প্রয়াত ‘গজল সম্রাট’ জগজিৎ সিং ১৯৪১ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ভারতের রাজস্থানে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন একাধারে গায়ক ও কম্পোজার।
এ গুনী গজলশিল্পীর জন্মদিন আজ। তাঁর গানের ভক্তরা বলেন, তিনি গজল সঙ্গীতের জগতে একটি বিপ্লব এনেছিলেন এবং গজলকে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে রেখেছিলেন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা।
শুধু তিনি একা নন, তাঁর স্ত্রী চিত্রা সিং ১৯৭০ ও ৮০’র দশকে গজলের জনপ্রিয় এক সঙ্গীত জুটি ছিলেন। সেসময় জগজিৎ সিংকে “গজল গানের রাজা“ নামে আখ্যায়িত করা হয়েছিল। ভারতের ফিল্মি গানের ধারার বাইরে থেকেও তাঁরা ছিলেন অত্যন্ত জনপ্রিয় শিল্পী।
অর্থ (১৯৮২) ও সাথ সাথ ছবিতে ব্যবহৃত তাঁদের গাওয়া গজলের সংকলন এইচএমভি থেকে প্রকাশিত হয়। এটি ছিল তাঁদের সর্বাধিক বিক্রীত অ্যালবাম। লতা মুঙ্গেশকরের সঙ্গে তিনি প্রকাশ করেন ‘সাজদা’ (১৯৯১) অ্যালবামটি। তিনি পাঞ্জাবি, হিন্দি, উর্দু, বাংলা, গুজরাটি, সিন্ধি ও নেপালি ভাষাতেও গান গেয়েছিলেন।
প্রায় পাঁচ-দশকব্যাপী সঙ্গীতজীবনে তিনি ৮০টি অ্যালবাম প্রকাশ করেন। শুধু নিজের গানের মধ্যে থেমে থাকেন নি তিনি। শাস্ত্রীয় ও লোকশিল্পীদের তিনি নানাভাবে সাহায্য করতেন। মুম্বাইয়ের সেন্ট মেরি স্কুলের লাইব্রেরি নির্মাণ, বোম্বে হাসপাতাল গঠন এবং ক্রাই, সেভ দ্য চিলড্রেন ও আলমা প্রভৃতি সংগঠনের কাজকর্মেও তিনি প্রত্যক্ষভাবে সাহায্য করেছেন।
‘হোঁটো সে ছুলো তুম’, ‘হোশ ওয়ালোকে খাবর কেয়া’, ‘কোই ফারিয়াদ’ কিংবা ‘হে রাম’ এর মতো তার অসংখ্য গজল মানুষের মনে আজো দোলা দেয়।
প্রেমের কবি মির্জা গালিবের কবিতাকে গানের মাধ্যমে জনপ্রিয় করে তোলায় ১৯৯৮ সালে তিনি সাহিত্য একাডেমি পুরস্কার পান। ২০০৩ সালে সংগীত ও সংস্কৃতি জগতে অবদানের জন্য তাঁকে ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ‘পদ্মভূষণ’ দিয়ে সম্মানিত করা হয়।
অভিনেতা অনুপম খের শুধু না, অনলাইনের জনপ্রিয় সার্চিং ইঞ্জিন গুগল তাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে আজকের পেজে তার জীবনের নানা স্মৃতির ছবি প্রকাশ করেছেন। সাথে ঐ ছবিতে তার প্রিয় হারমোনিয়ামও ছিল।
ভারতের জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী জগজিৎ সিং মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণজনিত কারণে ভারতের মুম্বাইয়ের লীলাবতী হাসপাতালে গত ১০ অক্টোবর, ২০১১-তে মুম্বাইয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭০ বছর।