প্লাস্টিক আলোচনাকে সামনে রেখে ‘ইতিবাচক ইঙ্গিতের’ আশা নরওয়ের

নিউইয়র্কে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে জমায়েত হওয়ার এক সপ্তাহ সময়েই নগরীর বাতাসে লাখখানেক বোতল পানির সমপরিমাণ প্লাস্টিকের রেণু-কণা উড়ে বেড়াবে, যা মানব দেহে জানা-অজানা নানা রোগের ঝুঁকি সৃষ্টি করছে।  খবর বাসস

বুধবার নরওয়ের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন মন্ত্রী অ্যানি বিথ টিভিনেরেইম বলেন, আমরা সামুদ্রিক পরিবেশে ছড়িয়ে পড়া প্লাস্টিক সম্পর্কে অনেক কথাই বলি, অথচ এটি আমাদের চারপাশেই রয়েছে।

নিউইয়র্ক থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, অ্যান চলতি বছরের শেষের দিকে দক্ষিণ কোরিয়ায় বিশ্বব্যাপী প্লাস্টিক চুক্তির প্রধান সমঝোতাকারীর দায়িত্ব পালন করছেন।

এই চুক্তির লক্ষ্য হল প্লাস্টির বর্জ্য ঠেকাতে একটি আন্তর্জাতিক সমঝোতায় পৌঁছানো। এই বর্জ্য পরিবেশকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। এটি সমুদ্র ও নদী থেকে পাহাড়, সমুদ্রের বরফ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ছে। প্রাণীরা এসব বর্জ্য খাওয়ায় খাদ্যচক্রেও প্লাস্টিক দূষণ ছড়িয়ে পড়ছে।

কিছু দেশ এ চুক্তির মাধ্যমে প্লাস্টিক উৎপাদনের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ বেঁধে দিতে চায়।  কিন্তু অন্য দেশগুলো, বিশেষত তেল ও গ্যাস উৎপাদনকারী দেশগুলো, প্ল্যাস্টিক রিসাইক্লিংয়ের পক্ষে। এ দেশগুলো প্লাস্টিক তৈরির কাঁচামাল সরবরাহ করে।

প্লাস্টিক ইস্যুতে কয়েক দফা আলোচনা সত্ত্বেও ঐকমত্য সৃষ্টি না হওয়ায় আলোচনার অগ্রগতি থমকে আছে। বুসানে ২৫ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া বৈঠকের আগে একটি ঐক্যমতে পৌঁছানোর সময় দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে।

অ্যানি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ফাঁকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, কিন্তু একটি সমঝোতায় পৌঁছানোর ব্যাপারে কয়েক সপ্তাহ আগের চেয়ে আমি এখন অনেক বেশি আশাবাদী। কারণ আমরা বুঝতে পারছি যে বিভিন্ন দেশ থেকে এ ব্যাপারে ইতিবাচক সংকেত রয়েছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ‘নতুন সংকেত’

অ্যানি বিশ্বের বৃহত্তম প্লাস্টিক উৎপাদকদের মধ্যে অন্যতম যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে প্লাস্টিক উৎপাদন হ্রাস করার ‘নতুন সংকেত’ পেয়েছেন।

তিনি বুধবার হাই অ্যাম্বিশন কোয়ালিশন টু এন্ড প্লাস্টিক পলিউশন (এইচএসি) প্রকাশিত একটি নতুন বিবৃতির দিকে ইঙ্গিত করেছেন। এইচএসি ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ৬০টিরও বেশি দেশের একটি গ্রুপ, বিশ্বে ব্যবহৃত প্ল্যাস্টিকের অধিকাংশই এই দেশগুলো উৎপাদন করে।

নরওয়ে ও রুয়ান্ডার সহ-সভাপতিত্বে জোটটি প্লাস্টিক উৎপাদন ও ব্যবহার হ্রাস করা এবং বিষাক্ত পলিমারগুলো পর্যায়ক্রমে বন্ধ করতে আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণের প্রতি তার প্রতিশ্রুতি নিশ্চিত করেছে।

তাদের এ অবস্থানকে ডব্লিউডব্লিউএফ স্বাগত জানিয়েছে।

অ্যানি বলেন, অল্প কয়েকটি দেশের স্বার্থের কারণে চুক্তিটি না হওয়াকে আমরা মেনে নিতে পারি না।’

মন্ত্রী পর্যায়ের এক বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।

ওই বৈঠকে সমস্ত দেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। উল্লেখযোগ্যভাবে, চীন ও ভারত এতে অনুপস্থিত ছিল। যেখানে অংশগ্রহণকারী ৪০টি দেশের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছিল।

প্লাস্টিকের অনেক প্রয়োজনীয় ব্যবহারের কথা উল্লেখ করে অ্যানি বলেন, ‘আমরা প্লাস্টিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে চাই না। কিন্তু আমরা প্রকৃতিতে মিশে প্লাস্টিকের মিশে যাওয়া বন্ধ করতে চাই।’

প্লাস্টিক দূষণ বন্ধে কীভাবে অর্থায়ন করা যায় তার জন্য বেশ কয়েকটি প্রস্তাব বিবেচনাধীন রয়েছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

three × one =