সাকিব-মুস্তাফিজের নৈপুণ্যে ঘাম ঝরানো জয় পেলো বাংলাদেশ

সালেক সুফী

কাল বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই সিরিজ জয় করা বাংলাদেশ মীরপুর স্টেডিয়ামে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর ৫ রানে জয় পেয়েছে দুর্বল জিম্বাবুয়ে দলের বিরুদ্ধে। জয়ী হয়ে ৪-০ এগিয়ে থাকা বাংলাদেশ কি তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলতে পারে? টস জয় করে বাংলাদেশ উড়ন্ত ব্যাটিং সূচনা করেছিল। ছুটির দিন গ্যালারি উপচে পড়া দর্শক আশা করেছিল পূর্ণ শক্তির বাংলাদেশ দল হয়তো ২০০ নাহোক ১৮০-১৯০ রান করবে।

কিন্তু যেই না তানজিদ তামিম এবং সৌম্য ফিরলো তাসের ঘরের মত ঝরঝরিয়ে ভেঙে পড়লো বাংলাদেশ ১৪৩ রানে শেষ হলো বাংলাদেশ। কাল বাংলাদেশ বোলিং আক্রমণে যোগ হয়েছিল বিশ্ব সেরা অল রাউন্ডার সাকিব আল হাসান এবং কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমান। ওদের নৈপুণ্য এবং কিছুটা ভাগ্যের সহায়তায় ঘাম ঝরানো ৫ রানের জয় পায় বাংলাদেশ। অতিথি দল লড়াই করেও ১৩৮ রানে সব উইকেট হারায়।

বিশ্বকাপের প্রায় প্রথম চয়েস একাদশ নিয়ে বাংলাদেশের ছন্নছাড়া পারফরম্যান্সের কোন অজুহাত থাকতে পারে না। বিশেষত ওপেনিং জুটির  তরুণ তানজিদ তামিম (৫৫) এবং সৌম্য সরকার (৪১) ১০১ রানের রানের উড়ন্ত শুরুর পর মাত্র ৪২ রানে বাংলাদেশের ৯ উইকেট উবে যাওয়া বাংলাদেশ ব্যাটিং মেরুদণ্ডহীন মনে হয়েছে।

লুক জঙ্গী (৩/২০), ব্রায়ান বেনেট (২/২০) এবং ইনগ্রাভার (২/২৭) নিখুঁত বোলিংয়ের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাটিং ভেঙে পড়া আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ৮ জন ব্যাটসম্যান দুই অংকে পৌঁছাতে পারেনি। কয়েকজন ব্যাটসম্যানের উইকেট ছুড়ে দেওয়া দেখে মনে হয়েছে যেন আতঙ্কগ্রস্ত।

কেন এমন হবে। ইদানিং দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশের টপ অর্ডার নিয়মিত ব্যর্থ হলে মিডল অর্ডার ঘুরে দাড়ায়। কাল বহুদিন পর ওপেনিং জুটি উড়ন্ত সূচনা এনে দেওয়ার পর মিডল অর্ডার লেট্ অর্ডার দাঁড়াতেই পারলো না। উইকেট কিন্তু ৪২ রানে ৯ উইকেট পড়ে যাওয়ার মত কঠিন ছিল না। তাহলে কি বাংলাদেশ আত্মতুষ্টিতে ভুগেছিল?

এই ম্যাচে নীরব ঘাতক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে বিশ্রাম দেওয়ার কারণ বুঝা গেলো না। আর মাত্র একটি ম্যাচ বাকি আছে। নিদারুন ফর্ম হীনতায় ভোগ লিটন দাসকে নিয়ে কি করবে বাংলাদেশ। অধিনায়ক নাজমুল শান্তর ব্যাটেও রান খরা। বাংলাদেশের বোলিং নিয়ে খুব কিছু বলার নেই। তাসকিন, মুস্তাফিজ, সাকিবের সঙ্গে যোগ হবে শরিফুল এবং সাইফুদ্দিন।  তবে ব্যাটিং নিয়ে যথেষ্ট মাথা ব্যাথার কারণ আছে।

কাল মামুলি স্কোর ডিফেন্ড করতে বাংলাদেশ বোলিং ক্ষমতার অগ্নিপরীক্ষা হয়েছে। সৌভাগ্য সাকিব, মুস্তাফিজ বিশ্বমানের ফর্ম বজায় রেখে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট নিয়েছে। তাসকিন তার দুরন্ত ফর্ম বজায় রেখেছে। তার পরেও ক্যাম্পবেল (৩১) এবং মাসাকাদজা (১৯*) জুটি জয় প্রায় ছিনিয়ে নিয়েছিল।

সৌভাগ্য বাংলাদেশের শেষ পর্যন্ত ৫ রানে জয় পেয়েছে। বিশ্বকাপের এক মাসও বাকি নেই। এই সময়ে দুর্বল একটি দলের বিরুদ্ধে দেশের মাটিতে চেনা পরিবেশে এই ধরনের ছন্নছাড়া ব্যাটিং হতাশা ছাড়া কি বলার আছে?

আমি জিম্বাবুয়ে দলকে কৃতিত্ব দিবো। প্রতিটি ম্যাচে ওরা উন্নতি করে ব্যাবধান ঘুচিয়ে আনছে।  বর্তমান অবস্থায় শেষ ম্যাচ ওরা জয়ী হলেও বিস্মিত হবো না. গাজী আশরাফ লিপু এবং তার সঙ্গী নির্বাচকরা বিশ্বকাপ স্কোয়াড নির্বাচনে মুন্সিয়ানা দেখবেন আশা করি। বিকল্প খুব একটা আছে বলে মনে হয় না।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

three × four =