ঢাকাই চলচ্চিত্রের খল অভিনেতা থেকে কবি শিমুল খান

ঢাকাই চলচ্চিত্রের নিয়মিত মুখ শিমুল খান। সবাই তাকে ঢাকাই বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম একজন খল অভিনেতা হিসেবেই জানে। চলচ্চিত্র তার নেশা এবং পেশা। তিনি এখন পর্যন্ত দেশ-বিদেশের পঞ্চাশোর্ধ্ব চলচ্চিত্র এবং ওয়েব সিরিজে অভিনয় করেছেন। এ কথা ঢাকাই বাংলা চলচ্চিত্র প্রেমী দর্শকদের মোটামুটি সবারই জানা। তবে এর বাইরেও তার একটি পরিচয় আছে। তিনি একজন কবি। সেই ২য় শ্রেণিতে পড়াকালীন সময় থেকেই ছড়া, কবিতা এবং ছোটগল্প লিখেন শিমুল খান। আর সেই সূত্র ধরেই কিংবদন্তী পাবলিকেশন থেকে সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘সভ্যতার ময়নাতদন্ত – Autopsy Of Civilization’। বইটি গত একুশে বই মেলাতে প্রকাশিত হবার কথা থাকলেও ঠিক সময়ে পান্ডুলিপির পুরো কাজ শেষ না হওয়া এবং উদ্ভুত করোনা পরিস্থিতির তোপের মুখে পড়েই মূলত বইটি প্রকাশ পেতে দেরি হয়ে গেলো।

বইটি প্রকাশ উপলক্ষে কিংবদন্তী পাবলিকেশনের স্বত্বাধিকারী প্রকাশক অঞ্জন হাসান পবন বলেন, শিমুল খানের লেখা অনেক আগে থেকেই আমার ভালো লাগে। আমি তার লেখার গুণমুগ্ধ ভক্ত। গত বছর আমি তাকে আমার প্রতিষ্ঠান থেকে বই প্রকাশ করার প্রস্তাব দেই। তিনি যোগ্য সম্মানী এবং শর্তের বিনিময়ে হাসিমুখে বইটির পান্ডুলিপি আমাদেরকে প্রদান করেন। বইটি প্রধানত বাংলা ভাষাভাষীদের জন্য প্রকাশিত হলেও সারাবিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কবিতা পাগল সার্বজনীন পাঠকদের কথা মাথায় রেখে বাংলা এবং ইংরেজী উভয় ভাষাতেই বইটি সার্বজনীন সংস্করণ আকারে প্রকাশ করেছি। বর্তমানে বইটি রকমারি ডট কম থেকে অনলাইন অর্ডার করে পাঠক কিনতে পারছেন। ৩৫০ টাকা মূল্যের বইটি তারা ২৯% ছাড়ে ২৫০ টাকা মূল্যে কিনতে পারবেন।

নিজের লেখা-প্রকাশিত প্রথম কাব্যগ্রন্থ সম্পর্কে শিমুল খান বলেন, আমি লেখালেখি করি সেই শিশুকাল থেকে কিন্তু সেটা শুধুমাত্র আমার নিজের আত্মার শান্তির জন্য। সত্যি কথা বলতে কি পেশায় আমি অভিনেতা হলেও লেখালেখি আমার রক্ত কণিকায় অভিনয়ের চেয়েও অনেক বেশি গভীরভাবে মিশে থাকে। কিন্তু আমি পাঠকের উদ্দেশ্যে বই প্রকাশের জন্য কখনোই কিছু লিখিনি। তবে বইপুস্তকের প্রতি প্রকাশক অঞ্জন হাসান পবনের গভীর প্রেম-ভালবাসার পাশাপাশি আমার কবিতার প্রতি তার বিশেষ অনুরাগ দেখে আমি জীবনে প্রথমবারের মতো পাঠকদের উদ্দেশ্যে বই প্রকাশ করার মতো চূড়ান্ত দুঃসাহস দেখাতে পেরেছি। বস্তাপচা কিছু লিখিনি এটা আমি নিশ্চিত। আমার কবিতার বইটি হৈচৈ ফেলে দেয়ার মতো জনপ্রিয়তা পাবে না এটা আমি জানি। তবে আমার এই বইটি কবিতার নিয়মিত পাঠকদের জন্য এক পশলা বৃষ্টির মতো। যা অনেকদিন পরিণত পাঠকের মগজের চন্দ্রিমায় স্থায়ীভাবে বসবাস করবে। এটুকু শক্ত আত্মবিশ্বাস নিজের লেখার প্রতি সবসময় আমার থাকবেই। তবে বিশেষভাবে সঞ্চিতা সৃ‌ষ্টিকে ধন্যবাদ এবং ভালবাসা জানাতে চাই আমার চাহিদা অনুযায়ী খুবই সুন্দর একটি প্রচ্ছদ অংকনের পাশাপাশি বইয়ে থাকা আমার প্রতিটি বাংলা কবিতাকে ইংরেজিতে অনুবাদ করার মতো কষ্টসাধ্য কাজটি সুনিপুণ দক্ষতায় সামলানোর জন্য।

প্রথম বইটি প্রকাশিত হতে না হতে জানা গেলো ইতোমধ্যেই শিমুল খান নাকি দ্বিতীয় বই প্রকাশ করার প্রস্তাব পেয়ে সবকিছু চূড়ান্তও করে ফেলেছেন। তবে কবিতার বইয়ের পর এবার শিমুল খান লিখছেন উপন্যাস। যেটি আগামী ২০২২ সালের একুশে বই মেলায় সপ্তর্ষি প্রকাশন থেকে প্রকাশিত হবে। সবমিলিয়ে অভিনয়ের পাশাপাশি দারুণ ব্যস্ত সময় পার করছেন লেখক শিমুল খান।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

13 − eight =