হাত হারানো শিশুর জন্য ৩০ লাখ টাকা এফডিআর করার নির্দেশ

ওয়ার্কশপের কাজ করতে গিয়ে তিন বছর আগে হাত হারানো শিশু নাঈম হাসান নাহিদের জন্য ওয়ার্কশপ মালিককে ৩০ লাখ টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। তার মধ্যে চলতি বছরের এপ্রিল মাসের মধ্যে ১৫ লাখ এবং ডিসেম্বরের মধ্যে আরও ১৫ লাখ টাকা জমা দিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালত জানিয়েছে, ১০ বছর পর শিশু নাঈম ওই টাকা তুলতে পারবে এবং শিশুটি এইচএসসি পাস না করা পর্যন্ত তাকে প্রতি মাসে সাত হাজার টাকা করে দিতেও বলেছে হাইকোর্ট।

কিশোরগঞ্জের ভৈরবের নূর ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের মালিক ইকবালকে এই আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। হাত হারানোর শিশুটির বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জের আড়াইসিধা গ্রামে। বাবার নাম আনোয়ার হোসেন। বুধবার এ বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন।

আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার অনীক আর হক ও অ্যাডভোকেট বাকির উদ্দিন ভুঁইয়া। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী তামজিদ হাসান। তারা বিনা পয়সায় শিশুটির পক্ষে মামলা পরিচালনা করেছেন। এদিকে ওয়ার্কশপ মালিকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, আইনজীবী আবদুল বারেক। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত।

এর আগে ‘ভৈরবে শিশুশ্রমের করুণ পরিণতি’ শিরোনামে ২০২০ সালের এক নভেম্বর একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন ছাপা হয়। প্রতিবেদন অনুয়ায়ী, তখন নাঈম হাসানের বয়স ১০ বছর। সে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ত।করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর সময়ে আনোয়ার কর্মহীন হয়ে পড়েন। এ সময় সংসারের চাপ সামলাতে নাঈমকে তার মা-বাবা কিশোরগঞ্জের ভৈরবের একটি ওয়ার্কশপে কাজে দেন। এই ওয়ার্কশপে কাজ করতে গিয়েই তার ডান হাতটি মেশিনে ঢুকে যায়। শেষে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কনুই থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয় ডান হাতটি।

প্রকাশিত প্রতিবেদনটি যুক্ত করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে শিশুটির বাবা হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ওই বছরের ২৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রুল দেন।রুলে শিশুটিকে দুই কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। চার সপ্তাহের মধ্যে বিবাদিদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

eight − four =