বাংলাদেশ ইংরেজি পরীক্ষায় পাস করেনি

সালেক সুফী

বিশ্বকাপে শিরোপাধারী ইংল্যান্ডের সাথে বিশাল ব্যাবধানে হেরে বাংলাদেশ ইংরেজি পরীক্ষায় ফেল করেছে। টস হেরে ব্যাটিং করা ইংল্যান্ডের ডেভিড মালান (১৪০), জো রুট (৮২) এবং জনি বেয়ারস্টো (৫২) উঁচু মার্গের ব্যাটিং দিয়ে ৩৬৪/৯ রানের পাহাড় গড়েছিল। শেষদিকে বাংলাদেশ বোলিং ফিল্ডিং তুখোড় না হলে রান হয়তো ৪০০ পেরুত।  বাংলাদেশ এই রান মোকাবিলায় রিসি টোপলির (৪/৪৩) গতি আর মুভমেন্টের কাছে নাদানের মত পর্যুদস্ত হয়েছে। একমাত্র লিটন দাস (৭৬) আর মুশফিকুর রাহিম (৫১) ছাড়া কেউ দাঁড়াতেই পারেনি। তাতেই ১২৭ রানের বিশাল পরাজয়। বাংলাদেশের পরের দুটি খেলা বর্তমান টেবিলের শীর্ষে থাকা নিউজিলান্ড এবং এবারের টুর্নামেন্টের  হট ফেভারিট ভারত।  দেখা যাক এখনো পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষ না হওয়া বাংলাদেশের ভাগ্যে কি লেখা আছে?

হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালায় আছে বাংলাদেশ টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই। এখানেই প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ ভালো খেলে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে জিতে আবেগী বাংলাদেশী ক্রিকেট অনুরাগীদের প্রত্যাশার পারদ তপ্ত করেছিল। ভেবেছিলো ২০১১  চট্টগ্রাম এবং  ২০১৫ এডিলেড ওভাল স্মৃতি ফিরিয়ে এনে প্রথম ম্যাচে নিউ জিল্যান্ডের সঙ্গে শোচনীয় ভাবে পরাজিত ইংল্যান্ডকে ভড়কে দিবে।  আর তাই ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রমাণিত  একজন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে বিশ্রাম দিয়ে বাড়তি স্পিনার মাহেদী হাসানকে দলে নিয়েছিল। উইকেট বিচারে সঠিক সিদ্ধান্ত। কিন্তু মাহমুদুল্লাকে দলে রেখেও সেটি করার সুযোগ ছিল।

টস জিতলো বাংলাদেশ। ইংল্যান্ড ১-১০ পর্যন্ত তুখোড় ব্যাটসম্যান।  কি ভেবে বোলিং নিলো বাংলাদেশ? এমনিতেই প্রথম ম্যাচে হেরে তেতে ছিল ইংল্যান্ড। সুযোগ পেলেই বিশাল স্কোর গড়ে তুলতে সর্ব শক্তি নিয়োগ করবে জানাই ছিল। যাহোক বাংলাদেশ বোলিং শুরুতে দুই এক ওভার পর থেকেই মালান – বেয়ারস্টো ধুম ধাড়াক্কা ব্যাটিংয়ে খেই হারিয়ে ফেলে।  ১৭.৫ ওভারে প্রথম উইকেট জুটিতে যোগ হয় ১১৫ রান। কিছুটা দুর্ভাগ্য সাথী হয়েছিল বাংলাদেশের। শরিফুলের প্রথম ওভারে একটি বল লেগ স্টাম্পের সামান্য বাইরে পরে মালানের পাড়ে আঘাত করে।  একটু এদিক ওদিক হলে নিশ্চিত এলবি ডাব্লিউ হত মালান। সেই মালান একাই ১০৭ বল খেলে ১৬ টি চার আর ৫ টি ছয়ে সাজানো ১৪০ করে অনেকটা একাই বাংলাদেশকে ম্যাচ থেকে ছুঁড়ে ফেলে। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে মালানকে যোগ্য সাঙ্গ দেয় জো রুট  ৬৮ বলে ৮২ রান করে।  বাংলাদেশ মালান এবং রুটকে ফেরানোর পর দারুন বোলিং আর তুখোড় ফিল্ডিং করে ম্যাচে ফিরে।  কিন্তু তখন অনেক দেরি হয়ে গাছে। ৩৬৪/৯ অবশ্যই বাংলাদেশের ধরা ছোয়ার বাইরে চলে যায়।

জবাবে খেলতে নেমে শুরুতেই কাল ইংল্যান্ডের দ্রুত গতির নবীন পেসার রিসি টোপলি ঝড়ে পরে পথ হারায় বাংলাদেশ।  জুনিয়র তামিম (০), শান্ত (০), সাকিব ( ১), মেহেদী মেরাজ (৮) কি থাকে বাংলাদেশ বাটিংয়ের। তবু সান্তনা ফর্মে ফিরেছে লিটন দাস। একপ্রান্তে ধ্বংস যোগ্য অন্যদিকে লিটনের (৭৬) সাবলির ব্যাটিং দেখে মনে হয়েছে যেন ভিন্ন গ্রহে খেলেছে লিটন। একমাত্র অভিজ্ঞ মুশফিক (৫১) ছাড়া আর কেউ দাঁড়াতেই পারে নি জয়ের জন্য মরিয়া হয়ে থাকা ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশ ৪৮.২ ওভারে অল আউট হওয়ার আগে করতে পেরেছে ২২৭।  ব্যাবধান বিশাল ১২৭ রানের।

ভেবে দেখুন কাল কি বাংলাদেশ সূচনায় তামিম ইকবাল আর শেষ দিকে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে মিস করেনি? নড়বড়ে টপ অর্ডার নিয়ে কি করবে বাংলাদেশ নিউ জিল্যান্ড, ভারত, অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে? কাল কি টস জিতে ব্যাটিং করে ২৬০-২৭০ করে বাংলাদেশ ইংল্যান্ডকে চ্যালেঞ্জ করতে পারতো না?

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

nineteen − 3 =