মরক্কোকে হারিয়ে তৃতীয় হলো ক্রোয়েশিয়া

কাতার বিশ্বকাপে তৃতীয় হয়েছে গতবারের রানার্স-আপ ক্রোয়েশিয়া। শনিবার রাতে বিশ্বকাপের স্থান নির্ধারনী ম্যাচে ক্রোয়েশিয়া ২-১ গোলে হারিয়েছে মরক্কোকে। সবগুলো  গোলই হয়েছে ম্যাচের প্রথমার্ধে । ক্রোয়েশিয়ার পক্ষে গোল দু’টি করেন জোসকো গাভারডিওল ও মিসলাভ ওরসিচ। মরক্কোর পক্ষে একমাত্র গোলটি করেন আচরাফ  ডারি।

এর  আগে ১৯৯৮ আসরে  বিশ্বকাপে তৃতীয় হয়েছিল  ক্রোয়েশিয়া। এবারই  প্রথমবার  বিশ্বকাপের স্থান নির্ধারনী ম্যাচে  খেলার সুযোগ পেয়েছে মরক্কো। চতুর্থ হয়েই বিশ্বকাপ শেষ করতে হলো এবারের আসরে সাড়া জাগানো দল মরক্কোকে। দোহার খালিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে তৃতীয় হওয়ার  লক্ষ্য নিয়ে মুখোমুখি হয় সেমিফাইনালে হেরে যাওয়া ক্রোয়েশিয়া ও মরক্কো। গ্রুপ পর্বে একই গ্রুপে ছিলো এই দু’দল। ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র হয়েছিলো।

এ ম্যাচের শুরু থেকেই মরক্কোকে চাপে রাখে ক্রোয়েশিয়া। সেই সুবাদে ৭ মিনিটেই গোল পেয়ে যায় ক্রোয়েশিয়া। ডি বক্সের সামনে ফ্রি-কিক পায় ক্রোয়েশিয়া। মিডফিল্ডার লুকা মড্রিচের ফ্রি-কিক থেকে হেডে গোলমুখে বল ক্রস করেন স্ট্রাইকার ইভান পেরিসিচ। বাতাসে ভেসে আসা বলে হেডে গোল করেন ডিফেন্ডার জোসকো গাভারডিওল(১-০)। তবে  এই লিড বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি তারা। ২ মিনিট পরই গোল পরিশোধ করে দেয় মরক্কো। ক্রোয়েশিয়ার মত ফ্রি-কিক থেকেই গোল করে তারা।

ডান-প্রান্ত দিয়ে ফ্রি-কিক নেন স্ট্রাইকার হাকিম জিয়েচ। জিয়েচের ফ্রি-কিক ক্লিয়ার করতে গিয়ে পেছনে হেড নেন ক্রোয়েশিয়ার মিডফিল্ডার লোভরো মায়ের। বল চলে যায় ক্রোয়েশিয়ার গোলমুখে। সেখানে ছিলেন মরক্কোর ডিফেন্ডার আচরাফ  ডারি। নিচু হয়ে হেড করে বলকে ক্রোয়েশিয়ার জালে পাঠিয়ে ম্যাচে ১-১ সমতা আনেন ডারি।

১-১ সমতা আসায় আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠা  মরক্কো যেন  ক্রোয়েশিয়ার উপর চাপ বাড়াতে চেষ্টা করে তারা। কিন্তু মধ্যমাঠ দখলে নিয়ে নেয় ক্রোয়েশিয়া। বল দখলে নিয়ে মরক্কোর সীমানায় আক্রমণে চেষ্টা করে তারা। কিন্তু তাদের আক্রমনগুলো মরক্কোর ডিফেন্স ভেদ করতে পারেনি। অবশেষে ৪২ মিনিটে দ্বিতীয় গোলের দেখা পায় ক্রোয়েশিয়া।

আক্রমণের জন্য মরক্কোর বক্সের মধ্যে পাস দিয়ে খেলতে থাকেন ক্রোয়েশিয়ার ফুটবলাররা। এক ফাঁকে  মরক্কো বল দখলে নিলেও  সেটি আয়ত্বে রাখতে পারেনি। বল পেয়ে বাঁ-দিকে আক্রমণভাগের আরেক খেলোয়াড় মিসলাভ ওরসিচকে বল পাস দেন স্ট্রাইকার মার্কো লিভায়া। বক্সের ভেতর বল পেয়েই কোনাকুনি শট নেন ওরসিচ। ওরসিচের শট মরক্কোর গোলরক্ষক ইয়াসিন বুনুর মাথার উপর দিয়ে গিয়ে বারে লেগে জালে প্রবেশ করে (২-১)। এই লিডকে সাথে নিয়েই ম্যাচের প্রথমার্ধ শেষ করে ক্রোয়েশিয়া।

ম্যাচের প্রথমভাগে ৫৯ শতাংশ বল দখলে রেখেছিলো ক্রোয়েশিয়া। আটবার আক্রমন করে গোলমুখে চারবার শট নিতে পারে তারা। মাত্র একবার ক্রোয়েশিয়ার গোলমুখে শট নিতে সক্ষম হয়  মরক্কো। বিরতির পর রক্ষণাত্মক ফুটবল খেলেছে ক্রোয়েশিয়া। আক্রমনের চেষ্টা করেছে মরক্কোও। ম্যাচের ৬৫ মিনিটে ডিফেন্ডার আচরাফ  হাকিমির ক্রস থেকে হেড নেন আরেক ডিফেন্ডার জাওয়াড এল ইয়ামিক। কিন্তু তার হেড ক্রোয়েশিয়ার জাল খুঁজে পায়নি।

৭৫ মিনিটে মধ্যমাঠ থেকে বল পেয়ে ক্রোয়েশিয়ার বক্সের ছয় গজ দূর থেকে শট নেন স্ট্রাইকার ইউসেফ এন-নেসরি। তার শট প্রতিহত হয় ক্রোয়েশিয়ার ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে। ৮৭ মিনিটে গোলের ভালো সুযোগ হাতছাড়া করে ক্রোয়েশিয়া। বক্সের বাইরে থেকে ওরসিচের পাস থেকে বল পেয়েছিলেন মিডফিল্ডার মাতেও কোভাচি। বক্সের ভেতর থেকে কোভাচির মাটি কামড়ানো শট বার ঘেষে বাইরে  চলে যায়।

নির্ধারিত সময় শেষে ইনজুরি টাইমের  ৬মিনিটে ক্রোয়েশিয়ার সীমানায় আক্রমণ করেছে মরক্কো। এরমধ্যে শেষ মিনিটে বাঁ-দিক দিয়ে ডিফেন্ডার ইয়াহিয়া আতিয়াত আল্লাহর ক্রস থেকে ক্রোয়েশিয়ার গোলমুখের সামনে হেড নিয়েছিলেন স্ট্রাইকার ইউসেফ এন-নেসরি। তার হেড  বারের উপর দিয়ে চলে যায়। গোলের ভালো সুযোগ বঞ্চিত হয় মরক্কো। শেষ পর্যন্ত ২-১ ব্যবধানে ম্যাচ জিতে দ্বিতীয়বারের মত বিশ্বকাপের আসরে তৃতীয় হয় ক্রোয়েশিয়া।

বাসস

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

11 + 6 =