সালেক সুফী: ক্রিকেটের দুই সনাতন প্রতিদ্বন্দীর এশেজ থেকে আকর্ষণীয় কিছু নেই. ২০২৩ এশেজের প্রথম টেস্ট প্রতিদ্বন্দ্বিতার আগুন ঝরিয়ে এইমাত্র শেষ হলো বার্মিংহামের এজবাস্টনে। ব্যাট বলের তীব্র লড়াই শেষে অস্ট্রেলিয়া জিতেছে ২ উইকেটে। টেস্ট ক্রিকেটের প্রকৃত মেজাজে খেলা টেস্ট ম্যাচটি পঞ্চম দিনের শেষ পর্যায়ে এসে যেভাবে রূপ ,রস, বর্ণ ,সুবাস উপহার দিয়েছে সেটি হয়তো বর্ণনার ভাষা ছিল ক্রিকেট কোকিল নেভিল কার্ডাস , শংকরী প্রসাদ মজুমদার বা আমাদের বদরুল হুদা চৌধুরীর। ১০৭/৩ অবস্থায় শেষ দিনে খেলতে এসে অস্ট্রেলিয়ার জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৭ উইকেট হাতে নিয়ে ১৭৪ রান. চতুর্থ দিনের শেষ দিকে স্টুয়ার্ট ব্রড লাৰুশং এবং স্মিথের উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচের পাল্লা ইংল্যান্ডের দিকে ঝুকিয়ে দিয়েছিলো। অস্ট্রেলিয়ার ভরসা ছিল এই টেস্টে দারুন ভাবে নিজেকে মেলে ধরা উসমান খাজা। নৈশ প্রহরী স্কট বোলান্ড শুরুতেই ফিরে যাবার পর একে একে ট্রাভিস হেড, ক্যামেরুন গ্রীন ফিরে গেলে সব দায়িত্ব এসে পরে খাজার উপর. দলের রান যখন ২০৯ তখন খাজার উইকেট ইংলিশ অধিনায়ক বেন স্টোকস তুলে নিলে ইংল্যান্ড জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে. দেয়ালে পিঠ রেখে ক্যাঙ্গারু অধিনায়ক পাট কামিন্স সাহসী যোদ্ধা আলেক্স কারীকে নিয়ে লড়াই শুরু করে. ম্যাচের এই পর্যায়ে জো ৰূট স্পিন দিয়ে ক্যারিকে ফিরিয়ে দিলে ইংল্যান্ড স্বপ্ন দেখতে শুরু করে. কিন্তু সবাই জানে হার না মানা অস্ট্রেলিয়ান মানসিকতা নিয়ে হারার আগে হারে না ক্যাঙ্গারু। অবিচ্ছিন্ন ৮ ম উইকেটে তীব্র চাপের মুখে কামিন্স যেভাবে যোদ্ধা লায়ন্সকে নিয়ে ৫৭ রান যোগ করে ২ উইকেটে টেস্ট জিতে নেয় সেটি নিঃসন্দেহে জগৎ জোড়া ক্রিকেট অনুরাগীরা উপভোগ করেছে। এমনি খেলা টেস্ট ক্রিকেটকে অন্য সব ফরমেট থেকে এগিয়ে রেখেছে।
অনেকে হয়তো বলবেন প্রথম দিনের শেষ প্রহরে ৩৯৩/৮ ইনিংস ঘোষণা সঠিক হয় নি. দেখুন এই ইনিংস ঘোষণার ফলেই অস্ট্রেলিয়াকে ৩৮৬ রানে বেঁধে ফেলে ম্যাচটি প্রতিদ্বন্দ্বিতা মুখর রাখা হয়েছে। অবশ্য দ্বিতীয় ইনিংসে তুখোড় বোলিং করে কামিন্স ,লায়ন্স ইংল্যান্ডকে ২৭৩ রানে অল আউট করে জয়ের সুযোগ সৃষ্টি করে. দেখুন আজ চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে সেই কামিন্স ,লায়ন্স জুটি ম্যাচ জয় করেছে। এশেজ যুদ্ধে প্রথম ম্যাচ জয় বিজয়ী দলকে এগিয়ে রাখে। তবে এই ম্যাচে সেয়ানে সেয়ানে লড়াই হয়েছে। ক্রিকেট জিতেছে। এমন লড়াই কিন্তু কিছু দিন আগে খেলা বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে কাঙ্খিত ছিল. ভারতের ব্যার্থতায় সেটি ছিল একপেশে। ব্যাট বলের এমন শ্বাসরোধ করা লড়াই টেস্ট ক্রিকেটের সঞ্জীবনী সুধা। এশেজ সিরিজের সকাল দেখে মনে হচ্ছে জম জমাট লড়াই হবে বাকি ম্যাচ গুলোতেও।