ইতিহাস গড়ে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশের মেয়েরা

২০২২ ষষ্ঠ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে নেপালকে ৩-১ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে প্রথমবারের মতো শিরোপা উল্লাসে মাতল বাংলাদেশ। অপেক্ষার অবসান ঘটল নেপালের দশরথ স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের বিপক্ষে। ২০১৬ সালে ভারতের কাছে সাফের ফাইনালে হেরে রানার্স আপ হয়ে সন্তুষ্ঠ থাকতে হয়েছিল বাংলাদেশকে। এরপর ছয় বছর পর ঘুচল সেই আক্ষেপ।

নেপালের দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে প্রথমার্ধে ২-০ গোলের লিড নেয় বাংলাদেশ। এরপর দ্বিতীয়ার্ধে গোল করে ব্যবধান কমায় নেপাল। আনিতার দারুণ এক শট জড়িয়ে যায় বাংলাদেশের জালে। এতেই আবারও ম্যাচে ফেরার ইঙ্গিত দেয় নেপাল, জমিয়ে তোলে শিরোপার লড়াই। তবে নেপালকে বেশি সময় ম্যাচে থাকতে দেয়নি বাংলাদেশ।

মাত্র এক গোলের লিড নিরাপদ মনে হচ্ছিল না সে সময়। কেননা বেশ আক্রমণাত্মক খেলতে থাকা নেপাল দারুণ সব গোলের সুযোগ তৈরি করছিল। যে কারণে আরও একটি গোল আদায়ের লক্ষ্যে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে খেলতে থাকে তারা। খুব বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি। ৭৭তম মিনিটেই গোল আদায় করে নেয় বাংলাদেশ। কৃষ্ণা রানী সরকারের দ্বিতীয় গোলে বাংলাদেশ এগিয়ে যায় ৩-১ গোলের ব্যবধানে। আর শেষ পর্যন্ত এই ব্যবধানই ইতিহাস গড়ে দেয় বাংলাদেশকে।

নেপালের বিপক্ষে ম্যাচের ১২তম মিনিটে ডান দিক থেকে আক্রমণে উঠে দারুণ এক ক্রস ডি বক্সে দেয় বাংলাদেশ। আর ডি বক্সের ভেতর বল পেয়ে ভলিতে জালে জড়িয়ে উল্লাসে ভাসান শামসুন্নাহার।

পিছিয়ে পড়ার পর নেপাল দুর্দান্ত খেলতে থাকে। বল দখলে রেখে দারুণ আক্রমণে বেশ কয়েকবার বাংলাদেশের রক্ষণের পরীক্ষা নিয়েছে। সবচেয়ে বড় পরীক্ষা ছিল ৩০ মিনিটের পর। দারুণ আক্রমণে বল প্রায় জালে জড়িয়ে ফেলেছিল নেপাল তবে বাংলাদেশের ডিফেন্ডার গোললাইন থেকে বল ফিরিয়ে দিলে লিড ধরে রাখে।

এরপর প্রথমার্ধের শেষ দিকে এসে নেপালের ভুলে বল পেয়ে যান শামসুন্নাহার। এরপর তিনি বল বাড়ান সাবিনা খাতুনকের কাছে আর তিনি সামনে থাকা কৃষ্ণাকে বল বাড়িয়ে দেন। ডি বক্সে বল পেয়ে দারুণ এক ফিনিশিংয়ে বাংলাদেশের লিড বেড়ে ২-০। ৪১তম মিনিটে পাল্টা আক্রমণ থেকে বল পেয়ে যান অধিনায়ক সাবিনা। তার পাস থেকে গোল পোস্টের সামনে ফাঁকায় দাঁড়ানো কৃষ্ণা রানী সরকার বল পেয়ে যান এবং খুব সহজেই নেপালের গোলরক্ষককে পরাস্ত করে দারুণ এক প্লেসিং শটে গোল করেন তিনি।

মাঠের অবস্থা ছিল খুবই খারাপ। বৃষ্টিতে কাদা জমে গেছে। কাঠমাণ্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচের প্রথম মিনিটেই আক্রমণে যায় বাংলাদেশ। বক্সের বাইরে থেকে মারিয়া মান্ডার দুর্দান্ত শট ফেরান নেপালের গোলরক্ষক। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে শুরু থেকেই জমে ওঠে ম্যাচ। ১০ম মিনিটে চোটের কারণে সিরাত জাহান স্বপ্নাকে উঠিয়ে শামসুন্নাহার জুনিয়রকে নামানো হয়। এর তিন মিনিট পরেই দুর্দান্ত গোল করে বাংলাদেশকে এগিয়ে দেন শামসুন্নাহার জুনিয়র। স্বপ্নের মতো শুরু।

নারী সাফের ষষ্ঠ আসরে দ্বিতীয়বার ফাইনাল খেলে বাংলাদেশ। এর আগে ২০১৬ সালে শিলিগুড়ি সাফের ফাইনালে ভারতের কাছে হারতে হয় ৩-১ ব্যবধানে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

twenty − five =