ঢাকাই চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেত্রী, পরিচালক ও রাজনীতিক সারাহ বেগম কবরীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ (১৭ এপ্রিল)। গত বছর এই দিনের প্রথম প্রহরে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। কবরী করোনায় আক্রান্ত ছিলেন।
‘মিষ্টি মেয়ে’-খ্যাত এই মহাতারকার জন্ম ১৯৫২ সালের ১৯ জুলাই। বাবা কৃষ্ণদাস পাল। মা লাবণ্য প্রভা পাল। তার বাবার দুই বিয়ে। ছোট স্ত্রীর দ্বিতীয় মেয়ে মিনা পাল (কবরী)। সৎ মায়ের দুই মেয়ে, দুই ছেলে। ছোট মায়ের পাঁচ ছেলে, চার মেয়ে। বিশাল পরিবার হলেও কবরী নিজেকে খুব অল্প বয়সেই আলাদা করেছেন, নিজ গুণে। ১৯৬৩ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে নৃত্যশিল্পী হিসেবে মঞ্চে উঠেছিলেন তিনি। কাজ করেন টেলিভিশনে। এরপর দ্রুত সময়ে যুক্ত হন চলচ্চিত্রে। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে বিশ্ব জনমত গঠনে তিনি বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন।
১৯৬৪ সালে সুভাষ দত্তের ‘সুতরাং’ সিনেমা দিয়ে অভিনয়ে অভিষেক হয় কবরীর। এরপর ‘নীল আকাশের নিচে’, ‘ময়নামতি’, ‘ঢেউয়ের পর ঢেউ’, ‘পরিচয়’, ‘দেবদাস’, ‘অধিকার’, ‘বেঈমান’, ‘অবাক পৃথিবী’, ‘দীপ নেভে নাই’-এর মতো অসংখ্য দর্শকপ্রিয় চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন এই কিংবদন্তি।
৫০ বছরের বেশি সময় চলচ্চিত্রে রাজ্জাক, ফারুক, সোহেল রানা, উজ্জ্বল, জাফর ইকবাল ও বুলবুল আহমেদের মতো অভিনেতাদের সঙ্গে কাজ করেছেন এই অভিনেত্রী। ঢাকার চলচ্চিত্র ইতিহাসের অন্যতম জনপ্রিয় জুটি ছিলেন রাজ্জাক-কবরী।
কবরী শেষ জীবনে একাধারে ছিলেন চলচ্চিত্র পরিচালক ও রাজনীতিক। ২০০৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। যুক্ত ছিলেন অসংখ্য নারী অধিকার ও সমাজসেবামূলক সংগঠনের সঙ্গে। ২০১৭ সালে অমর একুশে গ্রন্থমেলায় তার আত্মজীবনীমূলক বই ‘স্মৃতিটুকু থাক’ প্রকাশ পায়।
মৃত্যুর আগে কাজ করছিলেন তার পরিচালিত সরকারি অনুদান পাওয়া ছবি ‘এই তুমি সেই তুমি’র। সিনেমায় তিনি নিজেও অভিনয় করেছেন। কবরীর নির্মাণ শুরু হয় ২০০৬ সালে ‘আয়না’ সিনেমা দিয়ে।
বাংলা ট্রিবিউন