তরুণরা সোশ্যাল মিডিয়ায় করছে কি?

গোলাম মোর্শেদ সীমান্ত : সোশ্যাল মিডিয়া তে দুই ধরনের চিত্র দেখা যায় তরুণদের মাঝে একটা ভালো আরেকটা মন্দ? আমরা আজকে চেষ্টা করবো নিখুঁতভাবে জানার তরুণরা সোশ্যাল মিডিয়াটা কে কিভাবে কাজে লাগাচ্ছে সে বিষয়ে। শুধু চ্যাট আর স্ক্রলিং করে সময় নষ্ট করছে না অসংখ্য তরুণ। কেউবা আঁকছে ছবি, কেউবা গাইছে গান, কেউ হাতে রং তুলি নিয়ে একে দেখাচ্ছে ভিন্ন রকমের দৃশ্য, অনেকে সাহস করে শুরু করেছে।
ছোট ব্যবসা, নানান বিষয়ে লেখালেখি করছে পুরো উদ্যামে। সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে ঘরে বসেই যেকোনো প্রান্ত থেকে তরুণরা করছে উপার্জন। এমনই বেশ কিছু ঘটনা তুলে ধরছে গোলাম মোর্শেদ সীমান্ত।
ফেসবুক স্ক্রল করতে করতে হঠাৎ চোখ আটকে গেলো একটা আর্টের দিকে। মেয়ের নাম ইবদিতা ইদ্রিস। বেশ কয়েক বছর যাবত করছে ডিজিটাল আর্ট। নিজের আঁকাআকিগুলো পোস্ট করে নিজের ফেসবুক পেইজে? একদিন হঠাৎ করেই এক লেখক মেসেঞ্জারে জানায় একটা কমিকস বইয়ের সবগুলো আঁকা আঁকতে হবে ইবদিতার। যে কাজটা আসছে এবারের বইমেলায়। আঁকাআকি করে ইতিমধ্যে উপার্জন চার অক্ষরে টাকা।
আমার এক বন্ধু আছে সে প্রিয় শিল্পীদের গান গেয়ে আপলোড করে নিজের ফেসবুক পেইজে তাদের ভাষায় যাকে বলে কভার করা। কিছু গান তো দেখছে প্রায় লক্ষাধিক গান। গানের শুরুটা হয় কিন্তু নিজের ঘরে বসেই একটা গিটার হাতে শখের বসে। আস্তে আস্তে গান গাইতে গাইতে ডাক পায় এক নির্মাতার কাছ থেকে নাটকে গান করার জন্য। এছাড়া পড়াশোনার চাপ কম থাকলেই টুকটাক কনসার্ট করে সে। উপার্জন সম্পর্কে জানতে চাইলে খানিকটা হেসে জানায় এখনো লাখের ঘরে যাইনি হাজারের মধ্যেই আছি যেদিন যাবো সেদিন জানাবো।
আমার মোশাররফ নামের এক বন্ধু লেখালেখি করছে তিনবছরের বেশি সময় যাবত। জাতীয় পত্রিকাগুলোতে বলা যায় সপ্তাহে দু-একটা লেখা থাকবেই। এছাড়া পার্টটাইম জব করছে একটা বেসরকারি পত্রিকায়। বেতন প্রায় দশের কাছাকাছি। এছাড়া নিজের লেখা রয়েছে বই। সামনে লিখছে বই। তার কাছে জানতে চাইলাম সোশ্যাল মিডিয়া তোমার লেখালেখি কে কিভাবে সাহায্য করছে; আমি মূলত প্রথমে খানিকটা না বুঝি শুনেই লেখালেখি অঙ্গনে প্রবেশ করে ফেলি তারপর আস্তে আস্তে এই অঙ্গনের মানুষদের সঙ্গে পরিচিত হই। বাংলাদেশের সকল গণমাধ্যমের মানুষের সঙ্গে তো দেখা করে পরিচিত হওয়া সম্ভব না! সেজন্য ফেসবুকে এই হয় আমাদের ভার্চুয়াল পরিচয়। এখন বলা যায় ফেসবুকের মাধ্যমেই অনেক পত্রিকার এসাইনমেন্ট নিয়ে নিচ্ছি। এছাড়া সকলের সাথে কানেক্টে থাকার ফলে সিনিয়রদের কাজ অতি সহজেই দেখতে পারছি ঘরে বসে।
