নতুন পরিচয়ে তাপসী

যা তা রকমের খারাপ যাচ্ছিল বলিউড অভিনেত্রী তাপসী পান্নুর দিনকাল। তার এক বছরে হাফ ডজন ছবি মুখ থুবড়ে পড়ে বক্স অফিসে। সব মিলিয়ে তিনি যেন হয়ে উঠেছিলেন ফ্লপ মাস্টার অক্ষয় কুমারের ফিমেল ভার্সন। বলিউডে তাপসীর ক্যারিয়ারের তরী যখন ডুবুডুবু ঠিক তখন পাশে এসে দাঁড়ান শাহরুখ খান। কিং খানের সঙ্গে ‘ডানকি’ সিনেমার মাধ্যমে বেশ চাঙা হয় তার ক্যারিয়ার। ছবিটি সফলতা যেন তাপসীর পালে নতুন করে হাওয়া দেয়। নির্মাতাদেরও ভিড় বেড়ে যায় অভিনেত্রীর দরজায়। কিন্তু বিধিবাম! এক ছবিতে সাফল্য পেতেই পা যেন মাটিতে পড়ছিল না তাপসীর। হাঁকিয়ে বসছিলেন আকাশচুম্বী পারিশ্রমিক। সেটাই কাল হয়।

ডানকির সাফল্য দেখে যে নির্মাতারা তার দ্বারস্থ হয়েছিলেন তারাই মুখ ফিরিয়ে নেন। ডানা মেলে ওড়া তাপসীও ধপাস করে যান মাটিতে। তবে ক্যারিয়ারের এই দৈন্যদশায়ও থেমে নেই অভিনেত্রী। এরইমধ্যে আত্মপ্রকাশ করেছেন নতুন পরিচয়ে। ‘ধাক ধাক’ নামের একটি সিনেমার মাধ্যমে প্রযোজকের খাতায় নাম লিখিয়েছেন তাপসী। জানা গেছে সিনেমাটি যদি লাভের মুখ দেখে তবে তার অংশীদার হবেন এই অভিনেত্রী। এর বাইরে আরও একটি উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। নায়ক নির্ভর কোনো সিনেমায় অভিনয় করতে চান না। বরং ক্যামেরার সামনে নিজেই চেয়েছেন নায়কের সমান গুরুত্ব। তবে ক্যারিয়ারের এক যুগ পেরিয়ে এসে এখানেও ব্যর্থ তাপসী। নির্মাতারা না চাইছেন তাকে লভ্যাংশ দিতে, না ভরসা পাচ্ছেন কেন্দ্রীয় চরিত্রে নিতে। তাই যারা তাপসীকে নিজেদের সিনেমার জন্য ভেবেছিলেন তারা অন্য পথে হাঁটছেন। ফলে হাতে কাজের সংখ্যা প্রায় শূন্যের কোটায় এ নায়িকার। নতুন পরিচয় আত্মপ্রকাশ করে যেন নিজেই ফেঁসে গেছেন তাপসী। এদিকে নেটফ্লিক্সে মুক্তির অপেক্ষায় আছে তাপসী অভিনীত সিনেমা  ‘ফির আই হাসিন দিলরুবা’। ২০২১ সালে মুক্তি পেয়েছিল এই সিনেমাটার প্রথম কিস্তি ‘হাসিন দিলরুবা’। এছাড়াও সুপারস্টার অক্ষয় কুমারের সঙ্গে একটি সিনেমায় দেখা যাবে তাকে। ‘খেল খেল মে’ নামে সে সিনেমাটির মুক্তির তারিখ এখনও নির্ধারিত হয়নি।

এর বাইরেও একাধিক সিনেমা মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে তাপসীর। বি-টাউনে এরইমধ্যে দীর্ঘ সময় কাটিয়ে ফেলা এ অভিনেত্রী এক যুগ আগে তেলুগু একটি সিনেমার মাধ্যমে ভারতীয় চলচ্চিত্রাঙ্গনে যাত্রা শুরু করেন। কে জানত কাক্সিক্ষত সাফল্যের ছোঁয়া পেতে এক যুগ কেটে যাবে। এদিকে ‘ডানকি’ নিয়ে নায়িকা নিজেও বেশ উচ্ছ্বসিত ছিলেন। শাহরুকের সঙ্গে সিনেমায় সুযোগ পেয়ে ভীষণ আনন্দ প্রকাশ করেছিলেন। বলেছিলেন, শাহরুখ খানের সঙ্গে একই ছবিতে আমি। আমার কাছে এ সবকিছু অতিরিক্ত পাওয়া মনে হয়। পেছনের দিকে তাকালে মনে হয়, কোথা থেকে শুরু করেছিলাম আর আজ কোথায় পৌঁছে গিয়েছি। আমার মনে হয়, জীবনের কাছে সব সময় কৃতজ্ঞ থাকা প্রয়োজন।

