সন্তান চাওয়ায় স্বামীকে ডিভোর্স

নারী পূর্ণতা পায় মাতৃত্বে। আর তাই মা হতে নাকি শত যন্ত্রণা হাসিমুখে স্বীকার করে নেন তারা। জীবনের ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও শুধু মা ডাক শুনতে সন্তান জন্ম দেন। তবে যে গল্পটি এবার বলবো সেটি সম্পূর্ণ বিপরীত। সন্তান চাওয়ায় স্বামীকে ডিভোর্স দিয়েছেন এক স্ত্রী। তিনি অভিনেত্রী সোফিয়া ভারগারা। কলোম্বিয়ান অভিনেত্রী সোফিয়া মার্কিনিদের কাছে জনপ্রিয় মুখ। মার্কিন টিভি সিরিজ ‘মডার্ন ফ্যামিলি’ খ্যাত এই অভিনেত্রী গত বছরের জুলাইতে বিচ্ছেদের খবর দেন। ৫১ বছর বয়সী সোফিয়া কী কারণে ৪৭ বছর বয়সী স্বামী অভিনেতা জো ম্যাঙ্গানিলো’র সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করলেন জানতে উদগ্রীব হয়েছিলেন সবাই। তবে সেসময় কিছু বলেননি সোফিয়া। রহস্যটি ছয় মাস জিইয়ে রেখে মুখ খুলেছেন অভিনেত্রী। জানিয়েছেন সন্তান চাওয়ায় স্বামীকে ডিভোর্স দিয়েছেন তিনি।

সংবাদমাধ্যমকে তার দেওয়া ভাষ্যমতে, ‘আমার বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে কারণ আমার স্বামীর বয়স এখনও কম। সে সন্তান চায়। কিন্তু বৃদ্ধ বয়সে আমি মা হতে চাই না। আমি মনে করি, এখন সন্তান নেওয়ার সময় নয়। এ বয়সে যারা সন্তান নেন, তাদের আমি সম্মান করি। কিন্তু এটি আমার জন্য নয়।’

কিন্তু তাই বলে সোফিয়া মা ডাক শুনতে চান না? প্রশ্ন জাগতে পারে। এর উত্তর, সোফিয়া অনেক আগেই মা ডাক শুনেছেন এবং তার সন্তানেরও বাবা ডাক শোনার বয়স হয়ে গেছে। এই অভিনেত্রী প্রথম বিয়ের পিঁড়িতে বসেন ১৯৯১ সালে। গাঁটছড়া বেঁধেছিলেন অভিনেতা জো গঞ্জালেজের সঙ্গে। তবে বেশিদিন টেকেনি সে ঘর। মাত্র দুই বছরের মাথায় পথ বেঁকে যায় দুজনের। তবে তার আগেই ঘরে আসে এক পুত্র সন্তান। নাম মানোলো গঞ্জালেজ ভারগারা। সে আজ ৩২ বছরের যুবক। সেকারণেই নতুন করে মা ডাক শোনার লোভ আর নেই সোফিয়ার। এখন তিনি দাদি ডাক শুনতে প্রস্তুত।

বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘১৯ বছর বয়সে আমি মা হয়েছি, আমার ছেলের বয়স এখন ৩২ বছর। মা নয়, আমি এখন দাদি হওয়ার জন্য প্রস্তুত। সুতরাং যদি কেউ ভালোবাসতে চায় তবে তাকে তার সন্তান নিয়ে আসতে হবে।’

এখন আর নতুন করে মা হতে চান না উল্লেখ করে সোফিয়া বলেন, ‘বড় একমাত্র সন্তানের সাথেই সময় কাটাতে চাই।’ নিজের পরিকল্পনা জানিয়ে বলেন, ‘আমার ছেলে যখন বাবা হবে, তখন তার সন্তান আমার কাছে নিয়ে আসব। একটা সময় পর ছেলের কাছে তার সন্তানকে ফিরিয়ে দেব। এরপর আমার জীবন চালিয়ে যাব; আমাকে এটাই করতে হবে।’

এদিকে সোফিয়ার এমন কারণ দর্শানোর পর কিইবা বলার থাকে। সেকারণেই হয়তো তার চার বছরের ছোট সদ্য প্রাক্তন আর কিছু বলেননি।

ব্যবসায়ী অপু বিশ্বাস

একটি বছর বিদায়ের দ্বারপ্রান্তে আসতেই আসছে বছর নিয়ে ছক কষা শুরু করে সবাই। সাধারণ অসাধারণ কেউ বাদ যান না। ঢালিউড অভিনেত্রী অপু বিশ্বাসও এর বাইরে নন। ২০২৩-এর শেষে এসে তিনি জানিয়েছিলেন নতুন বছর অভিনয়ের চেয়ে অন্য পেশায় মনোযোগী হবেন। ব্যবসায় নামবেন। কথানুযায়ীই কাজটি  করেছেন। বছরের শুরুতেই খুলে বসেছেন পার্লার ও রেস্টুরেন্ট ব্যবসা। রাজধানীর আফতাব নগর আবাসিক এলাকায় ‘সিগনেচার বাই এবি পার্লার অ্যান্ড বুটিক’ ও ‘এবি ক্যাফে অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট’ নামের রূপসজ্জা ও খাবার দাবারের পসরা সাজিয়েছেন। বিকিকিনি জানুয়ারির ৮ তারিখ থেকে শুরু হলেও ১২ তারিখে এক জমকালো আয়োজনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় পথচলা। এদিকে ব্যবসায়ী হিসেবে পথচলা শুরুর দিন নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু কথা লিখেছেন অপু। তার মতে, মানুষের কাছে আমি একজন নায়িকা, দর্শকের ভালোবাসার একজন অভিনেত্রী। আমি চেয়েছি এর বাইরেও আমার একটা আলাদা পরিচয় গড়ে উঠুক। এখন আমি অভিনয়ের পাশাপাশি সিনেমা প্রযোজনা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছি। এবার শুরু করলাম নতুন ব্যবসা। আমি চাই ব্যবসায়ী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে। আমার সন্তানের কাছেও আমার সেই পরিচয়টা গর্বের হবে বলে আমার বিশ্বাস।

