‘আম কাঁঠালের ছুটি’ খ্যাত মোহাম্মদ নুরুজ্জামান

গোলাম মোর্শেদ সীমান্ত

১৯৭৬ সালের ১৭ নভেম্বর নির্মাতা মোহাম্মদ নূরুজ্জামান জন্মগ্রহণ করেন শীতলক্ষ্যা নদী পাড়ের নারায়ণগঞ্জ জেলায়। শৈশব-কৈশোর কেটেছে নারায়ণগঞ্জ জেলার আনাচে-কানাচে। বাবা শিক্ষক ছিলেন আর মা ছিলেন ব্যাংকার। পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে দ্বিতীয় তিনি। নারায়ণগঞ্জে স্কুলে পড়াকালীন সময়ে নানা সহশিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিতেন তিনি। স্কুলে কুরআন তেলোয়াত থেকে শুরু করে নাটকে অভিনয় সবকিছুই করতেন। তাদের মহল্লায় একটি গানের স্কুল ছিল। সেখান থেকে প্রতিবছর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হতো। বন্ধুরা সবাই মিলে পারফর্ম করতেন সেই আয়োজনে।

ছোটবেলা থেকেই সবকিছুতে আগ্রহ ছিল মোহাম্মদ নূরুজ্জামানের। ১৯৯০ সালে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হোন মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজে। উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করেন এখান থেকে। ক্যাডেট কলেজে নানা ধরনের ম্যাগাজিন প্রকাশিত হতো। প্রায় সব প্রকাশনায় তার লেখা থাকতো। ক্যাডেট কলেজে পড়াকালীন সময়েই সত্যজিৎ রায়ের সব সিনেমা দেখা হয়ে যায়। অবশ্য তখন হলিউডের ছবি দেখা হয়নি। তিনি জানান, প্রতি সপ্তাহে স্টেজে পারফর্ম করতে হতো। ক্যাডেট কলেজে পড়াকালীন সময়ে বিরাট পরিবর্তন আসে তার জীবনে।

১৯৯২ সালের শেষের দিকে গানের প্রতি আগ্রহ জন্মায় মোহাম্মদ নূরুজ্জামানের। ৫-৬ জন মিলে একটি গানের দল তৈরি করেন। ছোট ছোট অনুষ্ঠানে পারফর্ম করতেন তারা। সোলস তারকা পার্থ বড়ুয়ার কাছ থেকে ১৯৯৪ সালের দিকে গিটার বাজানো শেখা শুরু করেন তিনি। একদিন পার্থ বড়ুয়া তাকে বলেন, তুই আগে পড়াশোনা শেষ কর। পড়াশোনা শেষ হওয়ার পর গান করার অনেক সুযোগ আছে।

১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে আর্কিটেকচার বিষয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস শুরু হওয়ার আগে একদিন আচমকা ফটো এক্সিবিশনে ঢুকে যান তিনি। তখন তিনি জানতেনও না ফটোর আবার এক্সিবিশন হয়। বিখ্যাত আলোকচিত্রী শহিদুল আলম এক্সিবিশনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্যে বলেছিলেন, ঘাসের ওপর যে আলোর খেলা হয় তা ক্যামেরা হাতে নেওয়ার আগে বুঝতাম না। কথাটা ভীষণ ট্রিগার করে মোহাম্মদ নূরুজ্জামানকে। তিনি বুঝতে পারেন ক্যামেরা হাতে দুনিয়াটা অন্য রকম লাগবে নিশ্চয়ই। পরে জানতে পারেন, এক্সিবিশনে যিনি প্রথম পুরস্কার পেয়েছেন তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলার। নূরুজ্জামান তার সঙ্গে কথা বলেন। সে আলোকচিত্রীর নাম হাবিবুল বাহার চৌধুরী। মোহাম্মদ নূরুজ্জামান নিজের আগ্রহের কথা জানান তাকে। তিনি যোগাযোগ করতে বলেন তার সঙ্গে।

