুরা। জমিয়ে আড্ডা দেন তারা। সুপারস্টার মান্না এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, মিডিয়ায় কেউ কারও বন্ধু হতে পারে না। এই কথাটি একসময় প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়। তবে ফারিয়াদের ক্ষেত্রে কথাটি ভুল প্রমাণিত হয়েছে। কেননা তার বন্ধুরা সবাই মিডিয়ার। এ সময়ের জনপ্রিয় মুখ সবাই। সাফা কবির, জোভান, তৌসিফ মাহবুব, সিয়াম আহমেদ, বাঁধন, শাওন, টয়া, সারিকা সাবাহ। এদিন প্রাণ খুলে হেসেছেন, মিষ্টি মধুর ঝগড়া করেছেন তারা। এদের মধ্যে তৌসিফ, জোভান, সাফা ও সিয়াম চারজনই বরিশালের। আড্ডায় বাড়তি আনন্দ দিতে তারা মেতেছিলেন বরিশালের আঞ্চলিক ভাষায়। অনেকদিন পর বন্ধুদের দেখা হলে যা হয় আরকি। বিভিন্ন রকম বিষয় নিয়ে মেতে উঠেছিলেন তারা। তাদের এমন গেট টুগেদার নেটনাগরিক ও সহকর্মীরা নিয়েছেন ইতিবাচকভাবে। যান্ত্রিক শহরে ব্যস্ততার সাথে পাল্লা দেওয়া মানুষগুলো যে এভাবে বন্ধুতা মনে পুষে রাখতে পারে ফারিয়া তৌসিফরা যেন সেটাই প্রমাণ করেছেন।

লেখাটির পিডিএফ দেখতে চাইলে ক্লিক করুন: ফ্রেম বন্দি

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

9 − 5 =