বাংলাদেশ ও পাকিস্তান দুই দেশেই জনপ্রিয়তা রয়েছে অভিনেত্রী শবনমের। ছয় দশকের বর্ণাঢ্য চলচ্চিত্র জীবন তার। বাংলাদেশের সিনেমায় অভিনয় করলেও দীর্ঘ সময় কাজ করেছেন পাকিস্তানের সিনেমায়। পাকিস্তানের সিনেমায় তার অবদানের জন্য সেখানে ‘মহানায়িকা’ বলা হয় শবনমকে।
এখনও পাকিস্তানের মিডিয়া ও সাধারণ দর্শক মনে রেখেছেন তাকে। তাইতো সে দেশের ‘সিতারা-ই-ইমতিয়াজ’ এ সর্বোচ্চ পদকটি পেতে যাচ্ছেন শবনম। আগামী ২৩ মার্চ এ সম্মাননা তুলে দেওয়া হবে। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার দেশটিতে যাওয়ার অনুমতি দিচ্ছিল না তাকে। তবে সব বাধা শেষে বাংলাদেশ সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে বুধবার দেশ ছাড়েন তিনি।
পাকিস্তানের ১৩৫ জনকে দেওয়া হচ্ছে নিশান ই ইমতিয়াজ, হিলাল ই পাকিস্তান, হিলাল ই সুজাত, হিলাল ই ইমতিয়াজ, হিলাল ই কায়েদ ই আজম, সিতারা ই পাকিস্তান, সিতারা ই সুজাত, সিতারা ই ইমতিয়াজ পুরস্কার। এ ছাড়াও প্রেসিডেন্ট পদকের কয়েকটি ক্যাটাগরিতে দেওয়া হচ্ছে পুরস্কার। এ ছাড়াও প্রেসিডেন্ট পদকের কয়েকটি ক্যাটাগরিতে দেওয়া হচ্ছে পুরস্কার। মোট ৫০৭ জনকে বিভিন্ন ক্যাটাগরির পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে পাকিস্তান সরকার।
তবে ‘সিতারা-ই-ইমতিয়াজ’ পুরস্কার পাচ্ছেন মোট ৬০ জন। তাদের মধ্যে আবার মাত্র সাতজন রয়েছেন শোবিজ অঙ্গনের। এই সাতজনের একজন শবনম। পদক গ্রহণের জন্য পাকিস্তান যেতে বাংলাদেশ সরকারের অনুমতির প্রয়োজন ছিল। সরকারপ্রধান ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি লাভের পর বুধবার সকাল ১০টার বিমানে পাকিস্তানের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেছেন শবনম।
এ ব্যাপারে শবনম বলেন, ক্যারিয়ারে লম্বা সময় পাকিস্তানে কাজ করেছি। যে কারণে ওরা সর্বোচ্চ পদক দিচ্ছে। আমি গর্বিত। আর পদক গ্রহণে অনুমতি দিচ্ছেন বর্তমান সরকার প্রধান শেখ হাসিনা। আমি তার প্রতি কৃতজ্ঞ। আমি শুনেছি তিনি এই পদক পাওয়ার খবরে খুশিও হয়েছেন। আমি বিশ্বাস করি এই পদক দু’দেশের সিনেমা শিল্পের উন্নয়নে যোগসূত্র তৈরি করবে। আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টদের। তাদের আন্তরিক সহযোগিতা না পেলে জীবনসায়েহ্নে এসে এই পদক গ্রহণে যেতে পারতাম না। একই সঙ্গে পাকিস্তান সরকারকেও ধন্যবাদ।
এরআগে শবনম পাকিস্তানে কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ সর্বোচ্চ ১৩ বার নিগার, তিনটি জাতীয়, পিটিভি এবং লাক্স লাইফটাইম অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন। এছাড়াও ২০১৭ সালে লাহোর সাহিত্য উৎসবে প্রধান অতিথির আসন অলংকৃত করার বিরল গৌরব অর্জন করেন শবনম।
উল্লেখ্য, চলচ্চিত্রে শবনমের আবির্ভাব নির্মাতা এহতেশামের হাত ধরে। শুরুতেই চান্দা, তালাশ, হারানো দিন, নাচের পুতুল সিনেমা দিয়ে অবিভক্ত পাকিস্তানে তুমুল দর্শকপ্রিয়তা পান। পরবর্তী সময়ে নিজেকে আরও মেলে ধরতে পাড়ি জমান তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানে। সেখানে মাথা উঁচু করে নিজেকে মেলে ধরেন। পরবর্তী সময়ে জন্মভূমিতে ফিরে সর্বশেষ ‘আম্মাজান’ সিনেমা দিয়ে ক্যারিয়ারে ইতি টানেন।