দিন গড়াতে থাকে। তখন মাথায় পোকা ঢুকে ক্যামেরা কিনতে হবে। ক্যামেরা কেনার জন্য টিউশনি শুরু করেন। কয়েক মাস পড়ানোর পর জমানো টাকা নিয়ে তিনি হাবিবুল বাহার চৌধুরীর কাছে যান। হাবিবুল বাহার তাকে একটি ক্যামেরা হাতে তুলে দেন আর একটি শর্ত দেন। তিনি বললেন, পাঁচ বছরে প্রতিদিন বুয়েটের একটা ছবি তুলতে হবে তোমার। পাঁচ বছরে একটা ভার্সিটি কতটা পরিবর্তন হয়, তা পর্যবেক্ষণ করবো আমরা। তারপর একটা এক্সিবিশন করবো সেরা ছবিগুলো নিয়ে। টানা দেড় বছর প্রতিদিন মোহাম্মদ নূরুজ্জামান ছবি তুলেন। বুয়েটের সবার কাছে পরিচিত পান ফটোগ্রাফার হিসেবে। বুয়েটের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ক্যামেরা গলায় ঝুলিয়ে ছবি তুলতেন। যার বদৌলতে ছোটোখাটো ইভেন্টে ফটোগ্রাফার হিসেবে কাজ করা হয়েছে। একাডেমিক পড়াশোনা নিয়ে একপর্যায়ে ব্যস্ততা বাড়তে থাকলে নিয়মিত ছবি তোলা হয়নি।

নব্বই দশকের শেষের দিকে বুয়েটে যারা সিএসই নিয়ে পড়াশোনা করতো তাদের কাছেই শুধু কম্পিউটার থাকতো। ১৯৯৮ সালের দিকে সরকার কম্পিউটারের ওপর ট্যাক্স তুলে দেয়। ফলে প্রায় সবার ডেস্কে চলে আসে কম্পিউটার। বুয়েটের হলে এক রুমে পাঁচজন থাকতেন একসঙ্গে। সকলেই কম্পিউটার কিনে ফেলেছে। তখন কম্পিউটারে প্রচুর সিনেমা দেখা শুরু হয়। ঢাকার নয়া পল্টনে ভিসিডির দোকান ছিল। সেখান থেকে ভিসিডি কিনে হলিউডের সিনেমা দেখা শুরু। সে সময়ে প্রতিদিন ২টা-৩টা করে সিনেমা দেখতে থাকেন নূরুজ্জামান।

১৯৯৮ সালে বাজারে আসে প্রথম আলো। পত্রিকায় বিজ্ঞাপন আসলো ‘আমার দেখা সেরা চলচ্চিত্র’ শিরোনামে একটা লেখা দিতে হবে। সেরা ১০ জনকে তারা ৩ দিন ব্যাপী ফিল্ম অ্যাপ্রিসিয়েশন বিষয়ক একটি কোর্স করানোর সুযোগ করে দিবে। লেখা জমা দেওয়ার পর সারাদেশ থেকে সেরা দশ জনের একজন হয়ে যান মোহাম্মদ নূরুজ্জামান। ৩ দিনের কোর্স করার সুযোগ পান। কোর্সের মডারেটর ছিলেন গুণী পরিচালক তানভীর মোকাম্মেল। কোর্সটি করার মুহূর্তে তিনি বুঝতে পারেন, ফিল্ম আসলে সিরিয়াস কিছু। কোর্সের শেষের দিন একটি পরীক্ষা ছিল বুয়েটে। তিনি এতোটা আকৃষ্ট হয়ে যান কোর্স করার প্রথম দুই দিনে তিনি সম্পূর্ণ করার জন্য যে পরীক্ষা ছিল সেটাও তিনি বাদ দেন।