ফাহিমের বেড়ে ওঠা বগুড়া শহরে। বন্ধুরা মিলে বগুড়া অঞ্চলে শুরু করেছে এক অনলাইনে গিফট শপের ব্যবসা নাম তার গিফটি। হরেকরকমের গিফট দিয়ে অনলাইনেই সাজিয়েছে একটা দোকান। সুন্দর সুন্দর ডিজাইনের দ্বারা লিখে দিয়েছে গিফট সামগ্রীর দাম। ইতিমধ্যে বগুড়া শহরে বসে সারা বাংলাদেশে ছয়মাসে পেয়েছে ৫০০ ওর বেশি অর্ডার। টাকার হিসেবে প্রায় দুই লক্ষাধিক টাকার পণ্য বিক্রি করেছে বগুড়ার একদল তরুণ।
ফেনীতে থাকে ওমর। কাজ করছে সমাজের মানুষের জন্য। প্রায় সময়ই দেখতাম আইডিতে পোস্ট করছে এক ব্যাগ রক্ত লাগবে আবার কিছুক্ষণ পর পোস্ট করছে আলহামদুলিল্লাহ রক্ত পাওয়া গিয়েছে। এমন পোস্ট দেখে হরহামেশাই প্রশ্ন জাগতো কিভাবে তা সম্ভব। আসলেই সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যানে বিগত তিনবছর সারা বাংলাদেশের ৫০০ ওর বেশি মানুষ কে রক্ত খুঁজে দিয়ে সাহায্য করছে ওমরের সামাজিক সংগঠন পরিবর্তন। তাদের সঙ্গে সারা বাংলাদেশ থেকে কাজ করছে শতাধিক তরুণ।
সোশ্যাল মিডিয়া কে ব্যবহার করতে পারো ভিন্ন ভাবে এমন কিছু আইডিয়া বলছি;
০১। ফেসবুক পোল কে কাজে লাগাতে পারো তোমার কাজে। যেমন তুমি একটা ইভেন্টের জন্য ফটোগ্রাফার খুঁজছো এবং তুমি জানো আইডি তে পরিচিত অনেকে ভালো ছবি তুলে। সকলের নাম তো মনে রাখা অসম্ভবও বটে। সেহেতু একটা পোল তৈরী করে ফেলো ফটোগ্রাফি করছো এবং একটা ইভেন্টে কাজ করতে আগ্রহী। হ্যাঁ এবং না অপশন দিয়ে দাও। যারা হ্যাঁ বললো তাদের কে বিস্তারিত বলে ফেলো সহজেই তোমার কাজের মানুষ গুলো কে খুঁজে পাবে।
০২। আমরা সকলেই ফেসবুক গ্রুপে এড হও, এড হও এই মেসেজের সঙ্গে জড়িত। তবে আমার কাজের তাগিদে নিজের ইচ্ছেতেই গ্রুপে যুক্ত হয়ে থাকি। তবে আমরা প্রায় সময়ই গ্রুপে সকল পোস্ট দেখতে পাইনা। সেজন্য গ্রুপের নোটিফিকেশন অপশনে গিয়ে
All Posts এ ক্লিক করে রাখো। তোমার ছবি তে কে কমেন্ট করলো আর কে রিয়েক্ট করলো এটা জানার পাশাপাশি কি গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট আসলো তা-ও সহজে জানতে পারবে।
০৩। আমাদের অনেকের গান ভীষণ পছন্দ আবার অনেকের কার্টুন দেখতে। আবার অনেকের দেশ-বিদেশের সাম্প্রতিক বিষয়ে জানতে বেশ আগ্রহী। ফেসবুকে See First এটার মাধ্যমে তোমার প্রয়োজনীয় এবং পছন্দের বিষয়গুলো সবার প্রথমে দেখার সুযোগ পাবে। সহজেই তোমার আগ্রহের বিষয়গুলো সবার প্রথমে দেখে ফেলতে পারো।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

twelve − ten =