অবশেষে ভারত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি স্কোয়াড ঘোষণা করেছে

সালেক সুফী: ক্রিকেট বিশ্বকে বিস্ময়ে রেখে অবশেষে রোহিত শর্মাকে অধিনায়ক রেখেই পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড আয়োজিত পাকিস্তান এবং দুবাইতে অনুষ্ঠিতব্য  হাইব্রিড পদ্ধতির চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলার জন্য ভারত ১৫ সদস্যের স্কোয়াড ঘোষণা করেছে। একমাত্র মোহাম্মদ সিরাজ বাদ পড়া ছাড়া ঘোষিত দলে খুব একটা চমক আছে বলবো না. অনেকে ঘরোয়া ক্রিকেটে দারুন খেলতে থাকা করুন নায়ার অথবা সানজু শামসনের কথা বলতে পারেন। কিন্তু ভারত যেহেতু সব ম্যাচ দুবাইতে খেলতে সেই বিবেচনায় অভিজ্ঞ পেশাদার এবং মেধাবী উঠতি প্রতিভার সম্মিলনে স্কোয়াডকে সময়ের সেরা বলা যেতেই পারে।

ভারত ১৫ স্কোয়াড : রোহিত শর্মা ( অধিনায়ক) , শুভমান গিল ( সহ অধিনায়ক) ,বিরাট কোহলি , শ্রেষ আয়ার , ঋষভ প্যান্ট , হার্দিক পান্ডিয়া , কে এল রাহুল, যশবি জয়সোয়াল , রাভিন্দ্রা  জাদেজা ,ওয়াশিংটন সুন্দর, আক্সার প্যাটেল, কুলদীপ যাদভ , জাসপ্রিত বুমরা ,মোহাম্মদ সামি এবং আর্সদ্বীপ সিংহ।

দেশে নিউ জিল্যান্ডের কাছে টেস্ট সিরিজ হোয়াইট ওয়াশ এবং সফরে বর্ডার গাভাস্কার সিরিজ ৩-১ পরাজয়ে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল খেলার সুযোগ হারানোয় তোলপাড় হয়েছে ভারতীয় ক্রিকেটে। বেপরোয়া খেলোয়াড়দের উপর বিসিসিআই নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য বেশ কিছু  নিঃশেষধ আরোপ করেছে। রোহিত শর্মা এবং গৌতম গম্ভীরের কৌশল নিয়ে নানা সমালোচনা হয়েছে। বর্ডার গাভাস্কার সিরিজটা প্রকৃতপক্ষে ছিল বুমরা বনাম অস্ট্রেলিয়া  লড়াই.পার্থ টেস্ট ছাড়া অন্য কোন টেস্টেই অস্ট্রেলিয়ার কৌশলের কাছে দাঁড়াতেই পারেনি ভারত। মাঝপথে রবিচন্দ্র অশ্বিনের অবসর ঘোষণা এবং শেষ টেস্টে অধিনায়ক রোহিত শর্মার নিজে থেকে সরে দাঁড়ানো নিয়ে জল ঘোলা হয়েছে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে পাকিস্তানে যাওয়া নিয়ে ভারতের নানা তাল বাহানার পর হাই ব্রিড পদ্ধতিটিতে খেলার ব্যবস্থা হয়েছে। টুর্নামেন্টের অবশিষ্ট দলগুলোর পাকিস্তানে খেলার কোন আপত্তি না থাকলেও ভারত সব খেলা দুবাইতে খেলবে।

দুই গ্রূপে বিভক্ত আট দলের টুর্নামেন্টে ভারত গ্রূপে আছে পাকিস্তান ,নিউজিলান্ড এবং বাংলাদেশ। ওপর গ্রূপে খেলবে ইংল্যান্ড ,অস্ট্রেলিয়া ,দক্ষিণ আফ্রিকা এবং আফগানিস্তান।

বেশ কিছু দিন যাবৎ রোহিত এবং ভিরাটের ব্যাট ওদের মত করে কথা বলছে না. আর তাই নিজেদের দেশে প্রায় অজেয় ভারত নিউ জিল্যান্ডের কাছে ধবল ধোলাই হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ায় ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের নানা দুর্বলতা দেখা গাছে। এমতাবস্থায় চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ভারতের জন্য ঘুরে দাঁড়ানোর অগ্নি পরীক্ষা।  কিন্তু পাকিস্তান ,নিউ জিল্যান্ড কথাই নেই. বাংলাদেশকেও সহজ প্রতিপক্ষ ভাবার সুযোগ নাই.

ভারতের ইনিংস সূচনা করবে যথা রীতি রোহিত এবং গিল. তৃতীয় বিকল্প হিসাবে যশবি জয়সোয়ালকে দলে নেয়া হয়েছে যদিও অনেকে সানজু সামসনকে দেখতে চেয়েছিলো। ভিরাট , আয়ার ,পান্থ ,পান্ডিয়ার সম্মিলনে গঠিত মিডল অর্ডার বিশ্বসেরা।  আছে জাদেজা ,আক্সার , পান্ডিয়ার মোট তিন জন অল রাউন্ডার।  জাসপ্রিত বুমরা এই মুহূর্তে ১০০% ম্যাচ ফিট না. তবে ফিরেছে মোহাম্মদ সামি।  তৃতীয় পেসার হিসাবে মোহাম্মদ সিরাজের থেকে আর্সদীপ সিংকে সাদা বল ক্রিকেটে শ্রেয় মনে করেছে নির্বাচক মন্ডলী।

ভারত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচ খেলার পর খেলবে চির প্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে।  ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ফাইনালে পাকিস্তানের কাছে হেরেছিল ভারত। শেষ ম্যাচ নিউ জিল্যান্ডের বিরুদ্ধে।  কোন ম্যাচেই জয় নিশ্চিত না. টুর্নামেন্ট নিয়ে নানা টালবাহানা করা ভারতের বিষয়ে বিশ্ব ক্রিকেট সমাজ খুব একটা খুশি বলা যাবে না. আইসিসিতে ভারতের প্রাধান্য থাকলেও আইসিসি কিন্তু কোন বৈষয়িক টুর্নামেন্টে ভারত পাকিস্তান দৈরথ ছাড়া ভাবতেই পারে না.

আমার বিবেচনায় ভারত পাকিস্তান এই গ্রূপ থেকে নক আউট রাউন্ডে যাবে অন্য গ্রূপ থেকে ইংল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকার সম্ভাবনা উজ্জ্বল। টুর্নামেন্ট নিয়ে চুলচেরা প্রিভিউ করবো।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

twelve − 1 =