তিন দিনের ওয়ার্কশপ করার পর সিনেমা দেখার প্যাটার্ন চেঞ্জ হয়ে গেলো নূরুজ্জামানের। ফিল্মের বই পড়া শুরু করলেন তিনি। সারাদেশে ফিল্ম সোসাইটির আয়োজন সম্পর্কে জানার সুযোগ হয়। লেখালেখির অভিজ্ঞতা ছিল আগে থেকেই। তারপর ফিল্মের প্রতি আগ্রহ জন্মাতে শুরু করে। দুটির সংমিশ্রণে একটি সিনেমা বানানোর পরিকল্পনা করেন মোহাম্মদ নূরুজ্জামান। ১৯৯৯ সালের শেষের দিকে পরীক্ষার পর বিরতি পান তিনি। তখন ‘বৃষ্টির প্রজাপতি’ নামে একটি সিনেমা বানানোর জন্য স্টোরিলাইন লিখে ফেলেন। এক বন্ধুর মামার ক্যামেরা ছিল। সেটা দিয়ে শুটিং শুরু করেন। সেসময় এক কোচিং সেন্টারে পড়াতেন তিনি। সেখানকার বাচ্চাদের মেইন ক্যারেক্টারে অভিনয় করান আর সঙ্গে থিয়েটারের পরিচিত মানুষজন। যদিও সিনেমার কাজ নানা কারণে সম্পূর্ণ করা হয়নি। কিন্তু তিনি কাজ করতে করতে শিখেছেন সিনেমার প্রায় প্রতিটি টেকনিক্যাল বিষয়। ফিল্ম নিয়ে পড়াশোনা চলমান থেকেছে। প্রচুর ওয়ার্কশপ করা হয়েছে ফিল্ম বিষয়ে।

২০১০ সালে ঢাকা আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে একটি ওয়ার্কশপ হয়। সেখান থেকেই পাঁচ জনের একটি টিম তৈরি করেন মোহাম্মদ নূরুজ্জামান। টিম মেম্বারদের একজন ছিলেন ‘আদিম’ সিনেমার নির্মাতা যুবরাজ শামীম। বাকি সদস্যদের আগ্রহ দিনে দিনে কমতে থাকলেও তাদের দুজনের আগ্রহ দ্বিগুণ হতে থাকে। যুবরাজ শামীম ও মোহাম্মদ নূরুজ্জামানের একসাথে পথচলার বয়স এক যুগের ওপরে। ‘জংশন’ সিনেমা বানানোর পর একটি ফেস্টিভ্যালে জমা দিয়েছিলেন তারা, যা শর্ট লিস্টে আসে। অ্যাওয়ার্ডও পেয়ে যায় সিনেমাটি। রাশিয়ান কালচারাল সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয় ফিল্ম ফেস্টিভ্যালটি। ২০১২ সালে ঢাকা আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে একটা ওয়ার্কশপ আয়োজন করা হয় তাদের নির্মিত ‘জংশন’ সিনেমাকে নিয়ে। যা ছিল তাদের দলের জন্য বেশ প্রাপ্তির। তখন ইন্টারন্যাশনাল ফিল্মমেকারদের সাথে পরিচয় হয় তাদের। ‘যাত্রা’ শিরোনামের একটি সিনেমা নির্মাণ করেন তিনি যেখানে মাঝ নদীতে পূর্ণিমা রাতের গল্প বলেছেন। ‘পুতুল’ নামের একটি সিনেমা নির্মাণ করেন যুবরাজ শামীম সেখানে কাজ করেছেন একসঙ্গে। যুবরাজ শামীম নির্মিত ‘আদিম’ সিনেমার এক্সিকিউটিভ প্রডিউসার ছিলেন মোহাম্মদ নূরুজ্জামান।

২০১৫ সালের দিকে মোহাম্মদ নূরুজ্জামানের মনে হয় তিনি সম্পূর্ণ একটি সিনেমা নির্মাণ করতে পারবেন। নিজের ছোট বাচ্চাকে ঘুমানোর সময় তিনি গল্প বলতেন। একসময় খেয়াল করলেন গল্প ফুরিয়ে যাচ্ছে। একসময় তিনি তার নিজের ছোটবেলার গল্প বলতে শুরু করলেন। কিন্তু তিনি খেয়াল করলেন, তার বাচ্চা তা বুঝতে পারছে না। তখন তিনি ভাবলেন, নিজের ছোটবেলার সবগুলো বিষয়কে যদি একটা সিনেমায় তুলে ধরা যায়। শরীফ উদ্দিন সবুজ ছিলেন তার ছোটবেলার বন্ধু। তিনি লেখালেখি করেন। তার লেখা প্রথম বই পড়তে গিয়ে তিনি দেখলেন অনেক বানান ভুল। তখন তিনি বলেন, নতুন বই লিখলে তাকে প্রুফ রিড করতে দিতে। শরীফ উদ্দিন সবুজ ‘মইনা ভাই বল্লা রাশি’ নামের একটি বই লিখলেন। প্রুফ রিড করতে গিয়ে আবিষ্কার করলেন তিনি যে গল্পটা সিনেমায় তুলে ধরতে চান অনেকটাই বইতে বিরাজমান। তিনি স্থির করলেন এই বইয়ের গল্প অবলম্বনে সিনেমা নির্মাণ করবেন। নিজেই গল্প থেকে স্ক্রিপ্ট সাজালেন। তিনি জানালেন, এলাকার মানুষের দিয়ে চরিত্রায়ণ করা গেলে আঞ্চলিক গল্প বলতে গেলে অনেক সময়ই তা বেশ উপকারে আসে। সেজন্য যেখানে শুটিং হয়েছে সেখান থেকেই চরিত্র সিলেকশন করেন।

