একম্যাচ হাতে রেখেই দাপটে সিরিজ জিতে নিয়েছে বাংলার মেয়েরা

সালেক সুফী

চলতি বাংলাদেশ আয়ারল্যান্ড তিন ম্যাচের ওডিআই সিরিজ পর পর দুই ম্যাচ সহজে জিতে ইতিমধ্যেই ২-০ নিজেদের করে নিয়েছে। এখন অপেক্ষা তৃতীয় ম্যাচ জিতে বাংলার নারীরা ধবল ধোলাই করতে পারে কিনা পশ্চিম ইউরোপের দেশটিকে।  প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ একতরফা খেলে ১৫৪ রানের বিশাল ব্যবধানে স্বাগতিকদের বিদ্ধস্ত করেছিল।

কাল অবশ্য অতিথি দল কিছুটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় ৫ উইকেটে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে আগে ব্যাটিং করে ২৫২/৪ স্কোর করে সর্বোচ্চ ওডিআই স্কোরের মাইল ফলক স্থাপন করেছিল। কাল পরে ব্যাটিং করে ১৯৭/৫ সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড গড়লো।

বাংলাদেশে নারীদের ক্রিকেট এগিয়ে চলেছে সেটি প্রমাণ হচ্ছে প্রতিটি অর্জনের মাঝে।

কাল কিন্তু পরিস্থিতির সঙ্গে কিছুটা মানিয়ে নেওয়া অতিথি দল ওদের স্বাভাবিক ছন্দে ফিরেছিল। ৫০ ওভারে ১৯৩/৬ করে প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলেছিল অতিথি দল।  ভালো বোলিং ফিল্ডিং করে রানের গতি নিয়ন্ত্রণ করে যথেষ্ট চাপ সৃষ্টি করেছিল।

কিন্তু বাংলাদেশের টপ অর্ডারে ফারজানা হক পিঙ্কির (৫০) সাবলীল ব্যাটিং এবং শারমিন সুপ্তার (৪০) সৃজনশীলতা দলকে আবারো ভালো ভিত গড়ে দেয়।  সেই শক্ত ভিতের উপর দাঁড়িয়ে আত্মবিশ্বাসী অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি জ্বলজ্বলে ৪০ রানের ইনিংস উপহার দিয়ে ৫ উইকেট সহজ জয়ে নেতৃত্ব দেয়। ৬.১ ওভার হাতে রেখেই ১৯৭ রান করা বাংলাদেশ পৌঁছে যায় জয়ের সীমানায়।

যদিও বাংলাদেশের বাহারি স্পিন আক্রমণ এবং তুখোড় গ্রাউন্ড ফিল্ডিং ওদের চেপে রেখেছে তবুও ১৯৩/৬ যথেষ্ট ভালো স্কোর ছিল। রাবেয়ার দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ে  দুটি রান আউট না হলে স্কোর ২২০-২৩০ হতে পারতো। এমি হান্টার ৮৮ বলে ৬৮ রান এবং অরলা পেন্ডারগাস্টের (৩৭) সঙ্গে তৃতীয় উইকেট জুটি (৯১ রান)  বাংলাদেশের জন্য হুমকি হয়ে ওঠার মুহূর্তে রাবেয়া খিপ্রতার সঙ্গে পেন্ডারগ্যাস্টকে রান আউট করে ছন্দ পতন ঘটায়।  একসময় লরা ডেনালির (৩৩) সক্রিয়তায় অতিথি দল বড় স্কোর গড়ার পথে হাঁটতে থাকলে সেখানেও রাবেয়ার দুরন্ত ফিল্ডিং ছন্দ পতন ঘটায়।

আমি কালকের জয়ের জন্য বেশি উৎফুল্ল।  কারণ গোটা দলের ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিংয়ে অনেক স্বতঃস্ফূর্ততা ছিল। সবাই নিজেদের রোলে বুঝে নিয়ে দায়িত্ব সচেতন ছিল। জয়ে গোটা দল নানা ভাবে অবদান রেখেছে। বাংলাদেশের ছেলেদের দলে যখন টপ অর্ডার ব্যাটিং সমস্যা তখন পর পর দুই ম্যাচে পিঙ্কি, সুপ্তা ভালো খেলেছে। ওদের গড়া শক্ত অবস্থানের উপর দাঁড়িয়ে অধিনায়ক জ্যোতি স্বাচ্ছন্দে খেলে জয় নিশ্চিত করেছে।

পর পর দুই ম্যাচ জয় বাংলাদেশকে আইসিসি ওডিআই চ্যাম্পিয়নশিপে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টস এনে দিয়েছে। একই ছন্দে থেকে বাংলাদেশকে তৃতীয় ম্যাচ জয় করতে হবে। যদিও এক্সপেরিমেন্ট করা ঝুঁকি হবে তবুও বাংলাদেশ তৃতীয় ম্যাচে দুইজন পেসার খেলাতে পারে। সমৃদ্ধ স্পিন আক্রমণ থাকলেও অতিথি দল কিন্তু মানিয়ে নিচ্ছে। ভালো লাগে দেখতে নারীদের দল তিন তিন জন লেগ স্পিনার নিয়ে খেলছে যেখানে পুরুষ দলে লেগ স্পিনারের আকাল।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

3 × 1 =