শিল্পকলায় আলোচনা, গান ও কবিতায় ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উদযাপিত

শিল্পকলা একাডেমিতে আলোচনা, গান, কবিতা ও প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনায় ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উদযাপিত হয়েছে। আজ দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে জাতীয় নাট্যশালার সেমিনার কক্ষে সকাল ১১টায় শুরু হয় আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

আলোচনায় অংশ নেন সাবেক অধ্যক্ষ এবং ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মুহম্মদ শফিকুর রহমান, যিনি ১৯৭১ সালের সেই সময় মুজিবনগর সরকার গঠনের পর মেহেরপুরের বৈদ্যনাথ তলায় ঐতিহাসিক মুজিবনগরে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সচিব সালাহউদ্দিন আহাম্মদের সভাপতিত্বে ও একাডেমির কর্মকর্তা সৌম্য সালেক সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে আরো ছিলেন লেখক ও গবেষক মামুন সিদ্দিকী।

আলোচনায় প্রধান আলোচক হিসেবে মুহম্মদ শফিকুর রহমান ঐতিহাসিক মুজিবনগর সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের বর্ণনা তুলে ধরে বলেন, ‘আমি তখন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম। বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের পর ২৬  মার্চ থেকেই দেশব্যাপী যুদ্ধের আলোড়ন তৈরি হয়। এর মধ্যেই জানলাম যে, মুজিবনগর সরকার গঠিত হয়েছে ১০ তারিখ এবং শপথ গ্রহণ হবে ১৭ই এপ্রিল। তখন আমরা আমাদের ছাত্র ভাইদের সহকারে মুজিব নগরের আম্রকাননে সমবেত হই এবং সেখানে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান ও প্যারেড সবকিছু প্রত্যক্ষ করি। তখন অন্যরকম একটা উত্তেজনা, উৎসাহ ও উদ্দীপনা আমাদের মধ্যে কাজ করেছে যেনো আমরা প্রকৃতপক্ষেই যুদ্ধরত অবস্থায় আছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধারা নিজেদের জীবন দিয়ে, মা-বোনদের ত্যাগের বিনিময়ে এই দেশকে স্বাধীন করেছেন। এ স্বাধীনতাকে আমাদের ধরে রাখতে হবে, দেশপ্রেমে উদ্ধুদ্ধ হয়ে দেশের জন্য কাজ করতে হবে।’

আলোচক মামুন সিদ্দিকী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ডাকে তাঁর নেতৃত্বে যে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিলো, তাতে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু এই সময়ে এসেও অনেকে জাতীয় চার নেতা ও বঙ্গবন্ধুর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করেন- যা সঠিক নয়।’

সভাপতির বক্তব্যে একাডেমির সচিব বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে এ বাংলাদেশ পেয়েছি। আমাদের যাবতীয় অধিকার, সব রকমের নাগরিক সুযোগ-সুবিধা সমস্ত কিছু নিশ্চিত হয়েছে এ স্বাধীনতার মধ্যে দিয়ে। আমাদের স্বাধীনতা কিভাবে অর্জিত হয়েছে, তার নেপথ্য ইতিহাস আমাদের জানা জরুরি এবং এই ধারণাটিকেই শিল্পকলা একাডেমি লালন ও চর্চা করে।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এবং মুক্তিসংগ্রামের যে ধারাবাহিক পরম্পরা- যে ঘটনাপ্রবাহ আছে, তা আমাদের নতুন  প্রজন্মকে জানলে তারা দেশেপ্রেমে উদ্ধুদ্ধ হবে। তারা সঠিক বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ, সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারবে।’

অনুষ্ঠানে আলোচনা পর্বের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের কবিতা আবৃত্তি করেন মীর বরকত এবং মুক্তির গান পরিবেশন করে ঢাকা সাংস্কৃতিক দল।

বাসস

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

five × 4 =