সিনেমা নির্মাণের গল্প জানতে চাইলে নির্মাতা মোহাম্মদ নুরুজ্জামান বলেন, ২০১৫ সালের গ্রীষ্মকালে আমরা সিনেমার শুটিং শুরু করি। গল্পটা আউটডোরের গল্প। গাজীপুরের হারবাইন এলাকায় সিনেমার শুটিং হয়। ৩ দিন শুটিং করার পর শুরু হয় বৃষ্টি। ১৫ দিন টানা বৃষ্টি হয়। তারপর আবার শুটিং করতে গিয়ে দেখলাম, এলাকা পুরো বদলে হয়ে গেছে বৃষ্টিতে। ২০১৬ সালের গ্রীষ্মকালে আবার শুটিং করতে গেলাম। কিন্তু মেইন ক্যারেক্টার যে ছিল তার লুক সম্পূর্ণ চেঞ্জ হয়ে গেছে। তখন নতুন ক্যারেক্টার খুঁজতে থাকলাম। ত্রিশ-চল্লিশ ভাগ শুটিং করার পর আবার বৃষ্টি। আমাদের গ্রীষ্মকালে যে শুটগুলো ছিল তা শেষ হয়ে যায়। ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে আবার তৃতীয় ধাপে শুটিং শুরু করি। ফেব্রুয়ারির মধ্যে শুটিং শেষ হয়।

২০১৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে এসে প্রথম রাফকাট দাঁড়িয়ে গেলো। নানা ধরনের টেকনিক্যাল দিক ছিল, যা সম্পূর্ণ করতে সময় লাগে। ২০১৮ সালের মধ্যে সব কাজ শেষ হলো। কাজ করতে গিয়ে দেখলাম, সম্পূর্ণ সাউন্ড ট্রেক মুছে গেছে। নতুন ভয়েস ওভার আর্টিস্ট নিয়ে আবার নতুন করে ডাবিং করতে হয়। কালার গ্রেডিং, সাউন্ড নিয়ে কাজ শুরু করি। মিউজিক থিওরি ছিল আগে থেকেই, সেজন্য সাউন্ড নিয়ে ডিটেইল কাজ করা হলো। কালার গ্রেডিং চারটা ভার্সন করা হয় সিনেমার জন্য। সবকিছু মিলিয়ে আমার কাছে ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট ভালো লাগে, সেজন্য এটাই সিলেক্ট করি।