ঘর ভাঙল শুভর

গত জুলাই মাসে দেশের অবস্থা যখন টালমাটাল সে সময় ঢালিউড অভিনেতা আরিফিন শুভ জানান তার দাম্পত্য জীবনও টাল মাতাল। স্ত্রী সমদ্দার অর্পিতার সঙ্গে একসাথে নেই তিনি। ভেঙে গেছে  দুজনের সংসার। ৩১ জুলাই রাতের বেলা সামাজিকমাধ্যমে এ ঘোষণা দেন তিনি। নিজের ফেসবুকে আরিফিন শুভ একটি লিফলেট টাঙিয়ে দেন। সেখানে লেখা ছিল, ‘আমি অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, আমি আর অর্পিতা আমরা হয়তো বন্ধু হিসেবেই ঠিক আছি, জীবনসঙ্গী হিসেবে নয়। আমরা গত ২০ জুলাই এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি, বন্ধুত্বটুকু নিয়ে দুইজনের সম্মতিতে বাকি জীবন নিজেদের মতো করে বাঁচব। অনেক চড়াই-উৎরাইয়ের পরও অর্পিতা আমার ও আমার মায়ের জন্য যা করেছেন, সেটার জন্য তার প্রতি চিরকৃতজ্ঞ এবং চিরঋণী।’

আরও বলেন, ‘মা চলে যাওয়ার পর জীবনটা একেবারেই শূন্য হয়ে গেছে। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, আপনাদের দোয়া ও ভালোবাসা আমার সঙ্গে আছে, যেটা নিয়ে বাকি জীবনটা সুন্দর ও সুস্থভাবে বাঁচতে পারব।’

জানা গেছে, শুভ অর্পিতা একজন আরেকজনের কাছে পর হয়েছেন অনেক আগে। এক ছাদের নিচে নেই  ৩৬৫ দিনের মতো। চার মাস ধরে সম্পর্কটা বিচ্ছেদের মামলা হয়ে ঝুলে ছিল কলকাতার একটি আদালতে। দশ দিন আগে ২০ জুলাই আদালতের রায়ে কেটে যায় সম্পর্কে সুতা।

অর্পিতা কলকাতার মেয়ে। শুভর সঙ্গে তার গল্পের শুরু এক দশক আগে। পেশায় ফ্যাশন ডিজাইনার তিনি। একটি প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজের সূত্রে থাকছিলেন ঢাকায়। শুভর সঙ্গে পরিচয়টা শুরু হয়েছিল বন্ধুত্বের মাধ্যমে। দুই পরিবারের সদস্যদের আলাপের মাধ্যমে ২০১৫ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় বিয়ের অনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন শুভ-অর্পিতা।

এর আগে ৬ ফেব্রুয়ারি কলকাতার টালিগঞ্জের যোধপুর পার্ক মাঠে অর্পিতার অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। টালিগঞ্জে অর্পিতার বাবার বাসায় রেজিস্ট্রি বিয়ে হয় তাদের। এ সময় দুই পরিবারের ঘনিষ্ঠজনেরা উপস্থিত ছিলেন। বিবাহত্তোর সংবর্ধনায় উপস্থিত ছিলেন ঢাকার চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী, চ্যানেল আইয়ের ফরিদুর রেজা সাগরসহ আরিফিন শুভর ঘনিষ্ঠ কয়েকজন। শুভ বরাবরই ব্যক্তি জীবনকে আলাদা রাখতে পছন্দ করেন। বিয়ের পরও এর ব্যতিক্রম দেখা যায়নি। স্ত্রীর ছবি পর্যন্ত কখনও নিজের ফেসবুকে পোস্ট করেননি। তবে সংসারে যে সুখ ছিল তা বোঝা যেত। পর্দার নায়ক শুভর সামাজিক অনুষ্ঠানগুলোতেও উপস্থিতি ছিল বেশ ঝা চকচকে। বিভিন্ন অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানেও নজর কাড়ত তার সাজপোশাক। এর পেছনের কারিগর ছিলেন ফ্যাশন ডিজাইনার স্ত্রী অর্পিতা। মাঝে মাঝে স্বামীর পোশাকের ডিজাইন নিজেই সারতেন। স্বামীর প্রশংসায়ও পঞ্চমুখ থাকতেন অর্পিতা। অনেকে ধরে নিয়েছিলেন ঢালিউডের আদর্শ দম্পতি হতে চলেছেন শুভ-অর্পিতা। কিন্তু শেষটা যে এভাবে হবে কেউ ভাবেননি।

