‘হাওয়া’র গান নিয়ে বিতর্ক, যা বললেন নির্মাতা

গত বছর প্রেক্ষাগৃহে ঝড় তুলেছিল মেজবাউর রহমান সুমনের প্রথম সিনেমা ‘হাওয়া’। সিনেমার গানগুলোও জনপ্রিয় হয়েছে দেশে-বিদেশে। এ সিনেমার গান ‘সাদা সাদা কালা কালা’ দিয়েই নতুন করে জীবন পেয়েছেন গীতিকার হাশিম মাহমুদ। মুক্তির ১০ মাস পর এবার হাওয়া সিনেমার ‘আটটা বাজে দেরি করিস না’ গান নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। গানের ক্রেডিট লাইনে গীতিকার ও সুরকারের জায়গায় তথ্য দেওয়া ছিল সংগৃহীত। অথচ ভারতীয় গণনাট্য সংঘের সদস্য বিশ্বজিৎ দাস জানাচ্ছেন, গানটি মোটেও সংগৃহীত নয়, এর গীতিকার ও সুরকারের নাম মনিরুদ্দিন আহমেদ।

বিশ্বজিৎ দাস জানান, ‘আটটা বাজে দেরি করিস না গানটির গীতিকার ও সুরকার ভারতের বীরভূমের শিল্পী মনিরুদ্দিন আহমেদ। তাঁর লেখা অসংখ্য গান গেয়েছেন স্বপ্না চক্রবর্তী, আমিনুর রশিদ, কার্তিক দাস বাউল, বাসুদেব দাস বাউলের মতো শিল্পীরা। তিনি বীরভূম জেলা পঞ্চায়েত অফিসের কর্মী ছিলেন একসময়। সিউড়ি লালকুঠি পাড়ার বাসিন্দা, বয়স প্রায় ৮১ বছর।’ লেখকের হয়ে তিনি ‘হাওয়া’ সিনেমার পরিচালক, প্রযোজকসহ সব কলাকুশলীর কাছে মনিরুদ্দিন আহমেদের সঠিক মর্যাদা দেওয়ার আবেদন রেখেছেন।

হাওয়া সিনেমার নির্মাতা মেজবাউর রহমান সুমনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা তো হুট করেই সিনেমা নির্মাণ করিনি, আবার গানটিও যে হঠাৎ করেই ব্যবহার হয়েছে তাও না। চার-পাঁচ বছর আগে যখন চিত্রনাট্য নিয়ে কাজ করছিলাম, তখনই গানটি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিই। সিনেমায় ব্যবহারের আগে থেকেই ইউটিউবে ছিল। তবে এত জনপ্রিয় ছিল না। সেখানেও গানটির গীতিকার ও সুরকারের নাম দেওয়া ছিল না। যাঁর কণ্ঠে গানটি শুনে আমাদের ভালো লেগেছে, সেই বাসুদেব দাস বাউলকে দিয়েই গাইয়েছি। তাঁকে দিয়ে গাওয়ানোর জন্য আমরা শান্তিনিকেতন গিয়েছিলাম। তিনিও আমাদের গীতিকার ও সুরকারের নাম জানাতে পারেননি। আমরা বিভিন্নভাবে খুঁজেও গানের স্রষ্টার তথ্য পাইনি। আমরা চেষ্টার কোনো ত্রুটি রাখিনি। তাই সিনেমায় ব্যবহারের সময় সংগৃহীত লিখেছি।’

নির্মাতা আরও বলেন, ‘আমি অবাক হচ্ছি এই ভেবে যে গানটি মুক্তি পেয়েছে ১০ মাস আগে। দুই বাংলাতেই গানটি জনপ্রিয় হয়েছে। তাহলে এত দিন পরে কেন এসব কথা উঠছে? তার মানে দাঁড়ায়, এত দিন তাঁরাও জানতেন না গানটি কার লেখা? তাঁদের রিসার্চ করতেও ১০ মাস লেগেছে। ইতিমধ্যে আমরা বিষয়টি সুরাহা করার প্রক্রিয়ার মধ্যে আছি। ভারতীয় কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। গানের প্রকৃত গীতিকার-সুরকার পাওয়া গেলে অবশ্যই তাঁর নাম সংযোজন করব। এর জন্য হয়তো কিছুদিন সময় লাগবে।’

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

ten + 17 =