মাঝের ওভারে খারাপ ব্যাটিং আমাদের ডুবিয়েছে: শান্ত

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার এইটে নিজেদের শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের কাছে বৃষ্টি আইনে ৮ রানে হারের পেছনে মাঝের ওভারে দলের বাজে ব্যাটিং পারফরমেন্সকে দায়ী করেছেন  বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।

সুপার এইটে নিজেদের শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে বড় ব্যবধানে জিতলেই সেমিফাইনালে খেলতে পারবে, এমন সমীকরণ ছিলো বাংলাদেশের সামনে। প্রথমে ব্যাট করতে নামা আফগানিস্তানকে ৫ উইকেটে ১১৫ রানের বেশি করতে দেয়নি টাইগার বোলাররা। সেমিতে খেলতে হলে ১২ দশমিক ১ ওভারের মধ্যেই আফগানদের হারাতে হতো বাংলাদেশকে।

শান্ত বলেন, সেমিফাইনালে খেলার চিন্তা মাথায় ছিল এবং প্রথম ওভার থেকে সেই লক্ষ্যে খেলার পরিকল্পনা ছিলো দলের। ম্যাচ নিয়ে দলের পরিকল্পনার বিষয়ে শান্ত জানান, প্রথম দিকে উইকেট হারিয়ে চাপে পড়লে পরবর্তীতে স্বাভাবিক পরিকল্পনায় খেলে ম্যাচ জয়ের লক্ষ্য ছিলো।

কিন্তু কোন পরিকল্পনাই কাজে লাগাতে না পারায় হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। ইনিংসের মাঝামাঝি  বাজে ব্যাটিংয়ের কারণে ম্যাচ হারতে হয়েছে বলে মনে করেন শান্ত।

ম্যাচ শেষে শান্ত বলেন, ‘পরিকল্পনা ছিল প্রথম ৬ ওভারে জোরালোভাবে চেষ্টা করা। যদি আমরা শুরুতেই উইকেট হারিয়ে ফেলি, তাহলে স্বাভাবিকভাবে ব্যাট করে ম্যাচ জয়ের পরিকল্পনা ছিল আমাদের। কিন্তু তা হয়নি এবং মিডল অর্ডার ভালো করতে পারেনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘ব্যাটিংয়ে উন্নতি করতে হবে। আমাদের টপ-অর্ডার ভালো পারফর্ম করতে পারেনি। এমনটা হতে পারে, বল ভিজে যাবার কারনে। যেমনটা আমি বলেছি, আমরা ব্যাট হাতে ভালো খেলতে পারিনি এবং অনেক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

চারদিকে থেকে জোরালো এমন প্রশ্নও উটেছে-জয় গুরুত্বপূর্ণ না হবার পরও বাংলাদেশ কেন আক্রমনাত্মক ক্রিকেট খেলেনি?

শান্ত বলেন, ‘আমি মনে করি, আমরা সত্যিই ভালো বোলিং করেছি। আমরা অনেক কিছু ভালো করেছি। কিন্তু ব্যাটিং ইউনিট হিসেবে আমরা কিছু খারাপ সিদ্ধান্ত নিয়েছি, বিশেষ করে মিডল অর্ডারে। এটার মূল্যই দিতে হয়েছে আজ।’

তিনি আরও বলেন, ‘পুরো টুর্নামেন্টে আমরা সত্যিই ভাল বোলিং করেছি। পেসার এবং স্পিনার ভাালো করেছে। বিশেষ করে রিশাদ দারুন করেছে। পেসাররাও ভাল করেছে। এছাড়াও  ফিল্ডিং গ্রুপ হিসেবে আমরা ভাল করেছি।

বাংলাদেশের বিপক্ষে শ্বাসরুদ্ধকর জয়ে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলার ইতিহাস সৃষ্টি করেছে আফগানিস্তান। সুপার এইটে বাংলাদেশ ছাড়াও অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছিলো আফগানরা।

প্রত্যাশা অনুযায়ী জয় পাওয়ায় খুশি আফগানিস্তান অধিনায়ক রশিদ খান। তিনি বলেন, ‘দল হিসেবে সেমিফাইনালের মঞ্চে থাকতে পারাটা আমাদের জন্য স্বপ্নের মতো। আমরা যেভাবে টুর্নামেন্ট শুরু করেছিলাম সেটা এখনো ধরে রেখেছে। নিউজিল্যান্ডকে হারানোর সময় আমাদের বিশ্বাসের জন্ম হয়েছিলো। এটা অবিশ্বাস্য। অনুভূতি প্রকাশ করার মতো কোন শব্দ আমার কাছে নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের এই বড় অর্জনের জন্য দেশের সবাই  খুব খুশি। একমাত্র ব্রায়ান লারাই তার হিসেবে আমাদেরকে সেমিফাইনালের লাইন আপে একমাত্র রেখেছিলেন।  এবং আমরা তা সঠিক প্রমাণ করেছি। টুর্নামেন্ট শুরুর আাগে এক অনুষ্ঠানে আমি তাকে বলেছিলাম, আমরা আপনাকে হতাশ করবো না। আমরা করে দেখাবো এবং প্রমাণ করবো আপনি সঠিক। এই দল নিয়ে আমি গর্বিত। আমরা ভেবেছিলাম এই উইকেটে ১৩০-১৩৫ ভালো পুঁজি। আমরা ১৫-২০ রান কম করেছিলাম। তবে আমরা জানমতাম, সেমিফাইনালে ওঠার জন্য ১২ ওভারের মধ্যে রান তাড়া করতে আক্রমনাত্মক হবে প্রতিপক্ষ। আর সেখানেই আমরা সুবিধা নিতে পারি। আমরা যদি স্টাম্পে বল করতে পারি, তাহলে প্রতিপক্ষকে আউট করার জন্য আমাদের সামনে ভালো সুযোগ তৈরি হবে।’

বাসস

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

eighteen − one =