সরকারি হিসেবে প্রবৃদ্ধি এগোচ্ছে দ্রুতগতিতে। অর্থবছর উনিশে যেটা ছিল ৮.১৫ শতাংশ যা তার আগের বছর ছিল ৭.৯ শতাংশ । বহির বাণিজ্য খাতের ঘুরে দাঁড়ানোর কারণে প্রবৃদ্ধির বৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে বলে বলা হচ্ছে। রফতানির বৃদ্ধি এবং আমদানির পতন দুটি মিলে প্রবৃদ্ধিতে বহির বাণিজ্য খাতের অবদান বেড়েছে ১.৭ শতাংশে যা কিনা আগের বছর ঋণাত্মক ৩.৬ শতাংশ ছিল। ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগের অবদান আগের বছরের তুলনায় কিছুটা কমলেও বেশ ভালোই ছিল বলে দেখানো হয়েছে। তবে ব্যক্তি খাতে ভোক্তা ব্যয়তে বড় ধরনের একটা ধস লক্ষ করা যাচ্ছে। ভোক্তার ব্যয় প্রবৃদ্ধি অর্থবছর আঠারোতে ১১ শতাংশ থেকে নেমে আসে ৩.৯ শতাংশে অর্থবছর উনিশে, যার কারণ উদঘাটন করা দুষ্কর। কৃষিতে উৎপাদন ভালো এবং রেমিটেন্স প্রবাহ বাড়া সত্ত্বেও কেন এমন ধস হল বিবিএসের পরিসংখ্যানে তার ব্যাখ্যা দেয়া মুশকিল তো বটেই। তাই চেষ্টা করে লাভ নেই
এদিকে শিল্প খাত প্রবৃদ্ধিতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে। শিল্প খাতের অবদান ৪.১ শতাংশ যার মধ্যে ম্যানুফ্যাকচারিং খাতের অবদান ৩.২ শতাংশ। রফতানি পণ্য উৎপাদন ছাড়াও অভ্যন্তরীণ বাজারমুখী শিল্পগুলোও (যেমন ইস্পাত, সিমেন্ট ইত্যাদি) বড় অবদান রেখেছে বলে ধরে নেয়া যায়। মোট জিডিপির ৩১.৩ শতাংশ এখন শিল্প খাত থেকে আসছে যা কিনা ভুটান ছাড়া দক্ষিণ এশিয়াতে সর্বোচ্চ। সেবা খাতে প্রবৃদ্ধি গতানুগতিক ৬.৫ শতাংশ ছিল যা মোট প্রবৃদ্ধিতে ৩.৪ শতাংশ অবদান রেখেছে। কৃষি খাতের প্রবৃদ্ধি কিছুটা কমলেও বেশ ভালোই ৩.৫ শতাংশে দেখানো হয়েছে। পর পর দু’বছর চালের বাম্পার ফলনের ফলে প্রবৃদ্ধি বাড়াটা কঠিন ছিল বেইজ ইফেক্টের কারণে।
এই ছিল সরকারি হিসাবের ভিত্তিতে প্রবৃদ্ধির কাহিনী। এটাকে অন্যান্য সরকারি হিসাবের সঙ্গে মিলানো বেশ কঠিন ব্যাপার। যেমন ব্যক্তি খাতের ঋণপ্রবাহ, মূলধন যন্ত্রপাতির আমদানি, রফতানি এবং রাজস্ব আদায় ইত্যাদি। এসব সূচকের ভিত্তিতে প্রবৃদ্ধির মাত্রা এত জোরালো মনে হয় না। তবে এ সংখ্যার বিতর্ক বাড়িয়ে কোনো লাভ নেই। সার্বিকভাবে অর্থনীতিতে একটা চাঙ্গা ভাব যে ছিল সেটা বোধহয় প্রশ্নের ঊর্ধ্বে।