১ অক্টোবর থেকে সুপারশপে এবং ১ নভেম্বর থেকে কাঁচাবাজারে পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার বন্ধ : সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, আগামী ১ অক্টোবর থেকে সুপারশপে এবং ১ নভেম্বর থেকে সব কাঁচাবাজারে পলিথিন ও পলিপ্রপাইলিনের তৈরি ব্যাগ ব্যবহার বন্ধ করা হবে। খবর বাসস

তিনি বলেন,‘পলিথিন বা পলিপ্রপাইলিনের ব্যাগ ব্যবহারে যে নিষেধাজ্ঞা আছে, সেটি কার্যকর করতে আগামী ১ অক্টোবর থেকে সুপারশপে এবং ১ নভেম্বর থেকে কাঁচাবাজারগুলোতে আইনের প্রয়োগ করা হবে।’

উপদেষ্টা আজ রাজধানীর মোহাম্মদপুরের টাউন হল ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন কাঁচাবাজার বণিক সমিতির অফিসে ‘পলিথিন শপিং ব্যাগ বন্ধে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ বিষয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সরকারের এসব সিদ্ধান্তের কথা জানান।

একইসঙ্গে তিনি পলিথিন উৎপাদনের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধেও ১ নভেম্বর থেকে অভিযান পরিচালনার কথা উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, ‘পলিথিন যারা উৎপাদন করে তাদের বিরুদ্ধে আমরা ১ নভেম্বর থেকে অভিযান পরিচালনা শুরু করবো। সবাই পর্যাপ্ত সময় পাচ্ছেন। আমরাও বিকল্প সরবরাহের জন্য কাজ করছি।’

এরআগে পরিবেশ উপদেষ্টা পলিথিন শপিং ব্যাগ, পলিইথাইলিন বা পলিপ্রপাইলিনের তৈরী সামগ্রীর উপর বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞা কঠোরভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে টাউন হল কাঁচা বাজারে ক্লিন-আপ কার্যক্রম উদ্বোধন ও বাজারে পলিথিনের বিকল্প সামগ্রী বিতরণ, বাজারে বিদ্যমান পলিথিন ব্যাগসহ অন্যান্য পলিথিনজাত প্যাকেজিং সংগ্রহের জন্য বিন ও স্থায়ী নোটিশ বোর্ড স্থাপন কাজের উদ্বোধন করেন।

মতবিনিময় সভায় পরিবেশ উপদেষ্টা আরো বলেন, আগামী ১ অক্টোবর থেকে ঢাকার সুপারশপগুলোতে প্লাস্টিক ও পলিপ্রপাইলিনের ব্যাগ ব্যবহার বন্ধ  সরকারের আর কোনো একক সিদ্ধান্ত নয়। এটি সুপারশপগুলোর ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর বিকল্প হিসেবে পাট, কাপড় ও কাগজের ব্যাগ ব্যবহার করা হবে। এজন্য বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশনসহ ২০-২৫টি প্রতিষ্ঠান পাট, কাপড় ও কাগজের ব্যাগ তাদের সরবরাহ করবে। ইতোমধ্যে সুপারশপগুলো তাদের চাহিদা দিয়েছে এবং তাদের চাহিদা অনুযায়ী ব্যাগের যোগানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, কাঁচাবাজারগুলো যাতে আর পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার না করে সেজন্য আমরা বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। এটা নতুন করে নিষেধ করার কিছু নেই। এটা ২০০২ সাল থেকে আইন করে নিষিদ্ধ করা আছে। বিভিন্ন সময়ে পলিথিন উৎপাদনকারী বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে অভিযান চালানো হয়েছিল। কিন্তু মার্কেটে কখনো অভিযান চালানো হয়নি। ফলে মার্কেটগুলো দেদারসে পলিথিন এনেছে এবং পলিথিনে পণ্য দিয়েছে।

পলিথিন ও পলিপ্রপাইলিনের ব্যাগ ব্যবহার বন্ধে সরকারের কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, এটি কেবলমাত্র আজকের আলাপ-আলোচনা নয়। এরআগেও বিষয়টি নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। কাজেই এক্ষেত্রে আইন প্রয়োগ করা হবে। দোকান-মালিক সমিতির নেতারাও আমাদের কথা দিয়েছেন, এক মাসের মধ্যে তারা পলিথিনের পরিবর্তে পাট, কাপড় বা কাগজের ব্যাগ ব্যবহার শুরু করবেন।

উপদেষ্টা বলেন, সকলকে বুঝতে হবে, পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার যে ক্ষতিকর সেটা আন্তর্জাতিকভাবেও স্বীকৃত। এ নিয়ে আমাদের সতর্ক, সচেতন ও উদ্যোগী হওয়ার সময় পার হয়ে গেছে। আমরা বরং দেরিতে শুরু করলাম।

এ সময় পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব ও অতিরিক্ত সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, পরিচালক, উপপরিচালক, মোহাম্মদপুর টাউন হল ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন কাঁচাবাজার বণিক সমিতির সভাপতিসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

1 × two =