আজ ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস

সালেক সুফী

আজ ১৭ এপ্রিল ২০২৪। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের আরো একটি অনন্য মাইল ফলক দিন। ৫৩ বছর আগে এই দিনে কুষ্টিয়ার মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলা আম বাগানে শপথ গ্রহণ করে প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার মাত্র ২২ দিন পরে সরকার গঠন ছিল বিশাল অর্জন। সেই থেকে ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ প্রবাসী সরকার শত চ্যালেঞ্জ উপেক্ষা করে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছে।

সেদিন বাগেরহাটে পবিত্র ষাট গম্বুজ মসজিদের পুকুরপাড়ে বসে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অনুষ্ঠানে ধারাবিবরণী নিজ কানে শুনেছি। আমি তখন পুকুর পাড়ে কুমিরগুলোকে খাবার দিচ্ছিলাম। স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী সহ চার প্রধান নেতাকে কুচক্রী মহল ৩ নভেম্বর ১৯৭৫ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নির্মম ভাবে হত্যা করলেও অনেকেই বেঁচে আছেন।

আমি অগ্রজ এসপি মাহবুব ভাই, বাংলাদেশ সরকারের তৎকালীন কেবিনেট সেক্রেটারি মরহুম নুরুল কাদেরের সহধর্মিনী রোকেয়া কাদেরের কাছ থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিবরণী শুনেছি। প্রবাসী সরকারের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্রের কথাও জানা আছে।  কেন জানি ঐতিহাসিক অনেক ঘটনা ধামা চাপা দেওয়া হয়েছে।

স্বাধীনতার পর প্রক্রিয়াশীল চক্র নানা ষড়যন্ত্র করে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তাজউদ্দীন সাহেবের দুরত্ব সৃষ্টি করে জাতির অপূরণীয় ক্ষতি করে। নতুন প্রজন্মের উচিত গবেষণা করে সঠিক ইতিহাস জাতির সামনে তুলে ধরা। স্বাধীনতা সংগ্রাম চলাকালীন মুজিবনগর সরকার পরিচালনার অনেক মৌলিক তথ্য দেখার সৌভাগ্য আমার হয়েছে।

জানি কিভাবে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের কিছু ঈর্ষান্বিত নেতা কিছু সরকারি আমলাদের সাথে মিলে প্রবাসী সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিল। সেখান থেকেই স্বাধীনতার অব্যবহিত পরে জাসদ সৃষ্টি, গণবাহিনী, বঙ্গবন্ধু হত্যার নীলনকশা সূচনা হয়।

প্রকৃত ইতিহাস অবিকৃত ভাবে তুলে ধরা ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলাম, ড. তৌফিক ই এলাহী চৌধুরী বিবি,  এসপি মাহবুব বিবি সহ অন্যানদের জন্য পবিত্র জাতীয় দায়িত্ব। ‘পলাশী থেকে মুজিবনগর’ গ্রন্থে আংশিক আলোকপাত করা হয়েছে। এটিকে ভিত্তি করে পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস সৃষ্টি অপরিহার্য।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

twenty − 3 =