মেহজাবীনের সুখবর

নাটক, টেলিফিল্মে অভিনয়ে সাবলীল অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী। ছোটপর্দার বড় তারকা হিসেবে বিবেচনা করা হয় তাকে। বর্তমানে ওটিটি মাধ্যমে দাপট দেখাচ্ছেন। তবে অনুরাগীদের প্রত্যাশা ছিল আরও বেশি। তাদের প্রিয় মেহুকে বড়পর্দায় দেখার সাধ ছিল বহুদিনের।

সে সাধ পূরণ হয়েছে তাদের। কেননা মেহু এরইমধ্যে একটি সিনেমা শেষ করেছেন। খবরটি নিজেই জানিয়েছিলেন মেহজাবীন। এজন্য বেছে নিয়েছিলেন ২১ ফেব্রুয়ারির দিনটি। কেননা এ আজ থেকে প্রায় দেড় দশক আগের এই দিনে টেলিভিশনের পথচলা শুরু হয়েছিল তার। নাম লিখিয়েছিলেন টিভি নাটকে। তাই বড়পর্দায় অভিষেকের খবরটিও ঘটা করে দিয়েছিলেন ফেব্রুয়ারির ২১ তারিখে।

সেদিন নিজের ফেসবুকে মেহজাবীন লিখেছিলেন, ‘২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ভাষা শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়ে ১৪ বছর আগে এই দিনেই টিভি নাটকে আমার অভিনয় যাত্রা শুরু হয়েছিল। আর আজ এই বিশেষ দিনেই আমার শুভাকাক্সক্ষী, বন্ধুদের একটি বিশেষ খবর জানাতে চাই, বড় পর্দায় পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে আমার অভিষেক হতে যাচ্ছে এ বছরই।’

সুখবর জানিয়ে মেহজাবীন লিখেছিলেন বিস্তারিত। তার ভাষ্য ছিল, ২০২৩ সালের শুরুতেই আমরা এই চলচিত্রের কাজ সম্পন্ন করি। গুণী নির্মাতা মাকসুদ হোসেন পরিচালিত ‘সাবা’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছি আমি।

ভক্তদের মেহু আরও লিখেছিলেন, ‘সাবা’ অর্থ যেমন সকাল, সকালের মৃদু বাতাস; আশা করছি আমার চলচ্চিত্র জীবনের সকালটিকেও সবাই অকৃত্রিম ভালোবাসায় আচ্ছন্ন করে রাখবেন। গল্প, চরিত্র, পরিচালকের নির্মাণ, গুণী অভিনয়শিল্পী ও নেপথ্যের মেধাবী কলাকুশলীদের সঙ্গে আমার অভিনয়ের সুযোগ-সব মিলিয়ে ‘সাবা’ আমার জীবনে সবসময়ই বিশেষ একটি নাম হয়ে থাকবে।

এদিকে মেহজাবীনকে বড়পর্দায় দেখা যাবে এমন খবর শুনে যখন ভক্তরা আনন্দিত তখন আরও একটি সুখবর। এটিও মেহজাবীন নিজেই দেন। জানান, ছবিটি দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির আগে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সম্মানিত হয়েছে। টরন্টো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ডিসকভারি প্রোগ্রামে নির্বাচিত হয়েছে। মাকসুদ হোসেনের পরিচালনায় ছবিটি প্রযোজনা করেছেন মেহজাবীন। ৪৯তম টরন্টো উৎসবের পর্দা উঠবে ৫ সেপ্টেম্বর। উৎসব চলবে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।

লেখাটির পিডিএফ দেখতে চাইলে ক্লিক করুন: ফ্রেমবন্দি

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

16 − 7 =