বাংলাদেশ কি পারবে টি ২০ সিরিজে চমক জাগাতে?

সালেক সুফী

প্রত্যাশার চেয়েও ভালো খেলে দ্বিতীয় টেস্ট জয় করে টেস্ট সিরিজে সমতা এনেছিল বাংলাদেশ। প্রথম এবং তৃতীয় ম্যাচে জয়ের সম্ভাবনা সৃষ্টি করেও তিন তিনটি ম্যাচে হেরে ওডিআই সিরিজে ধবল ধোলাই হয়েছে টিম টাইগার্স। ১৬, ১৮, ২০ ডিসেম্বর সেন্ট ভিনসেন্টে অনুষ্ঠিত হবে তিন ম্যাচের টি ২০ সিরিজ। ৩-৪ মাস বিদেশের মাটিতে এবং দেশে ক্রমাগত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে থাকা বাংলাদেশের সাফল্য কিছু আছে। কিন্তু ব্যর্থতার পাল্লা অনেক ভারী। এখন যদি ২০২৪ মৌসুমের শেষ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সিরিজ টি ২০ জয় করতে পারে বাংলাদেশ তাহলে হবে অনেক স্বস্তির অনেক গর্বের।

সিরিজ সামনে রেখে দুটি দেশ স্কোয়াড ঘোষণা করেছে।

 

ওয়েস্ট ইন্ডিজ স্কোয়াড:

রভম্যান পাওয়েল (অধিনায়ক), ব্র্যান্ডন কিং (সহ-অধিনায়ক), কেসি কার্টি, জনসন চার্লস, জাস্টিন গ্রেভস, টেরেন্স হিন্ডস, আকিল হোসেন (প্রথম দুই ম্যাচ), জেডেন সিলস (শেষ ম্যাচ), আলজারি জোসেফ, এভিন লুইস, ওবেদ ম্যাকয়, গুড়াকেশ মোতি, নিকোলাস পুরান, রোমারিও শেফার্ড, শামার স্প্রিঙ্গার।

 

বাংলাদেশ স্কোয়াড :

লিটন কুমার দাস (অধিনায়ক), সৌম্য সরকার, তানজিদ হাসান তামিম, পারভেজ হোসেন ইমন, আফিফ হোসেন, মেহেদি হাসান মিরাজ, জাকের আলী অনিক, শামীম হোসেন পাটোয়ারী, শেখ মেহেদী হাসান, রিশাদ হোসেন, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ, তানজিম হাসান সাকিব, হাসান মাহমুদ ও রিপন মন্ডল।

জানা আছে ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম আসরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ খেলোয়াড়রা বিশ্ব জোড়া ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটের ফেরিওয়ালা।  আইপিএল, পিএসএল, সিপিএল,  বিগ বাশ এমনকি বিপিএলেও ওদের জয় জয়কার। অন্যদিকে এই ফরম্যাটে বাংলাদেশিরা এখনো পায়ের তলায় মাটি খুঁজে পায়নি। তদুপরি বাংলাদেশ দলে নেই বাংলাদেশ ক্রিকেটের ব্র্যান্ড সাকিব আল হাসান। কেন নেই সবার জানা। এমনকি পারিবারিক কারণে নেই কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমান।

যতটুকু দেখা গেলো টেস্ট এবং ওডিআই সিরিজে বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানরা ওয়েস্ট ইন্ডিজ উইকেট এবং কন্ডিশনে মানিয়ে নিয়েছে। ব্যাটিং ভালো করে ভালো স্কোর দাড়া করাচ্ছে। বোলাররা কিন্তু ধারবাহিক ভালো বোলিং করে ম্যাচ জয় করতে পারছে না।

টি ২০ খেলা কিন্তু অনেকটা ক্যাসিনোতে জুয়া খেলার মত। ২০ ওভারে সীমিত খেলায় একটি মারকুটে ইনিংস, একটি পার্টনারশিপ, ছন্দে থাকা এখজন বোলার কিন্তু ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিতে পারে।  সেই সূত্রে বলবো বাংলাদেশ সিরিজ জিততে পারবে না সেটি বলবো না।

ওডিআই সিরিজে শোচনীয় ব্যাটিং ব্যর্থতার পরেও লিটন কুমার দাসকে অধিনায়ক করা হয়েছে। এই সিরিজে লিটনকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে হবে। তানজিদ তামিম, সৌম্য সরকার ছন্দ ধরে রাখতে পারলে টপ অর্ডার ব্যাটিং ভালো সূচনা দিতে পারে।  গতির খেলা টি ২০. চার ,ছয়ের খেলা হলেও স্ট্রাইক রোটেট করে ছন্দ ধরে রাখাও জরুরি। সুযোগ ছিল পারভেজ ইমনকে অন্তত শেষ ওডিআইতে সুযোগ দিয়ে পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেয়ানো। ৬-১৫ ওভারে বাংলাদেশ ব্যাটিং ভালো করতে হলে পরিস্থিতি মাফিক ব্যাটিং অর্ডার পরিবর্তন করতে হবে। ওডিআই সিরিজে নিজের সেরা ছন্দে ফেরা মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে টপ অর্ডারে স্থান দিতে হবে। লেট্ মিডল অর্ডারে জাকের অনিক, রিশাদ হোসেনের সঙ্গে শামীম পাটোয়ারী আছে।  বাংলাদেশকে ১৩০-১৪০ রানের বৃত্ত ভেঙে নিয়মিত ১৬০+ করতে হবে। আলজারি জোসেফ, ওবেদ মাকোয়, আকিল হোসেন, গুড়াকেশ মোতিদের সামাল দিতে স্মার্ট ক্রিকেট খেলতে হবে।

আমি বাংলাদেশ বোলিং নিয়ে আশাবাদী। তাসকিন, তানজিম শাকিব, হাসান মাহমুদ শুরুতে ব্রেক থ্রু এনে দিলে নাসুম, রিশাদরা হয়তো ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটসম্যানদের তাড়া করার মত টার্গেটে সীমিত রাখতে পারবে। আমি অন্তত একটি ম্যাচে রিপন মণ্ডলকে দেখতে আগ্রহী। মনে রাখতে হবে ব্রেন্ডন কিং, এলভিন লুইস, নিকোলাস পুরান, রোভমান পাওয়েল কিন্তু সবাই পাওয়ার হিটার। ওদের বিচক্ষণতার সঙ্গে মাথা খাটিয়ে বল করতে হবে। ওদের প্রতি আক্রমণের মুখে ভড়কে গেলে চলবে না।

চরম নিরাশার মাঝেও আসার আলো দেখি বাংলাদেশ দল নিয়ে। আশা করি হারুক জিতুক লড়াই করবে বাংলাদেশ।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

7 − 6 =