শেষ হলো রুশ চলচ্চিত্র উৎসব ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী

দুইদিনব্যাপী অনুষ্ঠিত রুশ চলচ্চিত্র চলচ্চিত্র উৎসব ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী শেষ হয়েছে মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর)। রাশিয়ান কালচারাল সেন্টার, রাশিয়ান সোসাইটি ও স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের যৌথ আয়োজনের শেষদিনে দেখানো হয় রুশ চলচ্চিত্র ‘হার্ট অব এ ডগ’ এবং ‘পাইরেটস অব দ্য এক্সএক্স সেঞ্চুরি’।

স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মনিরুজ্জামান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জিয়াউল হাসান ও রাশিয়ান কালচারাল সেন্টার প্রধান পাভেল আলেকজান্দ্রেভিচ সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে এই আয়োজনের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

সোমবার (২ অক্টোবর) থেকে উৎসবটি স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্বাধীনতার পর রুশ সেনারা বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মাইন অপসারণে এদেশের সরকারকে সাহায্য করেছিল। পাশাপাশি রুশ নাবিকেরা সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের নৌবাহিনী গঠনেও ভূমিকা রেখেছিল। সেসব বিষয়কে উপজীব্য করে আলোকচিত্রগুলো প্রদর্শিত হয়েছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার ভিকেন্টিয়েভিচ মানতিতস্কি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারপার্সন ফাতিনাজ ফিরোজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইউনুছ মিয়া, রাশিয়ান কালচারাল সেন্টার প্রধান পাভেল আলেকজান্দ্রেভিচ , রডিনা’র সভাপতি এলেনা ইউরিভনা বাস এবং স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগের চেয়ারম্যান চলচ্চিত্র পরিচালক ড. মতিন রহমান। প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান। অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন স্টামফোর্ডের উপচার্য অধ্যাপক ড. মনিরুজ্জামান।

এদিন রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধকে স্মরণ করে বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে রাশিয়ার সাংস্কৃতিক সম্পর্ক দীর্ঘ ও পুরোনো। সংস্কৃতি বিনিময়ের মাধ্যমে দুই দেশের মানুষ একে অন্যকে জানতে পারে। সে ধারা অব্যাহত রাখতেই এই চলচ্চিত্র উৎসবের আয়োজন। আশা করি আমাদের বন্ধুত্ব আরও দৃঢ় হবে।

প্রধান আলোচক বিশ্ব চলচ্চিত্রে রুশ নির্মাতাদের বিশেষভাবে স্মরণ করেন। সের্গেই আইজেনস্টাইন, লেভ কুলেশভ, পুদভকিনসহ অন্যান্য রুশ নির্মাতাদের নির্মাণ কিভাবে চলচ্চিত্র ভাষাকে বদলে দিয়েছে তা নিয়েও কথা বলেন।

রুশ কালচারাল সেন্টার প্রধান তার বক্তব্যে বলেন, রুশ শিল্প ও সংস্কৃতির সঙ্গে বাংলাদেশ নামক দেশটি ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। স্বাধীনতার সময় যেমন সোভিয়েত সরকার আমাদের নানাভাবে সাহায্য করেছে, তেমনি স্বাধীনতার পর এদেশের শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদানের মাধ্যমে সোভিয়েত ইউনিয়ন তথা বর্তমান রাশিয়া উচ্চশিক্ষার সুযোগ করে দিয়েছে।

চলচ্চিত্র নির্মাতা মতিন রহমান বলেন, বিশ্বে সোভিয়েত ইউনিয়নই প্রথম ফিল্ম স্কুল চালু হয়, অন্যদিকে বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে চলচ্চিত্রকে পাঠ্য হিসেবে প্রথম যুক্ত করে স্টামফোর্ড। চলচ্চিত্রের মাধ্যমে দুই দেশের সংস্কৃতি পাঠের চর্চাও পুরোনো।

বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারপার্সন তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ এবং রাশিয়া, এই দুই দেশের মধ্যে রয়েছে নানান পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। সে সম্পর্ক আরো গাঢ় হোক, সংস্কৃতি বিনিময়ের মাধ্যমে দুই দেশের মানুষ একে-অন্যকে আরো বেশি জানতে পারুক─সে প্রত্যাশা করি।

সভাপতি হিসেবে স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এই চলচ্চিত্র উৎসবটি আয়োজনে রাশিয়ান কালচারাল সেন্টার এবং রাশিয়ান সোসাইটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, রুশ চলচ্চিত্র বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। এই চলচ্চিত্র উৎসবের মাধ্যমে আমাদের দেশীয় চলচ্চিত্রও উপকৃত হবে বলে মনে করি।

অনুষ্ঠানের প্রথম দিন বিখ্যাত রুশ চলচ্চিত্র ‘বালাদ অব এ সোলজার’ প্রদর্শিত হয়।

সারাবাংলা

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

seventeen − nine =