প্রসেনিয়াম-এর ‘সারারাত্তির’শিল্পকলা মঞ্চে

কোভিডের কারণে দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকার পরে গেল ১ সেপ্টেম্বর থেকে চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমির মঞ্চে সাংস্কৃতিক আয়োজন আবার শুরু হয়েছে। একাডেমির মঞ্চের পর্দা উঠবে প্রসেনিয়াম-এর এই নতুন নাটক ‘সারারাত্তির’-এর মঞ্চায়নের মাধ্যমে।বাদল সরকার রচিত এবং মোকাদ্দেম মোরশেদ নির্দেশিত এই নাটকটির উদ্বোধনী মঞ্চায়ন হতে যাচ্ছে ১০ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) সন্ধ্যা সাতটায়, চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমির মঞ্চে। ‘সারারাত্তির’-এর প্রধান তিন চরিত্রে অভিনয় করছেন প্রতীক গুপ্ত, ফারহানা আনন্দময়ী এবং মিশফাক রাসেল। আলোক পরিকল্পনা করেছেন মোসলেম উদ্দিন শিকদার এবং মঞ্চ ও পোশাক পরিকল্পনা করেছেন সিরাজাম মুনিরা স্বর্ণা। কোরিওগ্রাফি মিতাশা মাহরিন, আবহ পরিকল্পনায় মোকাদ্দেম মোরশেদ এবং শব্দ প্রক্ষেপনে দিদারুল আলম।

‘সারারাত্তির’ নাটকের গল্পে দেখা যাবে, বর্ষামন্দ্রিত ঝড়জলের রাতে এক দম্পতি আটকে যায় খোলামাঠের ধারে একটি পোড়োবাড়িতে। ওরা বেরিয়েছিল ছুটিযাপনে। রাত্তিরটা সেখানে কাটানো ছাড়া অন্য কোনো উপায়ও ছিল না। আর সেখানেই আবির্ভূত হলো, তৃতীয় চরিত্রটি, পোড়োবাড়ির প্রৌঢ় মালিক। নাটক কিংবা নাটকীয়তার শুরু তখনই। ভুতুড়ে আলো-আধারিতে প্রৌঢ়ের পরিচয়, আতিথেয়তা, একরাত্তিরের আন্তরিকতা, এসবের আড়াল ডিঙিয়ে যা মূর্ত হয়ে তিনজনের সামনে এসে দাঁড়ায়, তা হলো সম্পর্কের প্রতিরূপ; যা এতদিন এই দম্পতির কাছে অজানা, অচেনা ছিল।

সাত বছরের অভ্যস্ত দাম্পত্যের শেকলে বন্দী হয়ে-পড়া দম্পতিটি ধীরে ধীরে অনুধাবন করতে পারে, কাছে থাকলেই কাছের মানুষ হওয়া যায় না হয়তো। ফাঁকি ছিল না কোথাও, কিন্তু নিশ্চিতভাবেই বড়ো ফাঁক ছিল ওদের সম্পর্কের বুননে। আর এই উপলব্ধির আয়নায় দুজনকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে সম্পর্কের সেই অদেখা রূপকে আবিষ্কারে অনুঘটক হয়ে কাজ করে এই তৃতীয় ব্যক্তিটি। রাত গভীর হতে থাকে, বৃষ্টিপ্লাবিত রাতে ভেসে যায় ছকবাঁধা সংস্কারের প্রাচীর, রাত্রি শেষ হতে-হতে জেগে ওঠে অন্যরঙের এক প্রেমময় দিগন্তরেখা। রেখে যায় একটি প্রশ্ন। এ রাত কি সত্য? এ রাত কি সত্যিই এসেছিল এদের জীবনে? নাকি শুধুই এক অলীক কল্পনা? কেবলই কারো এক দুঃস্বপ্নের রাত? কিংবা কারো স্বপ্নেবোনা একটি রাত! সারারাত্তির!

এই নাটক প্রসঙ্গে নির্দেশক মোকাদ্দেম মোরশেদ বললেন, “দলের প্রথম নাটক হিসেবে বাদল সরকারের সংলাপ নির্ভর ‘সারারাত্তির’ নাটকটি নির্বাচনে বেশ সাহসী ভূমিকা রেখেছে প্রসেনিয়াম। নাটকটি ষাট দশকের লেখা হলেও আশ্চর্য রকম সত্য আজকের জন্য আগামীকালের জন্যও, শুধুমাত্র তিনজনের কথপোকথনে দাঁড়িয়ে আছে ‘সারারাত্তির’। চমৎকার সাইকোঅ্যানালাইসিস ট্রিটমেন্টে কথার বুনন যার সঙ্গে একাত্ম হয়ে যায় দর্শক। এ গল্পের নির্দিষ্ট কোন স্থান কাল নেই, উস্কে দেয়া মনের গভীরে চাপা পড়া অব্যক্ত কথনের ব্যক্ত রূপ, তাই এক্সিকিউশন প্যাটার্নেও নিরেট রিয়েলস্টিক কাঠামোর বাইরে কিছুটা স্যুরিয়েলস্টিকের ছোঁয়া রাখা হয়েছে। মঞ্চ পরিকল্পনায় মাল্টি ডিরেকশনাল অবয়বেও যেন গল্পের অস্থিরতা বিদ্যমান, সাথে আলো আবহের মিশেলতো আছেই।”

সারাবাংলা

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

eight − seven =