সাবেক ছাত্রনেতা, লেখক-কলামিস্ট মনোয়ারুল হক মারা গেছেন

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা, বিশিষ্ট শিল্পপতি ও লেখক মনোয়ারুল হক মোহন মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বুধবার (১৭ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭টার দিকে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর মগবাজারে ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হসপিটালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

মনোয়ারুল হকের জন্ম পিরোজপুর জেলার প্রত্যন্ত একটি গ্রামে পঞ্চাশের দশকে। তিনি বেড়ে ওঠেন ঢাকায়। তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকারি স্কুল থেকে মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়ে তিনি ভর্তি হন জগন্নাথ কলেজে। এরপর ভর্তি হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখান থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন।

মনোয়ারুল হক ১৬ বছর বয়সে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখার সময় রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। রাজনীতির কারণে কারাগারেও যেতে হয়েছিল তাকে। ১৯৮৪ সালে রাজনীতি থেকে সরে আসেন তিনি।

মনোয়ারুল হক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাজনীতির ইতিহাসে একটি গৌরবময় অধ্যায়ের অংশীদার ছিলেন। বাদশা-হক পরিষদ শুধু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ই নয়, দেশের ছাত্ররাজনীতির ইতিহাসেও একটি উল্লেখযোগ্য অনুষঙ্গ হিসেবে বিবেচিত হবে আরও বহুকাল।

তিনি উদ্যোগ নেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই পুনর্গঠনের। এর মাধ্যমে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধশত শিক্ষার্থী ও শিক্ষককে সংবর্ধনা দেওয়াসহ বেশকিছু পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। আগামী ২৫-২৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবার কথা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাইয়ের সম্মেলন ও নির্বাচন। এজন্য হক ভাই সবাইকে এক করে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছিলেন।

ব্যবসার পাশাপাশি মনোয়ারুল হক লেখালেখির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ‘নেতা’ তার লেখা প্রথম উপন্যাস। এ ছাড়া রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে অসংখ্য লেখা রয়েছে। তার সর্বশেষ বই সময়ের স্বর।

গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে মগবাজারের সেঞ্চুরি টাওয়ারে মরহুমের প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ গণ্যমান্য ব্যক্তি, মরহুমের আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহীরা উপস্থিত ছিলেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টায় মগবাজারস্থ সেঞ্চুরি টাওয়ারে তার দ্বিতীয় জানাজা এবং দুপুর আড়াইটায় ঢাকা ক্লাবে তার তৃতীয় জানাজা শেষে আজিমপুরস্থ গোরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।

মনোয়ারুল হক ঢাকা ক্লাব ও গোল্ডেন হোমস সোসাইটি লিমিটেডের সদস্য ছিলেন। বহু গুণে গুণান্বিত এই সমাজহিতৈষী এক ছেলে, স্ত্রী ও অসংখ্য শুভানুধ্যায়ী রেখে গেছেন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

15 − thirteen =