‘আমি তো জাতীয় বাবা হয়ে গেছি’

মঞ্চ ও টেলিভিশন নাটকের দাপুটে অভিনয়শিল্পী তারিক আনাম খান চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেন। চলচ্চিত্রে অভিনয় তাঁকে এনে দিয়েছে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও। শেষ ‘মৃধা বনাম মৃধা’ চলচ্চিত্রে ‘বাবা’ চরিত্রে অভিনয় করে প্রশংসিত হয়েছেন তিনি। চলচ্চিত্রে অভিনয়ের ধারাবাহিকতায় এবার এই অভিনয়শিল্পী যুক্ত হলেন ‘রাজকুমার’ চলচ্চিত্রে। এরই মধ্যে পাবনায় ছবিটির শুটিংয়ে অংশ নিয়েছেন তিনি।

‘রাজকুমার’ ছবির পরিচালক হিমেল আশরাফ। ছবিতে তারিক আনাম খান অভিনয় করেছেন শাকিব খানের বাবার চরিত্রে। নিজের চরিত্র সম্পর্কে তারিক আনাম বলেন, ‘পুরো ছবিতে আমার উপস্থিতি যদিও কম, কিন্তু চরিত্রটির অবস্থান এমন একটা জায়গায়, যেটা খুবই শক্ত; এই চরিত্রের একটা শক্তিশালী বার্তাও আছে। যে কারণে ছবিটিতে অভিনয় করতে রাজি হওয়া। সাধারণত শাকিব খানের ছবি শাকিবময়ই হয়।

ছবিতে ওর প্রভাবটাই থাকে সবচেয়ে বেশি। সেই হিসেবেও যদি বলি, এই ছবিতে আমার চরিত্রের ব্যাপ্তি হয়তো পনেরো মিনিটের মতো, কিন্তু চরিত্রের গভীরতা, গল্পের সঙ্গে এতটাই সংযুক্ত যে মনে হবে, পুরো ছবিতেই আছি। আমরা যে কয়েক দিন শুটিং করেছি, খুবই ভালো হয়েছে।’

‘রাজকুমার’ প্রসঙ্গে তারিক আনাম আরও বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়েছে যে ছবিটার বাণিজ্যিক মূল্য যেমন আছে, তেমনি আধুনিক জায়গাও আছে। অসাধারণ কিছু বার্তাও আছে। শেষের দিকে ভালো বক্তব্যও আছে। দারুণ কিছু বিষয় আছে, যা নাড়া দেবে।’

ঢাকাই সিনেমায় দীর্ঘদিন ধরে অভিনয় করছেন তারিক আনাম খান। সৈয়দ হাসান ইমামের ‘লাল সবুজের পালা’ চলচ্চিত্র দিয়ে যাত্রা শুরু তাঁর।

পরবর্তীকালে ‘ঘুড্ডি’, ‘সুরুজ মিয়া’, ‘আমার ঘর আমার বেহেস্ত’, ‘ঘেটুপত্র কমলা’, ‘মৃধা বনাম মৃধা’, ‘আবার বসন্ত’সহ বেশ কিছু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। গত কয়েক বছর চলচ্চিত্রে তিনি নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছেন। এ ছাড়া ওটিটিতেও বিভিন্ন বৈচিত্র্যময় চরিত্রে তাঁর কাজ প্রশংসিত হয়েছে। ‘রাজকুমার’ দিয়ে চার বছর পর শাকিব খান ও তারিক আনাম খানকে এক ছবিতে দেখা যাবে। শেষবার তাঁরা অভিনয় করেন নোলক সিনেমায়।

কথাপ্রসঙ্গে এই গুণী অভিনেতা কৌতুকের সুরে বলেন, ‘এখন তো সব সিনেমায় বাবা চরিত্রেই অভিনয় করছি। আমি তো জাতীয় বাবা হয়ে গেছি। এর থেকে মুক্তি চাই।’ তাঁর মতে, সিনিয়র শিল্পীদের চরিত্র নিয়ে নির্মাতাদের আলাদা করে ভাবা উচিত। যেখানে বলিউডে সিনিয়র শিল্পীদের নিয়ে আলাদা গল্প বলা হয়।

কথায় কথায় শাকিবের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতাও জানান তারিক আনাম খান। এই অভিনয়শিল্পী বলেন, ‘পাবনায় শুটিংয়ের সময় দেখলাম, ওরে বাবারে, শাকিবের কী সাংঘাতিক সব ভক্ত! গ্রামে–গঞ্জে মানুষ আর মানুষ। শুধু একনজর দেখলে, কী যে চিৎকার শুরু করে। শীতের মধ্যে রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করছে। কত দূর–দূরান্ত থেকে ছুটে আসছে। আসলে এটা তো সে এক দিনে অর্জন করেনি। অনেক সংগ্রাম করে এই জায়গায় এসেছে। তার কাজের চিন্তাভাবনাও আমাকে মুগ্ধ করেছে।’

একসঙ্গে কাজ করতে গিয়ে শাকিবের অভিনয়ের দিকটাও ভালোভাবে নজরে এসেছে তারিক আনাম খানের। কথায় কথায় সেই প্রসঙ্গও উঠে আসে। তারিক আনাম খান বলেন, ‘শুটিং সেটের মধ্যে এসে পুরো বিষয় বুঝে নেওয়া একজন অভিনয়শিল্পীর বেশ ভালো একটা দিক। আমি মনে করি, একজন অভিনেতার সবচেয়ে বড় গুণ হলো জিজ্ঞেস করা। সেটা শাকিব অনেক বেশি করে। কোনো দৃশ্য করার আগে জানতে চায় কেন করছি, কেন বসে আছি, এটা কেন, দৃশ্যটা একটু দেখতে চাই, শর্ট ডিভিশন বুঝে নেওয়া—এগুলো শাকিব খুব ভালোভাবে খেয়াল করে। এরপর সে তার মতো ইম্প্রোভাইজও করে।’

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

nineteen + nine =