২০১৯ সালে ‘মাস্তুল’ সিনেমার কাজ শুরু হয়। ২০২০ সালের জুন-জুলাই মাসে মুক্তি দেওয়ার ইচ্ছা ছিল। করোনার জন্য আর তা হয়ে ওঠেনি। ২০২২ সালের অক্টোবরে সেন্সরের জন্য জমা দেওয়া হয়। প্রথম সিনেমা সেজন্য চার মাস সময় লেগে যায়। সে সময়ে আমি বিভিন্ন ফেস্টিভ্যালে সিনেমাটি পাঠানো শুরু করলাম। প্রথমে ইন্দোনেশিয়াতে একটা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে গেলো সিনেমাটি। তারপর রাশিয়ার একটি ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে সিলেক্ট হলো, তখন ভীষণ অবাক হয়েছি। ফেস্টিভ্যালে সব সিনেমা একটা স্ক্রিনিং আর শুধু একটা সিনেমা দুটো স্ক্রিনিং হয় সেটি ছিল ‘আম কাঁঠালের ছুটি’। স্পেনে, আর্জেন্টিনা, রাশিয়ার ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে সিনেমাটি প্রদর্শিত হয়। ‘আম কাঁঠালের ছুটি’ চলচ্চিত্রটি ২০২২ সালের ২৬ মে মাসে রাশিয়ার চেবাক্সারি আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভালে স্পেশাল জুরি অ্যাওয়ার্ড পায়। শুরুতে সিনেমার নাম ছিল ‘ঝোলা ভাতি’। নামটা যাতে দর্শকদের নস্টালজিক করে সেজন্য পোস্ট প্রোডাকশনে সিনেমার নাম দেওয়া হয় ‘আম কাঁঠালের ছুটি’। যার ইংরেজি নাম ‘সামার হলিডে’। এটি মোহাম্মদ নূরুজ্জামান পরিচালিত প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য ছবি।

২০১৯ সালে নারায়ণগঞ্জের চাষাড়া এলাকায় নির্মাণ করেন ‘সিনেস্কোপ’ নামে একটি সিনেমা হল। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে সবাই সিনেমা দেখার সুযোগ পায়। বর্তমানে দেশি-বিদেশি নানা ধরনের সিনেমা প্রদর্শিত হচ্ছে এখানে। ব্যবসার জন্য নয়, নিজের শৈশবের একটি স্বপ্ন ছিল সিনেমা হল বানাবেন; সেই স্বপ্ন সত্যি করেছেন তিনি। নির্মাতা মোহাম্মদ নুরুজ্জামান নারায়ণগঞ্জের অতীত-বর্তমান নিয়ে একটি ডকু ফিকশন নির্মাণ করেছেন যা মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে।

অল্প কথায় ‘আম কাঁঠালের ছুটি’ সিনেমা

আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে শিশুতোষ সিনেমা নেই বললেই চলে। সম্পূর্ণ শিশুতোষ সিনেমা হিসেবে ‘আম কাঁঠালের ছুটি’ পরিপূর্ণ নির্মাণ। আপনাকে অতীতে নিয়ে যেতে সক্ষম সিনেমার গল্প ও নির্মাণ। সিনেমায় পরিচিত কোনো মুখ নেই। তবুও সিনেমাটি শেষ পর্যন্ত আপনাকে মুগ্ধ করবে। আট বছর বয়সী একটি শহুরে শিশুকে নিয়ে ছবির গল্প আবর্তিত হয়েছে। গ্রীষ্মের ছুটিতে গ্রামে বেড়াতে এসে নতুন এক জগৎ আবিষ্কার করে, খুঁজে পায় বন্ধুত্ব আর রোমাঞ্চের স্বাদ। সাদাকালো ফ্রেমে পুরোটা সময় চমৎকার একটি গল্প বলে গেছেন নির্মাতা মোহাম্মদ নুরুজ্জামান। গল্পের গাঁথুনি আপনাকে মনোমুগ্ধকর অনুভূতি দিবে। বাংলাদেশের শিশুতোষ সিনেমা হিসেবে অসামান্য সৃষ্টি করেছেন সম্পূর্ণ টিম মিলে। ৯৭ মিনিট দৈর্ঘ্যরে সিনেমাটি আপনাকে মনের অজান্তেই ভিন্ন এক জগৎ থেকে ঘুরিয়ে নিয়ে আসবে। ম্যাক সাব্বিরকে সঙ্গে নিয়ে ছবিটির সিনেমাটোগ্রাফিতে যুক্ত ছিলেন নিজে। প্রযোজনা, পরিচালনা, চিত্রনাট্য রচনার পাশাপাশি সাউন্ড ডিজাইন করেছেন নির্মাতা মোহাম্মদ নূরুজ্জামান। একটা সৎ নির্মাণ ছিল ‘আম কাঁঠালের ছুটি’ তা অস্বীকার করার বিন্দুমাত্র সুযোগ নেই।

লেখাটির পিডিএফ দেখতে চাইলে ক্লিক করুন: অন্তরালে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

sixteen − 10 =