বেলজিয়ামের সঙ্গে ড্র করে নক আউট পর্বে ক্রোয়েশিয়া

শক্তিশালী বেলজিয়ামের সঙ্গে গোল শূন্য ড্র করে কাতার বিশ্বকাপের শেষ ষোল নিশ্চিত করেছে ক্রোয়েশিয়া।  বৃহস্পতিবার আহমেদ বিন আলি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এফ’ গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ইউরোপের দুই ফুটবল পরাশক্তি বেলজিয়াম ও ক্রোয়েশিয়া।

প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামার আগে ৪ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ তালিকার শীর্ষে ছিল ক্রোয়েশিয়া। সমান পয়েন্ট নিয়ে তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল মরক্কো। আর বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ের দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেলজিয়ামের অবস্থান ছিল তৃতীয়। মরক্কোর সাথে গোলশুন্য ড্র দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করা ক্রোয়েশিয়া পরের ম্যাচেই কানাডাকে ৪-১ গোলে হারিয়ে সংগ্রহ করে আরো তিন পয়েন্ট। ফলে শেষ ১৬’র পথ অনেকটাই সুগম হয় ক্রোয়েশিয়ার।

অপরদিকে গ্রুপের প্রথম ম্যাচে কানাডার বিপক্ষে ১-০ গোলে জয় পাওয়া বেলজিয়াম পরের ম্যাচে মরক্কোর কাছে ২-০ গোলে পরাজিত হয়। বেলজিয়ামের বিপক্ষে ড্র করে পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের রানার আপ  হিসেবে শেষ ১৬ নিশ্চিত করে ক্রোয়েশিয়া। এদিকে দোহার আল থুমামা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত গ্রুপের অপর ম্যাচে কানাডাকে ২-১ গোলে হারানোয় মরক্কোর সংগ্রহ দাঁড়ায় ৭ পয়েন্ট। ফলে গ্রুপ সেরা হিসেবে শেস সোল নিশ্চিত করে তারা।

ম্যাচের শুরুতেই আক্রমণে যায় ক্রোয়েশিয়া। তবে ডি বক্সের বাইরে থেকে ইভান পেরিসিচের নেয়া জোড়ালো শটের বলটি ক্রোয়েশিয়ার গোলপোস্টের উপর দিয়ে বাইরে চলে যায়। ৬ষ্ঠ মিনিটে মার্কো লিভায়া একটি বল পাঠিয়েছিলেন সতীর্থ বোনা সোসার উদ্দেশ্যে। কিন্তু তার শটে কিছুটা জোর থাকায় বল বেলজিয়ান গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়ার কাছে চলে যায়।

বেলজিয়াম প্রথম পরিকল্পিত আক্রমণটি চালায় ১৩ মিনিটে । ডেভিলস  ফরোয়ার্ড দ্রিয়েস মার্টিনস দারুন ক্রসে বল পাঠিয়ে দেন ক্রোয়েশিয় বক্সে । তবে সেখানে থাকা সতীর্থ ইয়ানিক কারাসকো বলটি নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেননি।

১৫ মিনিটে আবারো আক্রমনে যায় বেলজিয়াম। মাঝ মাঠ থেকে বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে কেভিন ডি ব্রুইনা এগিয়ে গিয়ে বক্সে থাকা মার্টিনসকে সেটি পাস দেন। এ সময় ফাকা পোস্ট পেয়েও মার্টিনস চলন্ত বলে তড়িঘড়ি করে শট নিলে সেটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ফলে দারুন এক গোল থেকে বঞ্চিত হয় বেলজিয়াম।

পরের মিনিটে মঞ্চস্থ হয় দারুন এক নাটক। ডি বক্সের বাইরে থেকে লুকা মড্রিচের ফ্রি কিকের বলে শট নিতে গিয়ে জটলার সৃষ্টি হয় বেলজিয়ামের পোস্টের সামনে। এই সময় ডিফেন্ডার টবি অল্ডারউয়েরেল্ড এর গায়ে লেগে পড়ে যান মার্সেলো ব্রোজোভিচ। সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টি বাঁশি বাজিয়ে দেন রেফারি। পরে আবার সিদ্ধান্ত বদল করে অফসাইড হয়েছে কিনা সেটি দেখার জন্য চলে যান ভি এআর প্রযুক্তি দেখতে। রিপ্লে দেখার পর অফ সাইডের নির্দেশ দেন তিনি।

ম্যাচের ৪০ মিনিটে ক্রোয়েশিয়া এবং ৪৩ মিনিটে বেলজিয়াম গোলের সুযোগ হাতছাড়া করার পর প্রথমার্ধোর অতিরিক্ত সময়ে গোলের সেরা সুযোগটি হাতছাড়া করেন ক্রোয়েশিয় ফরোয়ার্ড ইভান পেরিসিচ। বক্সে বল পেয়েও গোল করতে পারেননি তিনি। ফলে গোলহীন অবস্থাতেদই  বিরতিতে যায় দুই দল।

বিরতির পর বদলী হিসেবে মাঠে নামেন বেলজিয়ান তারা রোমেলু লুকাকু। এতে বেলজিয়ানদের আক্রমনের ধার কিছুটা বেড়ে যায়। ৫০ মিনিটেই গোলের সুযোগ পান লুকাকু। তার হেডের বল সরাসরি আশ্রয় নেয় গোল রক্ষক ডোমিনিক লিভাকোভিচের হাতে। ৫২ মিনিটে বেলজিয়ামের পোস্ট লক্ষ করে জোড়ালো এক শট নেন ক্রোয়েশিয়ার মিডফিল্ডার মাতেও কোভাচিচ। তবে বলটি প্রতিহিত করেন থিবো কোর্তোয়া।

দ্বিতীয়ার্ধে গোলের শেষ সুযোগটি এসেছিল ম্যাচের ৬০ মিনিটে। এ সময় ডি ব্রুইনার পাস থেকে ক্রোয়েশিয়ার পোস্টের সামনে বল পান ইয়ানিক কারাসকো। চলন্ত বলে তার শটের বলটি ক্রোয়েশিয়ার এক ডিফেন্ডার ও গোল রক্ষক লিভাকোভিচের গায়ে লেগে ফিরে আসে। ফিরতি বলে শট নেন লুকাকু। এবার ফাঁকা পোস্টেও বল পাঠাতে পারেননি তিনি। তার শটের বলটি সাইডবারে লেগে ফিরে আসে। ফলে হাতছাড়া হয় গোলের নিশ্চিত সুযোগ।

৬২ মিনিটে লুকাকুর আরো একটি জোরালো শট প্রতিহত করেন ক্রোয়েশিয় গোল রক্ষক। ৬৪ মিনিটে ডি ব্রুইনার ক্রসের বলে হেড দিয়েও লক্ষ্য ভেদ করতে পারেননি লুকাকু। ফলে ড্র নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে বেলজিয়ামকে। আর গ্রুপের রানার আপ হিসেবে শেষ ষোল নিশ্চিত করে ক্রোয়েশিয়া। কারণ একই সময় দোহার আল থুমামা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত গ্রুপের অপর ম্যাচে কানাডাকে ২-১ গোলে পরাজিত  করে  শীর্ষ দল হিসেবে নক আউট পর্ব নিশ্চিত করে মরক্কো।

বাসস

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

5 + 16 =