এদিকে নতুন বছর শুধু ব্যবসা নিয়েই ব্যস্ত নন অপু। সিনেমায়ও নিয়মিত। ফেব্রুয়ারিতে মুক্তির অপেক্ষায় দুটি ছবি। ট্র্যাপ ও ছায়াবৃক্ষ। সেসব নিয়েও কাটছে তার ব্যস্ত সময়।

বিশ্বজিতের নিবিড় অপেক্ষা

মারাত্মক সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে প্রায় এক বছর যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট মাইকেল হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন কুমার বিশ্বজিৎ পুত্র নিবিড়। সন্তানের দেখভাল করতে গিয়ে দেশবরেণ্য এ গায়কের ঠিকানা এখন হাসপাতালের বারান্দা। অপেক্ষা নিবিড়ের সুস্থতার জন্য। মুমূর্ষু রোগীর জন্য স্বজনের এই অপেক্ষাটা বড়ই যন্ত্রণাদায়ক। চোখের জল ছাড়া সে যন্ত্রণার আর কোনো ভাষা নেই।

কিন্তু শিল্পীর তো ভালোবাসা বা যন্ত্রণা প্রকাশের আলাদা মাধ্যম আছে। সেটি হলো সুর। বিশ্বজিতও তাই করলেন। নিবিড়ের জন্য অপেক্ষার ছবিটি আঁকলেন সুরে সুরে। গানের মাধ্যমে। সে গানের নাম ‘নিবিড় অপেক্ষা’। বৃষ্টি এখন আর ভালো লাগে না/ কান্নার শব্দ মনে হয়/ মেঘলা আকাশ কেমন যেন/ বেদনার চাদরে ঢেকে রয়/ আমার বুকে কেন বৃষ্টি অঝোরে ঝরে পড়ছে/ তবু সারাক্ষণ, আমার হৃদয় মন/ নিবিড় অপেক্ষা করছে…

এভাবেই আকুতিমাখা কথায় সুর দিয়ে বিশ্বজিৎ জানিয়েছেন তার অপেক্ষার কথা। আর গায়কের যন্ত্রণা নিজের ভেতর লালন করে গানটি লিখেছেন হাসানুজ্জামান মাসুম। সুর ও সংগীত করেছেন কিশোর দাস। এর পেছনে একটি গল্প রয়েছে। সন্তানের দুর্ঘটনার প্রায় আট মাস পর ব্যক্তিগত কাজে দেশে ফিরেছিলেন বিশ্বজিৎ। সেসময় সংগীতশিল্পী কিশোর ও শব্দ প্রকৌশলী আমজাদ হোসেন বাপ্পী গানটি বিশ্বজিৎকে শোনান এবং গাওয়ার অনুরোধ করেন। গানটিতে থাকা একটা আর্তি ও অপেক্ষার বিষয় ছুঁয়ে যায় তাকে। সেকারণেই কণ্ঠে তোলেন এই গান।

সংবাদমাধ্যমকে বিশ্বজিৎ বলেন, শিল্পীর প্রাণ যখন মরে যায়, তখন গান গাওয়াটাই তার জন্য কঠিন হয়ে যায়। আর গত আট মাস একরকম বেঁচে থেকেও বেঁচে না থাকার মতো আছি আমি। এবার ব্যক্তিগত কিছু কাজে যখন দেশে যাই, তখন আমার স্নেহের দুই ছোট ভাই কিশোর ও বাপ্পী এসে ধরলো, গানটি গাওয়ার জন্য। বললো, ‘আপনার জন্যই গানটি করা।’ গানটির কথা ও সুর ভালো লাগলো। তার চেয়ে বড় বিষয় হলো, গানটিতে একটা আর্তি ও অপেক্ষার বিষয় রয়েছে; যেটা আমাকে খুব স্পর্শ করেছে, তাই গাইলাম।

গত বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি টরেন্টোতে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন নিবিড়। সঙ্গে থাকা তার তিন বন্ধু প্রাণ হারালেও অলৌকিকভাবে বেঁচে যান গায়কপুত্র। তারপর থেকে সেন্ট মাইকেল হাসপাতালে আছেন তিনি। আর তার সুস্থতার অপেক্ষায় আছেন পিতা কুমার বিশ্বজিৎ। জীবনের ছন্দ ভুলে দাঁড়িয়ে থাকেন হাসপাতালের বারান্দায়। নিবিড়ের জন্য ভেতরে তার এক নিবিড় অপেক্ষা।

লেখাটির পিডিএফ দেখতে চাইলে ক্লিক করুন: ফ্রেমবন্দি

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

eleven + sixteen =