অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম আর নেই

ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার বেলা আড়াইটায় তার  মৃত্যু হয় বলে তার ছেলে বর্ষণ ইসলাম জানান।জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম বাংলা একাডেমির সভাপতির দায়িত্বেও ছিলেন। স্বাধীনতা ও একুশে পদকপ্রাপ্ত এই শিক্ষক, গবেষকের বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।

পেটের ব্যথা নিয়ে গত ৭ অক্টোবর রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) ভর্তি হয়েছিলেন অধ্যাপক রফিকুল। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার নিউমোনিয়া ধরা পড়ে।উন্নত চিকিৎসার জন্য পরিবারের সদস্যরা রফিকুল ইসলামকে ভারতে নিয়ে যেতে চাইলেও তিনি রাজি হননি। অবস্থার অবনতি হলে তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়।তাকে সুস্থ করে তোলার চেষ্টায় গত ২৫ নভেম্বর কৃত্রিমভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু মঙ্গলবার বিকালে সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায়।

বর্ষণ জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তার বাবার মরদেহ হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়া হবে উত্তরার বাসায়। সেখানে ১০ নম্বর সেক্টরের খালিদ বিন ওয়ালিদ মসজিদে এশার পর এক দফা জানাজা হবে। রাতে মরদেহ রাখা হবে হাসপাতালের হিমঘরে।সবার শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য বুধবার দুপুরে অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের কফিন নিয়ে যাওয়া হবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। আসরের পর জনাজা শেষে আজিমপুর কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।বর্ষণ বলেন, “আজিমপুরে আমাদের দাদার কবরে দাফন করার জন্যে আগেই বলে গেছেন বাবা।”

নজরুল গবেষক অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রথম নজরুল অধ্যাপক এবং নজরুল গবেষণা কেন্দ্রের প্রথম পরিচালক ছিলেন।এই ভাষাবিজ্ঞানী ও লেখক ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন; সেই সময়ের দুর্লভ আলোকচিত্রও তিনি ধারণ করেছেন।বাঙালির মুক্তির সংগ্রামের এই প্রত্যক্ষ সাক্ষী সেইসব ইতিহাস গ্রন্থিত করেছেন তার লেখায়। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে প্রথম গ্রন্থ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষের ইতিহাসের প্রথম গ্রন্থটিসহ প্রায় ৩০টি বই তার হাত দিয়ে এসেছে।

ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টসের সাবেক উপাচার্য রফিকুল ইসলাম এক সময় বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৮ সালে সরকার তাকে জাতীয় অধ্যাপক করে নেয়।স্বাধীনতা ও একুশে পদকপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ, গবেষক ও লেখক ড. রফিকুল ইসলাম বেশ কয়েকটি শীর্ষ প্রতিষ্ঠানে দায়িত্বপালন করেছেন। ২০২১ সালের ১৮ মে সরকার তাকে তিন বছরের জন্য বাংলা একাডেমির সভাপতির দায়িত্ব দেয়।মাতৃভাষা সংরক্ষণ, পুনরুজ্জীবন, বিকাশ, চর্চা, প্রচার-প্রসারে অবদান রাখায় এই বছর তাকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক’ দেয় সরকার।

বিডিনিউজ

 

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

three × three =